পুজোমণ্ডপে শিল্পের ছোঁয়া
বাঙালির দুর্গাপুজো মানে শুধুই ধর্মীয় উদযাপন নয়৷ এই সার্বজনীন উৎসবের সুবাদে উদ্ভাসিত হয় বাংলার শিল্পচেতনা৷ ভারতীয় শিল্পশৈলী, অঙ্গসজ্জা ও ঐতিহ্যবাহী কারুকাজের সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটে আধুনিক শিল্পভাবনার৷ গড়ে ওঠে এক নব আঙ্গিক৷
বাংলার ঐতিহ্য
বাংলার চিত্রিত পট এবং চালচিত্রের আদল মিলে তৈরি হয়েছে মাঙ্গলিক চিহ্ন, দক্ষিণ কলকাতার এক পুজোমণ্ডপে৷
আধুনিক ছোঁয়া
প্রবেশপথের দু’পাশে কাশফুলের ঝাড়৷ কাছে গেলে বোঝা যায়, আসলে বোতল পরিষ্কার করার ব্রাশের ঝাঁক, যা কাশফুলের বিভ্রম তৈরি করেছে৷
প্রকৃতি ভাবনা
এই পুজোমণ্ডপের মূল ভাবনা প্রকৃতি৷ কাগজের ফুলগুলি চিনে নেওয়া যায়, কিন্তু তাকে ঘিরে কি অসংখ্য ছেঁড়া কাগজের টুকরো?
কাগজের প্রজাপতি
ছেঁড়া কাগজের টুকরো নয়, সযত্নে কাগজ কেটে তৈরি প্রজাপতি৷ ঝাঁকে ঝাঁকে বসে আছে গাছের ডালে৷ বোঝা যায় কাছে গেলে৷
টিনের সেপাই
এই পুজোমণ্ডপের ভাবনা রূপকথা, আর রবীন্দ্রনাথের ‘বীরপুরুষ’ কবিতা৷ তাই পাহারায় এই টিনের সেপাইরা, হাতে তাদের টিনের ঢাল-তলোয়ার৷
বাংলার সূচিশিল্প
মণ্ডপের গায়ের অলঙ্করণের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে গোলাকার ছবি ‘ময়ূরপঙ্খী নাও, পক্ষীরাজ’ ঠিক যেন সেলাইয়ের ফোঁড়ে ফুটিয়ে তোলা রঙীন সুতোর সূচিশিল্প৷
রূপকথার দেশ
ধর্মস্থান নয়, বরং যেন কোনো কল্পনার রাজ্য৷ নীল আকাশে ভাসানো সাদা মেঘের ভেলা দিয়ে তৈরি মণ্ডপের ছাদ৷ দেওয়াল তার রূপকথার অরণ্য৷
আদিবাসী শিল্প
এই পুজোমণ্ডপের কেন্দ্রীয় বিষয় আদিবাসীদের শিকার উৎসব৷ কিন্তু মণ্ডপ সজ্জায় উত্তর-পূর্ব ভারতের নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশের স্থাপত্যশৈলীর ছাপ স্পষ্ট৷
পৌরাণিক ছোঁয়া
আদিবাসী অঙ্গসজ্জার সঙ্গে সুচারু মেলবন্ধন পৌরাণিক ভাবনারও৷ ফলে মূল মণ্ডপের অলঙ্করণে যে মহিষ আদল, তা পৌরাণিক বৃষের অনুকরণে৷
ঘরের সাজ
এমন শিল্পভাবনার পরিচয় পেতে পেতে যদি কারও ইচ্ছে হয় নিজের ঘরকেও একটু সাজিয়ে তুলতে এই উৎসবের মরশুমে, তার উপকরণও রয়েছে রাস্তার ধারের পশরায়৷