1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাঁচ বছরের দীর্ঘ শান্তি!

আনা লেমান/এসি১৮ মে ২০১৪

শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারান প্রায় এক লক্ষ মানুষ৷ ২০০৯ সালের মে মাসে শ্রীলঙ্কার সরকারি সেনাবাহিনী ‘‘তামিল এলামের মুক্তি শার্দূল’’-দের নিয়ন্ত্রিত শেষ এলাকাগুলি দখল করে৷ তার পর থেকে দুই পক্ষের সম্প্রীতি বেড়েছে কি?

https://p.dw.com/p/1C1i1
Sri Lanka Mutter mit Kind
ছবি: LAKRUWAN WANNIARACHCHI/AFP/Getty Images

২০০৯ সালের ১৮ই মে তারিখে প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেন৷ শুধুমাত্র যুদ্ধের শেষ কয়েক মাসেই প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪০ হাজার মানুষ৷ দেশের মধ্যেই দু'লাখ ৮০ হাজার মানুষ পলাতক, তাঁদের অধিকাংশই তামিল, যাঁরা উত্তর ও পূর্বের সাবেক তামিল নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলি ছেড়ে পালাচ্ছিলেন এবং উদ্বাস্তু শিবিরগুলিতে গিয়ে ভিড় করছিলেন৷ উদ্বাস্তু শিবিরগুলি ছিল ক্ষুধা, জলকষ্ট ও রোগভোগের আস্তানা৷

Regionalwahlen Sri Lanka 2013
তামিল জনগণের জীবনে বহু বাধাবিপত্তি ও অভাব-অনটন এখনো রয়ে গেছে (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance/AP

তবুও শান্তি শান্তিই৷ বিশেষ করে সিংহলি জনগণের ছিল বিপুল আশা৷ প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে ও তাঁর নেতৃত্বাধীন ‘‘ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্স'' (ইউপিএফএ) ২০১০ সালের সংসদীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে৷ রাজাপাকসে উত্তর ও দক্ষিণের সংখ্যালঘু তামিলদের সমস্যাগুলির দিকে নজর দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন৷ তামিলদের চোখের সামনে তখনও যুদ্ধ ও ধ্বংসের ভয়াল স্মৃতি, কাজেই তাঁরা এই প্রতিশ্রুতি কতটা বিশ্বাস করেছিলেন, সেটা তারাঁই জানেন৷

তার পাঁচ বছর পরে রাজাপাকসে এখনও ক্ষমতায় এবং শ্রীলঙ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলিদের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি ঘটেছে বৈকি – বিশেষ করে প্রাক্তন রণাঙ্গণ থেকে দূরে৷ তাঁদের সবচেয়ে বড় লাভ হলো নিরাপত্তা: আজ তাঁদের সন্ত্রাসী আক্রমণের শঙ্কা নেই৷ উত্তর ও পূর্বের প্রাক্তন তামিল এলাকাগুলিতেও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চালু করা হয়েছে৷ তবুও সেখানকার তামিল জনগণের জীবনে বহু বাধাবিপত্তি ও অভাব-অনটন৷

প্রথমত, প্রাক্তন তামিল এলাকাগুলিতে সেনাবাহিনী পূর্বাপর পুরোমাত্রায় উপস্থিত৷ তারাই প্রশাসন চালায় এবং ‘‘জাতীয় নিরাপত্তার'' কারণ দেখিয়ে তারা বিপুল পরিমাণ জমি বাজেয়াপ্ত করেছে – ডয়চে ভেলেকে এ কথা বলেন শ্রীলঙ্কার একটি এনজিও-র কর্মী জেহান পেরেরা৷ এনজিও-টির নাম ‘‘ন্যাশনাল পিস কাউন্সিল'' বা ‘জাতীয় শান্তি পরিষদ'৷ পেরেরা জানালেন, জমি বেদখল হওয়ার ফলে বহু মানুষ বাস্তুহারা; কাজেই তাঁরা উদ্বাস্তু শিবিরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন৷

Flüchtlingslager in Sri Lanka PANO
দেশের মধ্যেই দু'লাখ ৮০ হাজার মানুষ পলাতক (ফাইল ফটো)ছবি: AP

অথচ গত বছর ঠিক এই এলাকাতেই বহু দশক বাদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়; জেতেও এই অঞ্চলের বৃহত্তম তামিল দল৷ সরকার যে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দিয়েছেন, সেটাকেই একটা প্রগতি হিসেব দেখছেন পেরেরা৷ কিন্তু সরকার এই প্রাদেশিক উপদেষ্টা পরিষদগুলিকে তাদের প্রাপ্য ক্ষমতা দেননি৷ তাদের সব সিদ্ধান্তই প্রদেশের রাজ্যপালের মর্জির উপর নির্ভরশীল৷ সেই রাজ্যপাল আবার প্রেসিডেন্টের নিযুক্ত, নির্বাচিত নন৷

জনগণের তামিল অংশের কাছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ হলো সম্প্রীতির প্রথম শর্ত৷ কাজেই অনেক বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষকের মতে শ্রীলঙ্কা আজও গৃহযুদ্ধ-পরবর্তি পরিস্থিতি থেকে বের হতে পারেনি৷ সম্প্রীতি আনয়নের প্রচেষ্টা মোটামুটি ব্যর্থ হয়েছে, বলা চলে৷ বুদ্ধধর্মাবলম্বী সিংহলি ও হিন্দুধর্মাবলম্বী তামিলদের মধ্যে অনাস্থা পূর্বাপর গভীর ও অনতিক্রান্ত৷ এমনকি যুদ্ধে তামিলদের যে বহু আত্মীয়স্বজন নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁরা জীবিত কি মৃত, সে বিষয়েও খবরাখবর চান তামিলরা শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছ থেকে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য