1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাকিস্তানের রাজনীতিতে প্যানডোরা পেপার্সের প্রভাব

৬ অক্টোবর ২০২১

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজনের নাম এসেছে প্যানডোরা পেপার্সে৷ তবে, এই নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷

https://p.dw.com/p/41L1U
Pakistan Islamabad | Imran Khan, Premierminister
ছবি: Saiyna Bashir/REUTERS

ইন্টারন্যাশনাল কনসর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)-এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী সামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এবং গণমাধ্যমকর্মী অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে মিলিয়ন মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার করেছেন৷

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জোটটির তদন্তে সাতশ'র বেশি প্রভাবশালী পাকিস্তানির নাম বেরিয়ে এসেছে৷ রবিবার এসব তথ্য প্রকাশিত হলে পাকিস্তানে আলোড়ন সৃষ্টি হয়৷

তবে, অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের তদন্তে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নাম উঠে আসেনি৷ দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসেন তিনি৷ তার নির্বাচনের প্রচারণার পুরোটাই ছিল দুর্নীতবিরোধী অবস্থানকেন্দ্রিক৷

আইসিআইজে'র অনুসন্ধানে পানি ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোনিস এলাহি এবং অর্থমন্ত্রী শওকত তারিনের নাম রয়েছে৷ ১৪টি অফশোর ফাইনেন্সিয়াল ফার্ম থেকে ফাঁস হওয়া প্রায় ১২ মিলিয়ন গোপন নথি ঘেঁটে এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা৷

প্যানডোরা পেপারসে প্রকাশিত তথ্য নিয়ে বেশ দ্রুতই অবশ্য প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইমরান খান৷ রোববার টুইটারে তিনি লিখেছেন,‘‘প্যানডোরা পেপারসে নাম থাকা আমাদের সব নাগরিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে এবং যদি কোনো অনিয়ম প্রমাণিত হয় তাহলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে৷''

খান লিখেছেন, ‘‘আমি এই মারাত্মক অন্যায়কে জলবায়ু পরিবর্তন সংকটের মতোই একইভাবে বিবেচনা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি৷ এটা অনিয়ন্ত্রিত থাকলে ধনী এবং গরীবের মধ্যে অসমতা আরো বাড়বে কেননা দ্বিতীয় শ্রেণির মধ্যে দরিদ্রতা বাড়ছে৷ ফলে গরীব দেশগুলো থকে ধনী দেশগুলোতে অর্থনৈতিক অভিবাসনের হার অনেক বেড়ে যাবে গোটা বিশ্বে আরো অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে৷''

এদিকে, দেশটির বিরোধী দলের রাজনীতিবিদরা মন্ত্রিপরিষদের যেসব সদস্য এবং তাদের সহযোগীদের নাম প্যানডোরা পেপারসে এসেছে, তাদের সবাইকে পদত্যাগ করে তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷

পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সদস্য সাজিয়া মারি এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আমরা ইমরান খানের মধ্যে আগের মতো প্রতিক্রিয়া দেখিনি যখন তিনি বিরোধী দলে ছিলেন এবং পানামা পেপারস প্রকাশিত হয়েছিল৷''

তিনি বলেন, ‘‘এবার আর আগের মতো উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে না কারণ কিছু নামের সঙ্গে খানের মন্ত্রিসভার সংযোগ রয়েছে৷ যারা জড়িত তাদের পদত্যাগ করা উচিত৷''

কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন প্যানডোরা পেপারসে অনেকের নাম থাকলেও তা পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারবে না৷

‘‘এর কারণ মূলত খানের নিজের নাম তালিকায় আসেনি৷ এবং তিনি বেশ দ্রুতই জোরালো প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টির তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন,'' বলেন ওয়াশিংটনভিত্তিক উডরো উইলসন সেন্টার ফর স্কলারস এর দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মেহমেল সারফরাজও মনে করেন, কারো বিরুদ্ধে একেবারে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেয়া না হলে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটবে না৷

তিনি বলেন, ‘‘প্যানডোরা পেপারসে যাদের নাম প্রকাশিত হয়েছে তারা যদি তদন্তের নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া অবধি পদ থেকে সরে দাঁড়ান, তাহলে তা সরকারের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে৷'' 

হারুন জানজুয়া (ইসলামাবাদ)