বাংলাদেশের পরিবেশ সম্পর্কে ডয়চে ভেলের পাঠক মমিন আজিজ খুব দুঃখ করেই লিখেছেন, ‘‘আমাদের ধানমন্ডি এলাকায় অবিরাম গাছ কাটা হচ্ছে, পেরেক মারা হচ্ছে গাছে৷ আমি একাই প্রতিদিন গাছ থেকে সাইনবোর্ড খুলি৷ লেকের অবস্থাও খারাপ৷ প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে পরিবেশ মন্ত্রী সবার বাড়ি এই এলাকায়৷ সমাজের বহু সচেতন লোকের বাস, তারপরও ধানমন্ডির প্রাকৃতিক পরিবেশ দিন দিন খারাপ হচ্ছে৷''
প্রায় একই মত পাঠক গোলাম ফারুকের৷ তিনি লিখেছেন,‘‘উন্নয়নের নামে যখন গাছ কাটা হয়,দাপুটেরা যখন নদী দখল করে নেয়, পাহাড়ের টিলা কেটে সমান করে ফেলে, নির্ধারিত উচ্চতার চেয়ে কম উচ্চতার চিমনি দিয়ে ইট খোলা চালু করে, তথাকথিত শিল্পোন্নয়নের নামে শিল্প বর্জ্য যখন সাধারণ নর্দমা, খাল এবং নদীতে ছেড়ে দেয় – তখনই পরিবেশ দূষণ বেশি মাত্রায় হয়৷ এর প্রতিটি ক্ষেত্র দেখার আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব থাকে সরকারের ওপর৷ তাহলে পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী জনগণের সচেতনতার অভাব নয়, বরং কর্তা-ব্যক্তিদের গাফিলতিই এর জন্য দায়ী৷ অথচ সাধারণ মানুষের চেয়ে এই কর্তা-ব্যক্তিরা বেশি শিক্ষিত এবং সচেতনতার দাবিদার৷ এঁরা কিন্তু চাইলেই সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে পারেন নিজেদের কাজ ঠিকমত করার মধ্য দিয়ে৷''
-
অ্যামাজনের জঙ্গলে বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
সবুজ ফুসফুস
অ্যামাজন নদীর অববাহিকায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্যের আয়তন ভারতের প্রায় দ্বিগুণ৷ সেই অরণ্যের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ব্রাজিলে৷ কিন্তু পৃথিবীর এই সবুজ ফুসফুস বেআইনি গাছ কাটা আর খনিজ সম্পদের জন্য খোঁড়াখুড়ির ফলে বিপন্ন৷
-
অ্যামাজনের জঙ্গলে বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
হাতে-নাতে ধরা
মিলিটারি পুলিশ সাথে নিয়ে ‘ইবামা’-র এজেন্টরা বেআইনি গাছ-কাটিয়েদের পিছনে ধাওয়া করছেন৷ ‘ইবামা’ বলতে বোঝায় ব্রাজিলের পরিবেশ ও নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ প্রতিষ্ঠান৷ ইবামার এজেন্টরা চোরা কাঠুরিয়াদের হাতে-নাতে ধরার চেষ্টা করেন৷ ছবিতে ইবামার এক এজেন্ট কাঠ বওয়ার ট্রাকের দিকে তাক করছেন৷
-
অ্যামাজনের জঙ্গলে বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
দেরি করা নেই...
