1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পদে নয়, লড়াইয়ে আছেন রাহুল গান্ধী

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
৫ জুলাই ২০১৯

লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের শোচনীয় ফলের নৈতিক দায়িত্ব স্বীকার করে দলের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাহুল গান্ধী৷ কিন্তু লড়াই ছেড়ে সরে যাচ্ছেন না, জানিয়েছেন নিজেই৷

https://p.dw.com/p/3LdBh
Indien Neu Delhi - National Congress Parteipräsident Rahul Gandhi
ছবি: Getty Images/AFP/S. Hussain

২০১৯ ভারতীয় সংসদীয় নির্বাচনের ফল ঘোষণার দু'দিন পর, ২৫ মে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাহুল গান্ধী৷ তখনই জানিয়েছিলেন, দলের হার-জিতের দায় নেওয়া এই মুহূ্র্তে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ দলকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বার্থে৷ তারপর দলের কর্মী-নেতাদের বহু অনুরোধ-উপরোধেও সিদ্ধান্ত বদলাতে রাজি হননি৷ বুধবার টুইট করে আবারও পদত্যাগের কথা জানিয়ে রাহুল লিখেছেন, ‘‘কংগ্রেসের হয়ে কাজ করা আমার জন্য সম্মানের বিষয় ছিল৷ যে দলের মূল্যবোধ এবং আদর্শ আমাদের সুন্দর এই দেশের শোনিতস্রোত৷''

এই টুইটেই নিজের চার পাতার ইস্তফাপত্রটি সাধারণের দেখার জন্য পোস্ট করেছেন৷ তারপর সন্ধেবেলা দিল্লির এক প্রেক্ষাগৃহে দলিত নিপীড়ন নিয়ে তৈরি হওয়া সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘‌আর্টিকেল ১৫'‌ ছবিটি দেখেছেন৷ পরের দিন সকালে গিয়েছেন মুম্বই, তাঁর বিরুদ্ধে এক আরএসএস কর্মীর দায়ের করা মানহানির মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে৷ মুম্বইতে এক ভাষণে গান্ধী হত্যার পিছনে হিন্দুত্ববাদী আরএসএসকে দায়ী করেছিলেন রাহুল৷ এই মামলা সেই সূত্রেই৷ তবে বৃহস্পতিবার তাঁর আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত৷

দাদা রাহুলের পদত্যাগপত্রের ছবিটি রিটুইট করে বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বুধবারই লেখেন, ‘‘তুমি যা করলে, তা করার সাহস ‌খুব কম লোকেরই আছে৷ শ্রদ্ধা৷''

এবং যা শোনা যাচ্ছে, রাহুলের পর কে কংগ্রেসের সভাপতি হতে পারেন, এমন কোনো নামও সুপারিশ করে যেতে চাননি সোনিয়া বা রাহুল৷ কারণ, ওঁদের ধারণা, ওদের মনোনীত কোনো নেতাকে সভাপতি করলে ফের প্রচার শুরু হতো যে আবারও নিজেরা আড়ালে থেকে কোনো হাতের পুতুলকে দলের মাথায় বসালেন৷ যেমনটা বলা হতো ড. মনমোহন সিংকে ইউপিএ সরকারের প্রধানমন্ত্রী করার পর৷

‘‘কংগ্রেস এবং নেহেরু পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করা একেবারেই অসম্ভব’’:প্রদীপ ভট্টাচার্য

বিরোধী বিজেপিকে সেই সুযোগটা আর দিতে চান না ওঁরা৷ কংগ্রেস মানেই নেহরু-গান্ধী পরিবার, কংগ্রেস মানেই সরাসরি অথবা বকলমে পরিবারতন্ত্র— এই প্রচারের হাতিয়ারটা এবার ওঁরা বিরোধীদের হাত থেকে কেড়ে নিতে চান৷

সেই কারণেই কি কোনো অনুরোধ বা আপত্তিতে কান না দিয়ে রাহুল গান্ধীর ইস্তফা?‌ ডয়চে ভেলের এই প্রশ্নের সারবত্তা অংশত মেনে নিলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা এবং দলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ তবে তাঁর বক্তব্য, পদ ছাড়লেও দল ছাড়ছেন না রাহুল৷ রাজনীতিতেও পুরোমাত্রায় থাকছেন৷ কারণ, ‘‌‘‌নেহেরু গান্ধী পরিবার ভারতবর্ষের জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে৷

এই মিশে থাকাটা কোনো কৃত্রিম (‌বিষয়)‌ নয়৷ এটা প্রকৃতিগত এবং স্বাভাবিক৷ কংগ্রেস এবং নেহেরু পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করা একেবারেই অসম্ভব!''‌ তিনি মনে করেন, তার পরেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা হতে পারে নেতৃত্ব নিয়ে৷ এ প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধী নিজে যা বলেছেন, তারই প্রতিধ্বনি করেছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ যে পদে না থাকলেও রাহুল লড়াইয়ে থাকবেন৷ গত পাঁচ বছরে যতটা লড়াই করেছেন, তার থেকেও জোরদার লড়াই করবেন বিজেপির বিরুদ্ধে৷