1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সামাজিক সুবিচারের কথা

আনিয়া ফ্যানলে / আরবি১৬ আগস্ট ২০১৩

জার্মানির আসন্ন নির্বাচনি প্রচার অভিযানে সামাজিক সুবিচারকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে৷ ২০০৫ সালের নির্বাচনে তেমন আমল দেওয়া না হলেও এবার সব পার্টির অ্যাজেন্ডাতেই রয়েছে বিষয়টি৷

https://p.dw.com/p/19QpV
ছবি: Reuters

‘‘সামাজিক সুবিচার আমার কাছে শুধুই প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণা৷ এতে খুব বেশি পরিবর্তন হবে না৷ ধনীরা ধনীই থাকবে৷ গরিবরা আরো গরিব হবে৷'' বলেন ৭৭ বছর বয়সি পেনশনভোগী ইর্মট্রুড৷

সামাজিক সুবিচার, এই শব্দটি এক এক জনের কাছে একেক রকমের অর্থ বহন করে৷ আলেন্সবাখ সমীক্ষা ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, জার্মানির অধিকাংশ মানুষ সামাজিক সুবিচার বলতে সুযোগের সমানাধিকার বোঝে৷ সমীক্ষা-প্রকল্পের প্রধান মিশায়েল সমার বলেন, ‘‘অর্থাৎ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ ও সামাজিক পরিচয় যাই হোক না কেন, পেশা ও শিক্ষাক্ষেত্রে প্রত্যেকেই সমান সুযোগ সুবিধা পাবে৷''

বিষয়টি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে

ইউনিভার্সিটি ব্রেমেনের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ফ্রাংক নুলমায়ার রাজনৈতিক দলগুলি ‘সামাজিক ন্যায়বিচারের' প্রশ্নটিকে কী ভাবে ব্যবহার করছে, তা পর্যবেক্ষণ করছেন বেশ কয়েক বছর ধরে৷ এবারের নির্বাচনি প্রচারণায় এই বিষয়টি কেন এতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তার একটা সহজ ব্যাখ্যা রয়েছে তাঁর কাছে৷ ‘‘২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সুদূরপ্রসারী প্রভাব এসে পড়ে ইউরোপীয় মুদ্রা ইউনিয়নেও৷ অর্থনৈতিক বাজারের সামাজিক ফলাফলকে আজ আর পাশ কাটানো সম্ভব নয়৷ সম্পদের অসম বণ্টন জার্মানি ও অন্যান্য দেশে প্রকট হয়ে দেখা দিচ্ছে৷ তাই রাজনৈতিক দলগুলির এক্ষেত্রে একটা অবস্থান নিতেই হয়৷'' জানান নুলমায়ার৷

Bundestagswahlen 2013 Wahlplakat CDU
৭০ শতাংশ মানুষ মনে করেন জার্মানির অর্থনৈতিক অবস্থা ন্যায়সঙ্গত নয়ছবি: John MacDougall/AFP/Getty Images

সব দলই উঠেপড়ে লেগেছে

জার্মান শ্রমমন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন মনে করেন, সামাজিক সুবিচার সিডিইউ-এর এক ‘মৌলিক বিষয়'৷ খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী পার্টির এই রাজনীতিবিদ তাঁর নিজের দলের ভেতরেই শ্রমের ন্যূনতম মজুরির জন্য সক্রিয় হন৷ ৫০ ও ৬০এর দশকে দুই খ্রিষ্টীয় পার্টি সিডিইউ ও সিএসইউ ছিল জনকল্যাণমূলক পার্টি৷ বলেন নুলমায়ার৷ দলের অভ্যন্তরেই সামাজিক ভাবধারার স্রোত ছিল সবসময়৷ এখন এটা আবার জেগে উঠছে৷

আদতে সামাজিক গণতন্ত্রীদের মূল বিষয় ছিল ‘সামাজিক সুবিচার'৷ ‘‘আমাদের দলই একমাত্র রাজনৈতিক শক্তি, যা সবল ও দুর্বলের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে পারে৷ দরিদ্র ও ধনীর মধ্যে ফারাকটা আবার বন্ধ করতে পারে৷'' এই কথা বলেন এক সাক্ষাৎকারে এসপিডির রাজনীতিবিদ টোমাস অপারমান৷

তবে জার্মান চ্যান্সেলর গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার-এর আমলে নেওয়া সংস্কার কার্যক্রমের ধাক্কাটা এখনও সামলাতে পারেনি সামাজিক গণতন্ত্রীরা৷ বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়ায় ও ধনী দরিদ্রের ব্যবধান বিস্তৃত হওয়ায় অ্যাজেন্ডা ২০১০ ও ‘হারৎস চার' নামে সংস্কার প্রচেষ্টা সমালোচনার মুখে পড়ে সে সময়৷ যার রেশ রয়ে গেছে এখনও৷

এসপিডির সামনে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তারা কী সামাজিক সুবিচারের পথে আবার যাবে, নাকি অ্যাজেন্ডা ২০১০ ও সামাজিক সুবিচারের মাঝামাঝি এক ধরনের আপোশ-রফার চেষ্টা করবে৷ যা দলটিকে দুর্বল করবে বলে মনে করেন নুলমায়ার৷

সবুজ দল তাদের নির্বাচনি প্রচারণায় সামাজিক সুবিচারকে বিশেষভাবে তুলে ধরেছে৷ শ্রমের ন্যূনতম মজুরি ৮.৫০ ইউরো এবং দীর্ঘকালীন বেকারদের জন্য ভাতা বৃদ্ধির দাবি করে সবুজ দল৷ যা সামাজিক সুবিচারের পথকে সুগম করবে বলে মনে করেন সবুজ দলের শীর্ষপ্রার্থী ইয়ুর্গেন ত্রিটিন৷

Sigmar Gabriel Kritik an Angela Merkel NSA Abhörskandal
এসপিডি কি সামাজিক সুবিচারের পথে আবার যাবে?ছবি: Getty Images

মুক্ত গণতন্ত্রী দল দক্ষতা ও সুযোগের সমানাধিকারের ওপর জোর দেয়৷ মধ্যবিত্তদের ওপর আর চাপ দেওয়া হবে না৷ একটি দেশে তখনই সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়, যখন ব্যক্তিগত উন্নতি শিক্ষার ওপর, মা-বাবার আর্থিক সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে না৷ বলেন মুক্ত গণতন্ত্রী দলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে বিল্ড সাইটুং-এর সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে৷

আর বাম দল ডি লিংকে দাবি করে ‘১০০ শতাংশ সামাজিক'৷ কর, অবসরভাতা, বেকারভাতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার চায় তারা৷

রাজনীতিকে দায়ী করা হয়

আলেন্সবাখ ইন্সটিটিউটের এক সমীক্ষায় জানা গেছে, জার্মানির ৭০ শতাংশ মানুষ মনে করেন জার্মানির অর্থনৈতিক অবস্থা ন্যায়সঙ্গত নয় এবং গত বছরগুলিতে এই অসমতা আরো বেড়ে গেছে৷ দুই তৃতীয়াংশ মানুষ এই জন্য রাজনীতিকে দায়ী করে৷

‘‘এ কারণে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আরো বেশি করে এই বিষয়টির দিকে জোর দিতে হবে, করতে হবে বাস্তবায়নও৷'' বলেন আলেন্সবাখ সমীক্ষা ইন্সটিটিউটের মিশায়েল সমার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য