ইবামা বেআইনি কাঠ-কাটিয়েদের প্রতি খুব সদয় নয়৷ ইবামার এজেন্টদের হাতে ধরা পড়লে আর নিস্তার নেই৷ পারা রাজ্যের নোভো প্রোগ্রেসো শহরের কাছে কাঠ সুদ্ধু ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দিতে দ্বিধা করেননি ইবামার কর্মকর্তারা৷
-
অ্যামাজনের জঙ্গলে বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
বিপজ্জনক
ইবামার কাজে ঝুঁকিও কম নয়৷ কিছু কিছু চোরা কাঠুরের কাছে গুলিবন্দুক থাকে৷ গত জুন মাসে এক পুলিশকর্মী অভিযান চালানোর সময় অপরাধীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন৷
-
অ্যামাজনের জঙ্গলে বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
সাফল্যের চেয়ে অসাফল্যই বেশি
এক্ষেত্রে ইবামার কর্মকর্তারা সফল হয়েছেন বটে, কিন্তু এ ধরনের সাফল্য কমে আসছে৷ পরিবেশ বিভাগের উপরেও অর্থনৈতিক সংকটের ছাপ পড়েছে৷ বিগত কয়েক বছরে তাদের বাজেট কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ৷
-
অ্যামাজনের জঙ্গলে বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
ঢাল নেই, তলোযার নেই
‘‘কাঠ চোরাদের কাছে আমাদের চেয়ে ভালো সাজসরঞ্জাম থাকে’’, বললেন পারা রাজ্যে ইবামার প্রতিনিধি উইরাতান বারোসো৷ ‘‘যতদিন আমরা মার্কা-না-মারা গাড়ি আর ভালো রেডিও সেট না পাচ্ছি, ততদিন আমরা ভালোভাবে কাজ করতে পারব না৷’’
-
অ্যামাজনের জঙ্গলে বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে
ইবামার উদ্যোগের ফলে ২০০৪ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে অ্যামাজনের অববাহিকা অঞ্চলে গাছ কাটা কমেছে প্রায় আশি ভাগ৷ কিন্তু তার পরের চার বছরে গাছ কাটা বেড়েছে ৩৫ শতাংশ৷ ২০১৫ সালে অ্যামাজন জঙ্গলের যে অংশটা কেটে ফেলা হয়, তার আয়তন হবে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের চারগুণ৷
-
অ্যামাজনের জঙ্গলে বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
জার্মানি আর নরওয়ের সাহায্য
ব্রাজিল সরকার স্বীকার করেন যে, ইবামা যাতে ঠিকমতো তার দায়িত্ব পালন করতে পারে, সেজন্য পর্যাপ্ত অর্থসংস্থান করা হয়নি৷ এখন ফুন্ডো আমাজোনিয়া বা অ্যামাজন নিধি থেকে আরো ১৫ লাখ ইউরো পরিমাণ অর্থ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে৷ অ্যামাজন নিধির পুঁজি আসে প্রধানত জার্মানি ও নরওয়ে থেকে৷
অন্যদিকে জাভেদ হোসেনের মতে, পরিবেশ নিয়ে সাধারণ মানুষ সচেতন হয়ে কোনো লাভ নেই৷ কারণ তাঁর ধারণা, কিছু ক্ষমতাধর খারাপ লোকের জন্যই পরিবেশ আজ ধ্বংস হচ্ছে৷ মর্তুজা চৌধুরীর প্রশ্ন, ‘‘পরিবেশবাদীরা মানুষকে কতটুকু সচেতন করতে পেরেছেন?''
ফেসবুক লাইভে পরের প্রশ্ন পরিবেশবিদ মুকিত মজুমদারের কাছে তাহমিদ হোসেনের, ‘‘রাস্তার পাশের শত বছরের গাছ কাটা নিয়ে কি কিছু করেছেন বা কোনো পরিকল্পনা আছে?''
‘‘পরিবেশ সুন্দর রাখার ক্ষেত্রে সচেতনতার অনেক ঘাটতি রয়েছে আমাদের সমাজে, দেশে৷ কিন্তু সচেতনতা বাড়ছে না কেন?'' মুকিদ মজুমদারের কাছে সরাসরি প্রশ্ন পাঠক হাসান মাহমুদের৷
‘‘পরিবেশকে নির্মল রাখতে গ্রামীণ পরিবেশের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত'', বলে মনে করেন লিয়াকত হোসেন৷ রিদওয়ান আলমের ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে নেয়া এই সাক্ষাৎকারটি খুবই ভালো লেগেছে৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রকৃতিকে প্রাধান্য দিয়ে আলোচনা করার জন্য ডয়চে ভেলেকে ধন্যবাদ৷'' এছাড়া পাঠক এম. এ. বারিকেরও ভালো লেগেছে পর্বটি৷ তিনি শুধু লিখেছে্ন ‘‘ডয়চে ভেলেকে অসংখ্য ধন্যবাদ''৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
লাল সবুজ পতাকা
জার্মানির কোলন শহরের অভিজাত এলাকা রোডেনকির্শেন৷ সেই এলাকারই এক কোণে তৈরি করা হয়েছে ২৬ হেক্টর জমি জুড়ে সুন্দর একটি বাগান৷ এই বাগানে আছে বাংলাদেশের একটি গাছ৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
শান্তির বাগানে সহাবস্থান
