নিন্দা অব্যাহত, আটককৃতদের মুক্তি দিচ্ছে ইসরায়েল
২ জুন ২০১০ত্রাণবাহী জাহাজে ইসরায়েলি হামলার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র নিন্দার জোয়ার দেখা যায়৷ মঙ্গলবার মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধান বারাক ওবামাও এ বিষয়ে মুখ খোলেন৷ তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের সাথে৷ ওবামা এর্দোয়ানকে আশ্বস্ত করেন যে, ঐ ঘটনায় ইসরায়েলিদের হাতে বন্দি সবার মুক্তির জন্য আমেরিকা কাজ করে যাচ্ছে৷ এর্দোয়ান মঙ্গলবার সংসদে এক ভাষণে বলেন, ‘‘ইসরায়েলি সরকারের এই দায়িত্বজ্ঞানহীন ও নিষ্ঠুর হামলার জন্য অবশ্যই শাস্তি দিতে হবে৷ কোনরকম আইনের তোয়াক্কা না করে, মানবিকতার বোধ বিসর্জন দিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে৷''
মার্কিন অবস্থান
ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণবহনকারী তুর্কি জাহাজে ইসরায়েলের হামলায় নয় জনের নিহত হওয়ার ঘটনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকেও বিতর্কিত করেছে৷ এ প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার তুর্কি নেতাকে টেলিফোন করে নিজ দেশের অবস্থান পরিষ্কার করেন ওবামা৷ ঐ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যে সুপারিশ করেছে সেটিকেও সমর্থন করেন ওবামা৷ হোয়াইট হাউস সূত্র বলছে, এই মর্মান্তিক ঘটনার সাথে জড়িত সবকিছুর একটি বিশ্বাসযোগ্য, নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্তের পক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কথা নিশ্চিত করেন বারাক ওবামা৷ এছাড়া গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে আরো কার্যকর পন্থা গ্রহণের প্রয়োজনের কথাও বলেন তিনি৷
হিলারি ক্লিন্টনের সতর্ক প্রতিক্রিয়া
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রী আহমেত ডাভুটোগলুর সাথে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন৷ তাঁদের বৈঠকে ত্রাণবহরে ইসরায়েলি হামলার বিভিন্ন দিক বিশেষভাবে স্থান পায় বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ তবে ঐ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সব মহলকে সতর্ক এবং সুচিন্তিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান ক্লিন্টন৷ ত্রাণবাহী জাহাজে ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষিতে করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে, জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাঁর বিশেষ সমন্বয়কারী রবার্ট সেরি বৈঠক করেছেন৷ এছাড়া তিনি উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা থেকে ফিলিস্তিনি, ফরাসি, তুর্কি এবং ইসরায়েলি নেতাদের সাথে কথা বলেছেন বলে জানান জাতিসংঘের মুখপাত্র মেরি ওকাবে৷
ইসরায়েলি পদক্ষেপ
এদিকে, ঐ ঘটনার পর সব মহল থেকে তীব্র নিন্দা আসতে থাকায় ত্রাণবাহী জাহাজ থেকে আটক ৬৮২ জন কর্মীকে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই বহিষ্কার করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইসরায়েল৷ উল্লেখ্য, ত্রাণবাহী ছয়টি জাহাজ থেকে সুইডিশ লেখক হেনিং ম্যাংকেল এবং দুই রাজনীতিকসহ আরব, আমেরিকা, এশিয়া এবং ইউরোপের ৩৫ টি দেশের প্রায় ৭০০ কর্মীকে আটক করেছিল ইসরায়েলি নৌসেনারা৷ ত্রাণবাহী নৌবহরে হামলায় নিহত হয়েছে চার তুর্কিসহ মোট নয়জন৷
সুইডিশ লেখক হেনিং ম্যাংকেল
সুইডিশ লেখক হেনিং ম্যাংকেল এই হামলার কারণে ইসরায়েলের উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানান৷ ত্রাণবাহী নৌবহরে থাকা ম্যাংকেল এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তাঁদের জাহাজে কোন অস্ত্র ছিল না৷ ইসরায়েলের হাত থেকে মুক্ত হওয়ার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুইডেন পৌঁছেছেন ম্যাংকেল৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন