1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গোলকধাঁধায় বাংলাদেশের রাজনীতি

সমীর কুমার দে, ঢাকা২১ মে ২০১৩

নিষেধাজ্ঞার গোলকধাঁধায় এখন আটকে রয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতি৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর সভা-সমাবেশের ওপর এক মাসের নিষেধাজ্ঞার কথা বললেও সরকারি কোনো প্রজ্ঞাপন বা লিখিত কিছু সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি৷

https://p.dw.com/p/18bUC
Police officers help a man cross a street during a clash with activists of Hefajat-e Islam in front of the national mosque in Dhaka May 5, 2013. At least one person was killed, more than one hundred injured, including journalists, and thirteen vehicles torched as activists from Hefajat-e Islam and Islami Chhatra Shibir clashed with police at the city's Paltan area. According to local media, Hefajat activists demanded for the introduction of blasphemy laws and a 13-point agenda, while blocking major roads in Dhaka. REUTERS/Andrew Biraj (BANGLADESH - Tags: POLITICS CIVIL UNREST RELIGION)
ছবি: Reuters

বিরোধী দল এই নিষেধাজ্ঞার কঠোর সমালোচনা করলেও আইনগতভাবে মোকাবেলার পথ খুঁজে পাচ্ছে না৷ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, সভা-সমাবেশ বন্ধ করে সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে৷ বর্তমান সরকার দ্বিমুখী আচরণ করছে৷ একদিকে মুখে গণতন্ত্রের কথা বলছে, অন্যদিকে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে গণতন্ত্র হরণ করছে৷ বাংলাদেশে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা গণতন্ত্র হতে পারে না বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ তবে তিনি সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, সরকারের কাছে দাস-ক্ষত দিয়ে বিরোধী দল রাজনীতি করবে না৷ তাই সরকারকে গণতান্ত্রিক আচরণ করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অবিলম্বে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে আসতে হবে৷

এর আগে মঙ্গলবার সকালে এক অনুষ্ঠানে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকার বিরোধী দলকে ভয় পায় বলেই সভা-সমাবেশ বন্ধ করে দিয়েছে৷ দেশের ৯০ ভাগ মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন হলে নির্দলীয় সরকারের অধীনেই হবে৷ সংসদ বহাল রেখে পৃথিবীর কোনো দেশেই নির্বাচন করার নজির নেই৷ সরকার বিরোধী দলকে নির্মূল করতে চায় বলেই এমন আচরণ করছে৷ এদিকে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির এক দোয়া মাহফিলের অনুষ্ঠান পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ৷ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে পুলিশ বাধা দেয়৷ পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে অনুষ্ঠানটি না করতে অনুরোধ করেন বিএনপি নেতাদের৷

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মেহেদী হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, পুলিশের কাছে তথ্য ছিল যে, অনুষ্ঠান শেষে বাইরে বের হয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো নাশকতা করতে পারেন৷ পাশাপাশি ওই অনুষ্ঠানে শিবিরের অনেক লোক জড়ো হওয়ার চেষ্টা করছে৷ ফলে অনুষ্ঠানটি না করতে তাদের অনুরোধ করা হয়েছে৷

অপরদিকে, অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীরের পদত্যাগ দাবি করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি৷ একইসঙ্গে সভা সমাবেশের ওপর অলিখিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়েছে৷ সংবিধান লঙ্ঘন করে দেশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সমিতির দক্ষিণ হলে আয়োজিত এক জরুরি সভায় এই দাবি জানানো হয়৷ সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এমপির পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি-পন্থী শীর্ষ আইনজীবীরা৷ প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি পন্থী প্যানেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়৷

আইনজীবীদের ওই সভায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার জনগণকে ভয় পেতে শুরু করেছে৷ বর্তমান সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ দেউলিয়া হয়ে গেছে৷ এ জন্য তারা সভা সমাবেশ নিষিদ্ধের মতো অগণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থী সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তিনি অবিলম্বে এই মৌখিক ঘোষণা প্রত্যাহার করে মিছিল সমাবেশের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করেন৷

India's Home Minister Sushil Kumar Shinde (L) and Bangladesh's Minister for Home Affairs Mohiuddin Khan Alamgir pose for the media after signing a treaty in Dhaka January 28, 2013. Bangladesh and India signed two treaties on Monday to liberalize visa agreements and to revise visa restrictions of the two neighbouring countries. REUTERS/Andrew Biraj (BANGLADESH - Tags: POLITICS)
অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীরের (ডানে) পদত্যাগ দাবি করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিছবি: Reuters

সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে ‘আপাতত' কাউকে সভা সমাবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না৷ তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অধ্যাদেশ অনুযায়ী মেট্রোপলিটন এলাকায় সভা-সমাবেশ করতে হলে পুলিশ কমিশনারের অনুমতি নিতে হবে৷ এখন সেই অনুমতির বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে৷ তবে আইনশৃঙ্খলা জনিত পরিস্থিতির উদ্ভব হবে না – এমন কোনো অনুষ্ঠানের ব্যাপারে যে কেউ আবেদন করতে পারেন৷ সেই আবেদনগুলো পুলিশ কমিশনার বিবেচনা করে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য