পরমাণু বর্জ্য স্থায়ীভাবে পুঁতে রাখতে সুইডেনের পরিকল্পনা
২৮ মার্চ ২০১১এবার সুইডেন জানালো পরমাণু বর্জ্য স্থায়ীভাবে মাটির নিচে পুঁতে রাখার নিরাপদ পরিকল্পনার কথা৷
মূলত পরমাণু স্থাপনাগুলো দুটি কারণে বিতর্কের মুখে পড়েছে৷ একটি হলো কোন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিশাল এলাকাজুড়ে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা৷ অপরটি হলো বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার শেষে পরমাণু বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা৷ কারণ পরবর্তীতেও এসব পরমাণু বর্জ্য পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়৷ তবে এই আশঙ্কা দূর করতেই দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে গবেষণার পর এসব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিরাপদ উপায় উদ্ভাবন করেছে সুইডেন৷
এক্ষেত্রে সফল হলে এটিই হবে বিশ্বের প্রথম পরমাণু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দীর্ঘস্থায়ী ও নিরাপদ উপায়৷ পরিকল্পনা অনুযায়ী, এসব বর্জ্যকে ২৫ টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন তামার আধারে রাখা হবে৷ আর তামার এই আধারটিকে ৫০০ মিটার নিচে পুঁতে রাখা হবে৷ সুইডেনের পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা এসকেবি'র মুখপাত্র সাইদা লারুচি এঙস্ট্রোম জানান, ‘‘এসব পরমাণু বর্জ্য পুঁতে রাখার জন্য আমরা সারাদেশের প্রতিটি অঞ্চল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি৷ এক্ষেত্রে ভূমিকম্প থেকে শুরু করে সবধরণের দুর্যোগের সম্ভাবনাও বিবেচনা করে দেখা হয়েছে৷'' এরপর ঠিক করা হয়েছে যে, স্টকহোম থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরের উপকূলীয় শহর ফোর্সমার্কের কাছে এগুলো পুঁতে রাখাটা হবে সবচেয়ে নিরাপদ৷
শহরটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষও এব্যাপারে একমত হয়েছেন বলে জানান এঙস্ট্রোম৷ তিনি আরো বলেন, সেখানে যে শক্ত পাথরের স্তর রয়েছে তা প্রায় ২০ লাখ বছরের পুরনো এবং সেখানে কোথাও ফাটল কিংবা ভাঙন পাওয়া যায়নি৷ আশা করা হচ্ছে যে, সেখানে পরমাণু বর্জ্য প্রায় এক লাখ বছর নিরাপদে রাখা যাবে৷ সরকারিভাবে পরিকল্পনাটি অনুমোদিত হলে ২০১৩ সাল থেকে সেখানে পরমাণু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাঠামো তৈরির কাজ শুরু হবে৷ আর ২০২০ সালের দিকে প্রথম সেখানে পরমাণু বর্জ্য ভর্তি তামার আধার পুঁতে রাখা যাবে৷ তবে এমন সুরক্ষিত ব্যবস্থাপনা সত্ত্বেও সেখান থেকে ঐ অঞ্চলের মাটিতে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন বেশ কিছু সুইডিশ বিজ্ঞানী৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন