পাকিস্তানে শোক পালন, বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু
২৯ জুলাই ২০১০বুধবার সকালে ইসলামাবাদের কাছে পাহাড়ি এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হলে এর ১৫২ জন আরোহীর সবাই মারা যান৷
বিমান দুর্ঘটনার পরপরই বুধবার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি৷ সেই বৈঠকেই দেশব্যাপী বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালনের সিদ্ধান্ত হয়৷ সকাল থেকে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত আছে, মসজিদে মসজিদে হচ্ছে বিশেষ প্রার্থনা৷ পাকিস্তানে এই বিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও৷ বিমানটিতে যুক্তরাষ্ট্রের দুই নাগরিকও ছিলেন৷
এদিকে সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে মুষল ধারায়৷ আর এর মধ্যেই চলছে উদ্ধার কার্যক্রম৷ অধিকাংশ যাত্রীর লাশ ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে৷ তবে ১৩ জনের লাশ এখনো মেলেনি৷ তাদেরসহ বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারে কার্যক্রম চলছে৷ এর তদারকিতে রয়েছে ইসলামাবাদ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ৷ সংস্থার মুখপাত্র রমজান সাজ্জাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বৃষ্টির কারণে ভোর থেকে উদ্ধার কাজ ভালোভাবে শুরু করা যায়নি৷ তবে বৃষ্টি একটু কমে আসার পর কাজে গতি এসেছে৷'' কাজটি যে কঠিন, তাও জানালেন রমজান৷ তিনি বলেন, ‘‘বিমানের ধ্বংসাবশেষ এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে৷ আর পাহাড়ি ওই এলাকায় সড়ক পথে যাওয়ার উপায়ও নেই৷ ফলে কাজটি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷''
খারাপ আবহাওয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ আবার পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চালকের ভুলই এই দুর্ঘটনার কারণ৷ আর কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে চালককে সময়মতো সতর্কও করা হয়নি৷ তবে এই বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলেনি কর্তৃপক্ষ৷ বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের প্রধান জুনাইদ সালেম বলেন, ‘‘আমরা এখনো বিমানের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করতে পারিনি৷ তবে তদন্তের কাজ আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে শুরু হচ্ছে৷'' প্রধানমন্ত্রী গিলানির নির্দেশে দুর্ঘটনা তদন্তে এরই মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ কমিটির এক সদস্য স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোকে বলেন, তারা সম্ভাব্য সব কারণই খতিয়ে দেখবেন৷ বিমানে যান্ত্রিক কোনো ত্রুটি ছিলো কিনা, তার অনুসন্ধানও চালাবেন তাঁরা৷
বিমানযাত্রীদের মধ্যে ১৩৯ জনের লাশ উদ্ধারের পর পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সে নেওয়া হয়েছে৷ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর মধ্যে ৫৮ জনের লাশ সনাক্ত করা হয়েছে৷ ৪০ জনের লাশ তাদের স্বজনের কাছে তুলেও দেওয়া হয়েছে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক বলছেন, অনেকের লাশ পুড়ে এত বিকৃত হয়েছে যে চেনা দায়৷ তাদের সনাক্ত করতে ডিএনএ টেস্ট করতে হবে৷ আর তা আজ থেকেই শুরু হচ্ছে৷
বিমানটি করাচি থেকে ইসলামাবাদ যাচ্ছিলো৷ অবতরণের ৫ মিনিট আগে এটি ইসলামাবাদের ২০ কিলোমিটার উত্তরে মারগালা পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়৷ বেসরকারি সংস্থা এয়ার ব্লু পরিচালিত ওই এয়ারবাসটিতে মোট আরোহী ছিলেন ১৫২ জন৷ এদের মধ্যে ১৪৬ জন যাত্রী৷ অন্যরা ক্রু৷
প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন