1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করছে ইন্দোনেশিয়ার মসজিদ

১১ ডিসেম্বর ২০১৯

মসজিদ, মন্দির বা গির্জা কি পরিবেশ দূষণের সমস্যার প্রতি উদাসীন থাকতে পারে? বহু মানুষের সমাগমও তো দূষণের কারণ৷ ইন্দোনেশিয়ার এক মসজিদ পরিবেশ সংরক্ষণে এক বহুমুখী উদ্যোগ শুরু করেছে৷

https://p.dw.com/p/3UbdY
Indonesien Ahmadiyya-Minderheit
ছবি: Getty Images/AFP/Muhasan

ওজু করার সময় অনেক পানির প্রয়োজন হয়৷ নামাজের আগে নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার এই প্রক্রিয়া ইসলাম ধর্মে আবশ্যিক৷ নামাজিরা দিনে পাঁচ বার নামাজের আগে প্রতিবার ওজু করেন৷ মসজিদের টেকনিকাল দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বায়ু বলেন, ‘‘আমরা মসজিদের ছাদ থেকে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করি৷ পিভিসি পাইপের মাধ্যমে সেই পানি নীচে থেকে ছাদের ট্যাংকগুলিতে পাঠানো হয়৷ এক একটি ট্যাংকে ৪,১০০ লিটার করে পানি জমা করা সম্ভব৷ আমাদের ১০টি এমন ট্যাংক রয়েছে৷ খুব বেশি বৃষ্টি হলে পানি উপচে পড়ে আবার পাইপের মাধ্যমে নীচে মাটির উপর অথবা কূয়ায় চলে যায়৷ ওজুর পানি পুনর্ব্যবহার করতে ওজুর জায়গা থেকে সেই পানি জলাধারে জমা হয়৷ একটি পাইপ মাটির নীচে পরিশোধন যন্ত্রে পানি সরবরাহ করে৷''

ইন্দোনেশিয়ায় পরিবেশবান্ধব মসজিদ

এই প্রণালীর মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ ও পরিশোধন করা সম্ভব৷ বৈদ্যুতিক নির্গমনও কমে যায়৷ ইকো মসজিদ উদ্যোক্তা হায়ু প্রাবোভো মনে করিয়ে দেন, ‘‘মসজিদে দুটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ – পানি ও নিকাশি ব্যবস্থা৷ পানি সংরক্ষণ, পানি বাঁচানো ও পানি রক্ষা করা – এই তিনটি কর্মসূচি রয়েছে৷ পানি বাঁচিয়ে গাছ পোঁতা, বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করা, মাটিতে গর্ত খুঁড়ে পানি জমা করা, গ্রামে পুকুর খোঁড়া এবং পরিবেশবান্ধব নিকাশি ব্যবস্থা করাও জরুরি৷ বৃষ্টি হলে তার পানি অপচয় না করে ধরে রাখা হয়৷ কুয়া রাখাও জরুরি কারণ মসজিদগুলিতে ওজুর পানির অনেক অপচয় ঘটে৷ সেই পানি যথেষ্ট পরিষ্কার থাকে, তাই কূয়ায় জমা রাখা যায়৷ দ্বিতীয়ত, পানি বাঁচানোও জরুরি৷ তৃতীয়ত পানি রক্ষা করা প্রয়োজন৷ মজুত পানি দূষিত করা উচিত নয়৷ মসজিদ যেন পানিতে সাধারণ বা তরল আবর্জনা ফেলতে না পারে, সে দিকে নজর দিতে হবে৷ কারণ ইসলাম ধর্মে এটি নিষিদ্ধ৷ পানি দূষণ করা পাপ৷ অর্থাৎ এই তিনটি কর্মসূচি সব বিষয়ের সুরাহা করছে৷ ইন্দোনেশিয়ার গ্রিন বিল্ডিং পরিষদের মানদণ্ড অনুযায়ী এই আজ-জিকরা মসজিদের কাজের মূল্যায়ন করা হয়েছে৷ অর্থাৎ আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড কাজে লাগিয়ে পাঁচটি মসজিদ বিচার করেছি৷ আজ-জিকরা সেগুলির মধ্যে একটি৷ ভবন ও ব্যবস্থাপনার বিচারে এটিই সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব মসজিদ৷''

জামাতও ইকো মসজিদের সুবিধাগুলি টের পাচ্ছে৷ মানুষের মতে, এর ফলে মানুষের জীবনযাত্রার উপকার হচ্ছে৷ জামাতের অংশগ্রহণকারী সাহায়দি মনে করেন, ‘‘ইকো মসজিদ কর্মসূচির ফলে পানির গতি কমে গেলেও আমার ওজুর কোনো ক্ষতি হচ্ছে না৷ অবশিষ্ট পানি অন্য কাজে লাগতে পারে৷''

আর এক অংশগ্রহণকারী স্যামসুদ্দিন সেইসঙ্গে মনে করিয়ে দেন, ‘‘এখন আমরা পানি সাশ্রয় করছি, যাতে পানির অপচয় না হয়৷ ইসলাম ধর্মে পানির অপচয়ের অনুমতি নেই৷''

আশা করা হচ্ছে, মুসলিম সমাজ এবার পরিবেশের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারবে৷ ইকো মসজিদ উদ্যোক্তা হায়ু প্রাবোভো বলেন, ‘‘আজকাল মানুষ মসজিদ ভবন আরও উন্নত ও সুন্দর করার জন্য দান করে থাকে৷ অথচ মসজিদ ও আবাসিক মাদ্রাসার সঙ্গে অনেক সমস্যা জড়িয়ে রয়েছে৷ আবর্জনা, পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর ব্যবস্থাপনা নেই বললেই চলে৷ মসজিদ ও আবাসিক মাদ্রাসায় আবর্জনা ও পানির ব্যবস্থাপনা করা উচিত৷ এমন দানখয়রাত শুধু লোক দেখানো হওয়া উচিত নয়৷''

আমাদের গ্রহের সংরক্ষণের উদ্যোগ শুনতে বড় মনে হলেও সামান্য পদক্ষেপ দিয়ে কাজ শুরু করা যেতে পারে৷

ইউসুফ গন্দাং পামুনচাক/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান