পরমাণু শক্তির বিরুদ্ধে জার্মানিতে জনমত
১৭ মার্চ ২০১১কখন, কোনদিক থেকে বিপদাঘাত আসে, কেউই হলফ করে বলতে পারেনা৷ সেই দিব্যজ্ঞান মানুষের নেই৷ জাপানের মতো কারিগরী-শিল্প-বিজ্ঞানে উন্নত দেশ কি ভেবেছিল, ভূমিকম্প, সুনামিতে পরমাণু চুল্লিগুলি বিধ্বস্ত হবে৷ ভয়াবহ কাণ্ড ঘটবে৷
জার্মানিতে ১৭টি পরমাণু চুল্লি আছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যে৷ সবই জার্মানির পশ্চিমাংশে৷ পূর্বাংশে বা একটিও নেই৷ প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ, তৎকালীন কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানিতে কি বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল? কারখানা শিল্প বন্ধ ছিল?
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, আগামী ৩ মাসের মধ্যে পরমাণু কেন্দ্র বন্ধের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে৷ তবে জার্মানির পরমাণু চুল্লির নিরাপত্তা রক্ষায় কোনো গড়িমসি নেই, বরং আরো জোরদার করা হচ্ছে৷ খতিয়ে দেখার কথায় বন্ধের আশ্বাস আছে৷ কিন্তু অনেকেই বিশ্বাসী নয়৷ প্রত্যেকের দাবি, পরমাণু চুল্লি এখনি বন্ধ করতে হবে৷ কোনো অজুহাত চলবে না৷ কেউ বলেন, জার্মানিতেও প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটতেই পারে এবং পরমাণু চুল্লিকেও আঘাত হানতে পারে৷ তখন সামাল দেওয়া মুশকিল৷ মৃত্যু অনিবার্য৷ কারোর কথা, বিকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদন তৈরি অবশ্যই সম্ভব৷ তৈরিও হচ্ছে যথেষ্ট৷ ব্যবহারও করা হচ্ছে বিস্তর৷ প্রয়োজনে সরকার আরো অর্থ বিনিয়োগ করুক, গবেষণা করুক৷ পরীক্ষা চালাক৷ কিন্তু পরমাণু চুল্লি নয়৷ বন্ধ করা হোক৷
আসলে পরমাণু চুল্লির বিদ্যুৎ ব্যবসায় জার্মানির বড়ো-বড়ো কোম্পানি, ভারি শিল্পের কলকারখানা, রাঘব বোয়ালরা জড়িত৷ সরকারও৷ নানা কেচ্ছা সত্ত্বেও সরকার, রাজনৈতিক নেতারা সময়মতো মৌনী৷ যেমন, ইতঃপূর্বে সামাজিক গণতন্ত্রী এস পি ডি এবং সবুজ দল৷ এখন ক্ষমতাহীন হয়ে পরমাণুর বিরুদ্ধে সোচ্চার৷
পরমাণু রোধে সাধারণ মানুষ কতোটা মরিয়া, দেখা গেল গত সোমবার৷ চ্যান্সেলরের কার্যালয়ের সামনে নানা শ্রেণীর, নানা পেশার জনসমাবেশ৷ হাতে প্ল্যাকার্ড৷ নানা স্লোগান৷ প্রত্যেকের একটিই দাবি: পরমাণু চুল্লি বন্ধ করতেই হবে৷ যে-কোনো মূল্যে৷ কোনো গাফিলতি, দোনামনা নয় আর৷ অনেক হয়েছে৷ ‘স্টপ ইট'৷
প্রতিবেদন: দাউদ হায়দার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন