1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিরীহ আফগানের মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে

১০ আগস্ট ২০১০

আফগানিস্তানে নিরীহ মানুষের মৃত্যুর মিছিল আবার দীর্ঘ হচ্ছে৷ জাতিসংঘ বলছে, সহিংসতায় এই বছরের প্রথম ছয় মাসে যে সংখ্যক আফগান মারা গেছে, তা আগের বছরের চেয়ে ৩১ শতাংশ বেশি৷ মূলত জঙ্গিদের চোরাগুপ্তা হামলার শিকার হচ্ছে তারা৷

https://p.dw.com/p/OhSn
আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর অভিযানছবি: AP

আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর অভিযান শুরু হয় ২০০১ সালে৷ তারপর থেকে যুদ্ধ চলছে৷ আর এই যুদ্ধের বলি হচ্ছে নিরীহ আফগানরা৷ কখনো তালেবানের বোমা হামলায়, কখনো বা ন্যাটো বাহিনীর অভিযানে৷ গত কয়েক বছরে বেসামরিক আফগানের মৃত্যুর সংখ্যা কমে এলেও এই বছর এসে তা আবার বাড়তে শুরু করেছে৷

জাতিংঘের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মোট ১ হাজার ২৭২ জন নিরীহ আফগান সহিংসতায় নিহত হয়েছে৷ আহত হয়েছে ১ হাজার ৯৯৭ জন৷ এর মধ্যে তালেবানের হামলায় নিহত হয়েছে ৯২০ জন, আর আহত হয়েছে ১ হাজার ৫৫৭ জন৷ অর্থাৎ সহিংসতায় যতজন মারা গেছে, তার ৭৬ শতাংশের জন্যই দায়ী তালেবান৷ এর অধিকাংশই মারা গেছে রাস্তার পাশে পেতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে৷

Terroranschlag in Kunduz
মারা যাচ্ছেন নিরীহ আফগানরাছবি: AP

আফগানিস্তানে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আজ মঙ্গলবারই অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ৷ কাবুলে সংস্থার প্রতিনিধি স্তেফান দে মিস্তুরা বলেন, ‘‘হতাহতের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে, এখন নিরীহ আফগানরাই হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে৷'' শুধু পুরুষই নয়, হতাহতের মধ্যে রয়েছে নারী ও শিশুরাও৷ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নারীদের মৃত্যুর হার গত বছরের চেয়ে ৬ শতাংশ ৷ এই বছরের প্রথম ছয় মাসে মোট ১২০ জন নারী নিহত হয়েছে৷ শিশুর সংখ্যা হচ্ছে ১৭৬৷ আহত নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ১৫১ ও ৩৮৯৷

তালেবান হামলায় নিহতের সংখ্যা বাড়লেও ন্যাটো কিংবা আফগান বাহিনীর হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ এই সময়ে সরকারি বাহিনীর অভিযানে মারা গেছে ২২৩ জন বেসামরিক লোক, যা গত বছরের চেয়ে ১২ শতাংশ কম৷ অন্যদিকে ন্যাটো বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে ৬৯ জন৷ এই সংখ্যা আগের চেয়ে ৬৪ শতাংশ কম৷ কয়েক বছরে ন্যাটো অভিযানে নিরীহ মানুষ মারা পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়৷ আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও বিভিন্ন সময় এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন৷ সেখানে ন্যাটো বাহিনীর সাবেক অধিনায়ক স্ট্যানলি ম্যাকক্রিস্টালের যুদ্ধ কৌশলে অবশ্য বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসে৷ বাহিনীর নতুন প্রধান ডেভিড পেট্রেয়াসও পূর্বসূরির কৌশল বদলাননি৷ জেনারেল পেট্রেয়াস বলেন, ‘‘সামরিক অভিযানে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি যেন কম হয়, তা মাথায় রেখেই অভিযান চালানো হচ্ছে৷ এটাকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি৷''

এ তো গেল জাতিসংঘের হিসাব, আফগানিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের হিসেবে সহিংসতায় বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার সংখ্যাটি একটু বেশি৷ তারা বলছে, নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ২২৫৷ তবে তালেবান হামলাই যে এই সংখ্যাটিকে ভারী করেছে, সে বিষয়ে একমত মানবাধিকার কমিশনও৷ তাদের পরিসংখ্যান বলছে, এই মৃত্যুর মিছিলের ৬৮ শতাংশের জন্য দায়ী তালেবন৷ আর ২৩ শতাংশ মৃত্যুর কারণ ন্যাটো বাহিনী৷ সব কিছু মিলিয়ে আফগানিস্তান যে এখনো নিরাপদ নয়, তা এইসব পরিসংখ্যানই বলছে৷ আর আফগানরা অতি শিগগির যে নিরাপদ পরিবেশ পাবে, সে ইঙ্গিতও আপাতত মিলছে না৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