1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুলিশকর্মীদের পণবন্দি নিয়ে রাজনৈতিক কাজিয়া

২ সেপ্টেম্বর ২০১০

ভারতের বিহার রাজ্যে লখিসরাই'এ গত রবিবার মাওবাদীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর ৪ জন পুলিশ কর্মীকে পণবন্দি করে মাওবাদীরা৷

https://p.dw.com/p/P2ik
মাওবাদীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছেছবি: AP

বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে জেলবন্দি ৮ জন মাওবাদীকে মুক্তি না দিলে ঐ পুলিশকর্মীদের হত্যা করা হবে হুমকি দেয় তাঁরা৷ ইতিমধ্যে মাওবাদীরা একজনকে হত্যা করায় সঙ্কট গভীর হয়েছে৷

শেষ খবরে জানা গেছে, পণবন্দি ৪ জন পুলিশ কর্মীর মধ্যে একজনকে মাওবাদীরা হত্যা করেছে সময় সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় এবং সরকার সাড়া দিতে দেরি করায়৷ ফলে পণবন্দী কাণ্ডের সঙ্কট হয়েছে আরো গভীর৷ মনে করা হচ্ছে, সরকারকে চাপ দিতেই এটা করা হয়েছে৷ যদিও পণবন্দীদের মুক্ত করতে বিহার সরকার সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সে চেষ্টা সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব জি.কে পিল্লাই৷ বন্দিবিনিময়ের সময়সীমা শেষ হয় আজ বিকেলে৷ মাওবাদীদের শর্ত, জেলবন্দি ৮ জন মাওবাদির মুক্তি দিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে পুলিশী অভিযান বন্ধ করতে হবে৷ নাহলে মাওবাদীরা বারংবার হামলা চালাবে৷ এজন্য দায়ী থাকবে রাজ্য সরকার৷ পণবন্দি পুলিশ কর্মীদের পরিবারের লোকজন মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে ধরনা দেয় আজ৷ এরপর পুলিশ কর্মীদের উদ্ধার অভিযানের তদারকি শুরু করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার স্বয়ং৷

এদিকে লখিসরাই কাণ্ড নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতিতে কাজিয়া৷ স্রেফ রাজনৈতিক কারণে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ অভিযানে সামিল হননি নীতিশ কুমার৷ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আর মাত্র মাস তিনেক বাকি৷ এসময়ে লখিসরাই কাণ্ড যে বিরোধীদের হাতে প্রধান অস্ত্র হবে, সেটা ভেবে ক্ষমতাসীন সংযুক্ত জনতা দল যথেষ্ট চাপের মুখে৷ পণবন্দী পুলিশ কর্মীদের জীবিত উদ্ধার করতে না পারলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে নির্বাচনে৷ লখিসরাই ঘটনা পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকেও স্পষ্ট করে তুলেছে৷ রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং আর জে ডি দলের প্রধান লালু যাদব বলেন, এটা নীতিশ কুমারের মাওবাদী নীতির চরম ব্যর্থতা৷ আর এর জন্যই বিহারের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা এখন মাওবাদী কবলিত৷ আসলে রাজ্য সরকারের মাওবাদী সহিংসতা দমনের রাজনৈতিক ইচ্ছা নেই৷ অন্যদিকে,সরকারের মুখপাত্র বলেছেন, বিকাশের মাধ্যমে মাওবাদীদের মোকাবিলা করাই সরকারের নীতি, যৌথ অভিযান চালিয়ে নয়৷ উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারের মাও-বিরোধী নীতির সমালোচনা করে নীতিশ কুমার বলেছিলেন, মাওবাদী সমস্যা আর্থ-সামাজিক, তাই বিকাশই একমাত্র প্রতিকার৷ সুশীল সমাজ মনে করে, আর্থ-সামাজিক বিকাশ রাজ্যে হয়নি৷ গরিবরা এখনও নিপীড়িত, অবহেলিত৷ মাওবাদী ইস্যু নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের চিত্রটাও একই রকম৷ সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেস বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে একে অপরের দিকে তোপ দাগিয়ে চলেছে৷ মারা পড়ছে সাধারণ মানুষ৷

প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন