1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

একদিনে ১২ হামলা, আহত ৭৩

২১ ডিসেম্বর ২০১৮

নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে সহিংসতার ঘটনা তত বাড়ছে৷ প্রতিদিনই হামলা, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটছে৷ মনোনয়নপত্র বিক্রির দিন থেকে এইসব সহিংসতার ঘটনা চোখে পড়বার মতো করে বেড়েছে৷

https://p.dw.com/p/3AVYO
ফাইল ছবিছবি: picture alliance/ZUMAPRESS.com

শুধু যে ঐক্যফ্রন্ট বনাম মহাজোট বা বিএনপি বনাম আওয়ামী লীগের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে, তা নয়৷ দলীয় অন্তর্কোন্দলও স্পষ্ট হচ্ছে এসব সহিংসতার ঘটনায়৷ শুধুমাত্র গত ২০ ডিসেম্বরই সারাদেশ ১২টি নির্বাচনি এলাকায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে৷ এতে আহত হয়েছে ৭৩ জন৷ এছাড়াও প্রার্থীদের নির্বাচনি কার্যালয়ে বোমা হামলা, পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে৷

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে বাড়ছে সহিংসতা

গত ১০ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর পরদিনই নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষে যুবলীগের এক নেতা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে৷ মিছিলে হামলার ঘটনায় নোয়াখালীর এওজবালিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান৷ এছাড়া সে ঘটনায় ৮-১০ জন আহত হয়৷

গত ১২ ডিসেম্বর ১৭ জেলায় সহিংসতার ঘটনায় ১৩১ জন আহত হন৷ রাজশাহী,বাগেরহাট, ফরিদপুর, নাটোর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নওগাঁ, নোয়াখালী চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, শেরপুর, মাগুড়া, নেত্রকোনাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে হামলা ও কার্যালয় ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটে৷ শেরপুরে মুখোমুখি সংঘাত এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারাও জারি করে৷ চট্টগ্রামে আমির খসরু মাহমুদের গণসংযোগে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘাতের অভিযোগ ওঠে৷  এদিনই ঢাকায় আফরোজা আব্বাসের গণসংযোগে হামলার ঘটনা ঘটে৷ গত ১৮ ডিসেম্বর ফের আফরোজা আব্বাসের গণসংযোগে হামলার ঘটনা ঘটেছে৷

প্রার্থী নেতাদের ওপর  হামলা

গত ২ ডিসেম্বর সিলেটের ওসমানিনগরে সাংসদ ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়ার গাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা৷ এরপর ১১ ডিসেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে৷

 ১৩ ডিসেম্বর পাবনার সাঁথিয়ায় সদ্য আওয়ামী লীগ ছেড়ে ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়া পাবনা-১ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে৷

 ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়৷

১৫ ডিসেম্বর নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি সদরে নির্বাচনি প্রচারণার সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী ইকবাল হোসেনসহ একাধিক নেতাকর্মীকে লক্ষ্য করে ছররা গুলির অভিযোগ তোলা হয় স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে৷ 

একই দিনে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-লোহাগাড়া) আসনে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-র সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রমের নির্বাচনি প্রচারণায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা৷ এ ঘটনায় অলি আহমদের ছেলেসহ অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হন৷

১৬ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ সিদ্দিকীর গাড়িবহরে হামলা হয়৷ সেদিনই চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানার নয়াবাজার এলাকায় চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুড়িং) আসনের বিএনপি প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমানের বিজয় দিবসের র‌্যালিতে হামলার ঘটনা ঘটে৷

গত ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কামাল মজুমদারের মিরপুরের ৬০ ফুট সড়ক সংলগ্ন মোল্লাপাড়ার নির্বাচনি প্রচার কেন্দ্রে হামলা, বিস্ফোরণ, গুলি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে৷ এ সময়ে কয়েকটি গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে৷ ওই হামলায় ওয়ার্ড শ্রমিকলীগ নেতা হারুন উর রশিদ আহত হন৷

হামলার শিকার সংখ্যালঘু পরিবার!

নির্বাচনকে সামনে রেখে বরাবরের মতোই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে৷ আজ (শুক্রবার) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় একটি হিন্দু বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে৷ ভোরে উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের সিংগিয়া শাহাপাড়া গ্রামের কৃষ্ণ ঘোষের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে বলে ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তাহের মো. আব্দুল্লাহ নিশ্চিত করেন৷

এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের আলমপুর গ্রামে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয় শিশির শীলের ৪টি ঘর৷ স্থানীয় পুলিশ ও জনসাধারণ এটিকে নির্বাচনকেন্দ্রিক হামলা বলেই বিবেচনা করছে৷

এছাড়া সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার ধুকুরিয়ায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি জগদীশ সাহার বাড়িতে বোমা হামলা ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে গত ১১ ডিসেম্বর৷

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে আতঙ্কে রয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়৷ বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় যশোরের মালোপাড়ায় যে ব্যাপক হামলা হয়েছিল, এবারও সেরকম কিছুর আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয়রা৷ তবে এসব এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী৷

দুর্ঘটনা!

এই নির্বাচনে সহিংসতার পাশাপাশি মর্মান্তিক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। বাগেরহাটের কচুয়ায় নির্বাচনি প্রচার শেষে ফেরার পথে বাস চাপায় আওয়ামী লীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন৷ আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন৷ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বাধাল ইউনিয়নের যশোরদি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে৷