১৯৮০ সালে ‘ফ্রিডেন্সভাল্ড’ বা শান্তির বাগানটি তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বিশ্বের ১৪২টি দেশের গাছ লাগানো হয়েছে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে৷ এখানে এতগুলো দেশের গাছ পাশাপাশি থাকবে, বেড়ে উঠবে, সহাবস্থান করবে৷ গাছ লাগানোর মধ্য দিয়ে জার্মানির সাথে এই দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্ক গাঢ় হবে – এমন ভাবনা থেকেই কিন্তু এই উদ্যোগ৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
সারা বছরই মানুষের ভিড়
যে কোনো ঋতুতেই এখানে প্রচুর লোকজন আসেন বেড়াতে, হাঁটতে বা জগিং করতে৷ গাছগুলো এমনভাবে সাড়ি বেঁধে লাগানো যেন ভেতর দিয়ে হেঁটে যাওয়া যায়৷ বাংলাদেশ, ভারত, অ্যামেরিকা, আফ্রিকা যে কোনো দেশের গাছেই সে দেশের পতাকা লাগানো আছে৷ কোনো কোনো দেশের আবার একটি নয়, অনেকগুলো গাছ রয়েছে শান্তির প্রতীক হিসেবে৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
বসন্ত
বসন্ত যে এসে গেছে, সেটা বাগানের গাছটিই বলে দিচ্ছে৷ ভাবতে এখন হয়ত অবাকই লাগবে যে গাছটি শীতকালে একেবারেই ন্যাড়া ছিল৷ আসলে জার্মানিতে কখন কোন ঋতু চলে তা গাছের দিকে তাকালেই বোঝা যায়৷ যদিও এখন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তা অনেকটাই বদলে গেছে৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
মুক্ত হাওয়া
গ্রীষ্মের মিষ্টি সকালে এমনি করেই শান্তির বাগানে এসে মুক্ত হাওয়া সেবন করে নেয় মেয়েটি৷ এতে তার মনে হয়, সে যেন সারাদিন শান্তিতে থাকতে পারে৷ আজকের এই যান্ত্রিক জীবনে এটা খুবই প্রয়োজন, তাই নয় কী?
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
ভালোবাসার ফুল
শান্তির বাগানে এসে সুন্দর একটি জায়গা খুঁজে নিয়ে প্রেমিকাকে ফুল উপহার দিচ্ছেন, যেন তাকে সারা জীবন শান্তিতে রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
সাদা বালির লেক
শান্তির বাগানে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে সবই পরিবর্তন হয়৷ তবে এই সাদা বালির অংশটুকুর কোনো পরিবর্তন হয় না, সব সময় সাদাই থাকে৷ এখানে বাচ্চারা খেলতে খুবই ভালোবাসে৷ বছরের যে কোনো সময়ই তাই দেখা যায় তাদের৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
মিনি পাহাড়
বালির লেকের একটু ওপরেই খানিকটা জায়গা পাহাড়ের মতো উঁচু-নীচু৷ যেখানে শীতকালে বাচ্চারা বরফ দিয়ে খেলতে ভালোবাসে৷ মাঝে মধ্যে বড়রাও কিন্তু সঙ্গ দেন এই অপার আনন্দে৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
একটুখানি বিশ্রাম
বাগানের শুরুতেই ১৪২টি দেশের গাছ লাগানো হয়েছে আর ভেতরে দিকে করা হয়েছে একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন৷ পুরো গার্ডেন হেঁটে ক্লান্ত? তাহলে তো চাই একটুখানি বিশ্রাম! তবে হঠাৎ যদি বৃষ্টি আসে তাহলে ছাতাটি কিন্তু বড় কাজে দেয়৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
রডোডেনড্রন
শান্তির বাগানের একটা বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে নানা রং-এর রডোডেনড্রন ফুলের গাছ৷ এ বছর অবশ্য এখনো সব গাছে ফুল ফোটেনি৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
বেড়ানোর মধ্যেই কাজ
অনেকক্ষণ খোঁজার পর ছাত্রীরা পেয়ে গেছে শিক্ষকের নাম বলে দেওয়া গাছটি, যে গাছ সম্পর্কে গত সপ্তাহেই ক্লাসে আলোচনা করা হয়েছে৷ স্বাভাবিকভাবেই, এখন তারা মহা খুশি৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
অসুস্থ গাছ
গাছটা কি সত্যি অসুস্থ? পরীক্ষা করে দেখছে৷ এভাবেই কিন্তু নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা হয় বিশাল বাগানের প্রতিটি গাছ৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
পুরো পরিবার
সপ্তাহান্তেই কেবল পুরো পরিবারের একসাথে হওয়ার সুযোগ৷ তাই সবাই মিলে শান্তির বাগানে এসেছে৷ উদ্দেশ্য ছোটবেলা থেকেই যেন বাচ্চাদের সাথে প্রকৃতির সম্পর্ক গড়ে উঠে৷ এই বাগানে এই একই লক্ষ্য নিয়ে ছোট্ট একটি কিন্ডারগার্টেনও করা হয়েছে৷
-
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
গাছ কাটা
গাছের যত্নের কোনো ত্রুটি নেই৷ অসুস্থ গাছকে সময় মতো কেটে ফেলা হয়৷ তবে একটা গাছ কাটা মানেই কিন্তু আর একটা গাছ লাগানো৷ বলা যায় একেবারে সঙ্গে সঙ্গেই!
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার