পুলিশ প্রশিক্ষণেই নির্ভর করছে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ
১০ নভেম্বর ২০১০আফগান পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যেও কিছু সংখ্যক নিরক্ষর৷ ইউনিফর্মের অভাব রয়েছে এবং রয়েছে অস্ত্রশস্ত্রের অভাব৷ দেহ-এ-মাসুস পুলিশ ফাঁড়িটি যেন কয়েকটি কুঁড়ে ঘরে মেশিনগানের ঘাঁটির চাইতে বেশি কিছু নয়৷ কিন্তু আফগানিস্তানের যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে সরকারকে আনার জন্য ওয়াশিংটন যতোই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢালুক না কেন এবং বলুক না কেন আর্ঘানদাব, ঝারি এবং পাঞ্জওয়ায়ির মতো জায়গাগুলোতে আর তালেবান জঙ্গিরা নেই, আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে কর্নেল আব্দুল কাদির পোপালের মতো মানুষদের উপর, যাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে৷ আর এই প্রশিক্ষণের খরচ বহন করছে যুক্তরাষ্ট্র৷ আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী ও পুলিশদের প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ২০১০ সালের অর্থবছরে ৯ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে৷
২০১১ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬শ সৈনিক ও ১ লাখ ৩৪ হাজার আফগান পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেবে ন্যাটো ট্রেনিং মিশন বা এনটিএমএ৷ এই প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে এবছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই এনটিএমএ আফগানিস্তানে ১ লাখ ৩৬ হাজার আফগান সৈন্য এবং ১ লাখ ১৯ হাজার ৬শ' পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে৷
দশ বছর হতে চললো, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর দেড় লাখ সেনা আফগানিস্তানে তালেবানদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে আসছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১১ সালের জুলাই মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে অ্যামেরিকান সেনা প্রত্যাহারের কাজ শুরু করার কথা রয়েছে৷ যে কারণে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তোলা সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশিক্ষণের দায়িত্বে আছেন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল উইলিয়াম কল্ডওয়েল৷ সম্প্রতি তিনি ওয়াশিংটন এবং আফগানিস্তান কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই বলে যে, ‘‘যেখানে কোনো প্রশিক্ষণ নেই, সেখানে কোনো পরিবর্তন নেই৷'' ২০০৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে কল্ডওয়েল আফগান সেনাদের যোদ্ধা হিসেবে গড়ে তোলার কাজ করে যাচ্ছেন৷ সেইসঙ্গে পুলিশ বাহিনীকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন যাতে সাধারণ মানুষদের পুলিশদের সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে যে, পুলিশরা দুর্নীতি করে সেই ধারণা দূর হয় এবং তাদের উপর আস্থা ফিরে আসে৷ উল্লেখ্য, ব্রিটিশ মেজর জেনারেল নিক কার্টার এই মাসেই বলেছেন, ‘‘আফগান পুলিশরা নিজেরাই সমস্যা এবং তারাই সমস্যার সমাধান৷''
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন