বাংলাদেশের কাছে টাকা পাবে পাকিস্তান!
১৬ নভেম্বর ২০১৬এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, পাকিস্তান নয়, উল্টো বাংলাদেশই পাকিস্তানের কাছে টাকা পাবে৷ বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন৷
এতদিন পর পাকিস্তান কেন এই টাকার প্রসঙ্গ তুলেছে, তা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এখন বাংলাদেশ তাদের কাছে এই ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে, এমনটা জেনে আগে থেকেই তারা টাকা পাবে বলে দাবি করছে৷''
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দুই দেশ আলাদা হওয়ার আগে অনাদায়ী সম্পদের আর্থিক মূল্য হিসেবে এই অর্থ দাবি করেছে পাকিস্তান৷ বাংলাদেশের কাছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা (৯২১ কোটি পাকিস্তানি রুপি) পাওনা দাবি করে তা ফেরত চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন৷ একাত্তর পূর্ববর্তী সময়ে ‘অনাদায়ী ফেলে যাওয়া সম্পদের' আর্থিক মূল্য হিসেবে পাকিস্তান এ অর্থ দাবি করেছে৷
মঙ্গলবার পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়৷ এতে বলা হয়, স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান (এসবিপি) দেশটির সব বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অর্থের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য চিঠি দিয়েছে৷ ওই চিঠিতে তাদের বাংলাদেশ ও ভারতের কাছে পাওনা নির্ধারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷
পাকিস্তানের দাবি, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জমি, ভবন, আসবাবপত্র, অফিসের ব্যবহার্য নানা দ্রব্য, যানবাহন, সরকারি বন্ড, ঋণ, বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণের এখন আর্থিক মূল্য দাঁড়িয়েছে ৯২১ কোটি পাকিস্তানি রুপি৷ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এসব সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করেছে তারা৷ এসবিপির হিসাবে, বাংলাদেশ ও ভারতের কাছে মোট ১ হাজার ৫২৫ কোটি রুপি পাবে পাকিস্তান৷ এর মধ্যে বাংলাদেশের কাছে ৯২১ কোটি আর ভারতের কাছে পাবে ৬০০ কোটি রুপি৷
১৯৪৭ সালে দেশভাগের আগের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে বিবেচনায় নিয়ে ভারতের কাছে ৬০০ কোটি রুপি দাবি করেছে পাকিস্তান৷
এই সংবাদ প্রকাশের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে৷
দীপু সারোয়ার লিখেছেন, ‘‘সবিনয়ে বলছি, পাকিস্তানি হায়েনাদের জন্য ৭০০ কোটি টাকা নয়, ৭০০ কোটি লাথি মজুত রেখেছি৷''
সাঈদ রুকন উদ্দীন লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের কাছে নাকি পাকিস্তানের টাকা পাওনা আছে! কী বোকারে বাবা!''
মাজিদুল মাজিদ মাহমুদ সাদমান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আসলে হয়েছে কি পাকিস্তানের টাকা পয়সা নাই, তাই বাংলাদেশের থেকে ওরা ৭০০ কোটি চেয়ে বসলো৷''
শাজাহান চৌধুরী লিখেছেন, ওদের উচিত আমাদের টাকা দেয়া৷
মোহাম্মদ আব্দুল বিন আজিজ লিখেছেন, ‘‘পাকিস্তানের এই দাবি ভিত্তিহীন!! বরং ১৯৭১ সালের যুদ্ধে বাংলাদেশের জান মালের অনেক আর্থিক ক্ষতিপূরণ হিসাবে অনেক টাকার দাবি আছে পাকিস্তানের কাছে৷''
প্রসেনজিৎ দাস লিখেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের কাছে মার খেয়ে পাকিস্তান কোমা থেকে এইমাত্র উঠেছে৷''
ওয়ারিশ আজাদ নাফি লিখেছেন, ‘‘পাকিস্তানের এত অভাব চলছে বললেই হতো৷ আমরা ইভেন্ট খুলে টাকা তুলে দিতাম৷ এভাবে আন্তর্জাতিকভাবে ভিক্ষা চাওয়ার কি দরকার ছিল?'' আরো লিখেছেন, ‘‘আমরা পাকিস্তানের কাছে পাই ১৮০০০ কোটি টাকা৷ যুদ্ধকালীন সমবন্টনের হিসাবে৷ এমনকি ৭০ এর বন্যা দুর্ভিক্ষের সময় আমাদের জন্য যে ২০০ মিলিয়ন ডলার বিদেশি বন্ধুরা পাঠিয়েছিল, সেটাও তারা মেরে দিয়েছে৷ ''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী