1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিজ দলে বিদ্রোহের মুখে জনসন?

৯ অক্টোবর ২০১৯

যে কোনো মূল্যে ব্রেক্সিট কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর বরিস জনসন মন্ত্রীসভা ও সংসদীয় দলের সমর্থনও হারাতে পারেন৷ এদিকে ইইউ নেতারা চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের দায় সরাসরি জনসনের উপর চাপাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/3Qv7w
দলের মধ্যে কোণঠাসা হচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
ছবি: picture-alliance/empics/P. Byrne

বড়ই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন৷ ক্ষমতায় আসার পর তাঁকে শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটিশ সংসদে বিরোধী ও বিদ্রোহী পক্ষ এবং আদালত সামাল দিতে হচ্ছিল৷ টোরি দলের মধ্যে বিপুল সমর্থন পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় অন্তত অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের আশঙ্কা ছিল না৷ এবার মন্ত্রিসভা ও সংসদীয় দলের মধ্যে তীব্র অসন্তোষের ফলে ঠিক সেটাই ঘটতে চলেছে বলে আশঙ্কা বাড়ছে৷ বুধবার দ্য টাইমস সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলে মন্ত্রিসভা ও সংসদীয় দলের অনেক সদস্য পদত্যাগ করতে চলেছেন৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে দ্য টাইমস এই দাবি করেছে৷

দলের মধ্যে সত্যি এমন বিদ্রোহ ঘটলে বরিস জনসনের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা বড় ধাক্কা খেতে পারে৷ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যে কোনো মূল্যে ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করে আগাম নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থনের আশায় রয়েছেন তিনি৷ কিন্তু দলের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করলে নির্বাচনে সাফল্য অনিশ্চিত হয়ে উঠবে৷ বিরোধীদের মধ্যে বেড়ে চলা ঐক্যও টোরি দলের জয়ের সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে পারে৷

এদিকে আর মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে ব্রেক্সিট কার্যকর করার সম্ভাবনাও কমে চলেছে৷ মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল-এর সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর শেষ মুহূর্তে বোঝাপড়ার আশা কার্যত ছেড়ে দিয়েছে৷ দফতরের এক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ম্যার্কেল নাকি এমন উত্তর আয়ারল্যান্ড সম্পর্কে এমন দাবি করেছেন যা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ ‘গোপন' এই সংলাপ সম্পর্কে জার্মান চ্যান্সেলরের দফতর এখনো মুখ খোলে নি৷ তবে জার্মান সংসদে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির প্রধান নর্বাট ব়্যোটগেন এক টুইট বার্তায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যে জার্মানির অবস্থানে কোনো রদবদল ঘটে নি৷ শুরু থেকেই জনসনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে চুক্তির সম্ভাবনা অবাস্তব ছিল৷ তা সত্ত্বেও ইইউ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে৷ এমন পরিস্থিতির জন্য অন্যদের দায়ী করা মোটেই ‘ফেয়ার প্লে' নয়৷

কূটনৈতিক শিষ্টাচারের তোয়াক্কা না করে ইইউ সরকারগুলির পরিষদের প্রধান ডোনাল্ড টুস্ক সরাসরি বরিস জনসনের তীব্র সমালোচনা করেছেন৷ এক টুইট বার্তায় তিনি জনসনের উদ্দেশ্যে দোষ চাপানোর ‘বোকা' খেলা ছেড়ে ব্রিটেন ও ইউরোপের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবার ডাক দিয়েছেন৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তাঁর সরাসরি প্রশ্ন, ‘‘আপনি চুক্তি চান না, ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়াতে চান না, ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে চান না, কী চান আপনি?''

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রধান ডাভিড সাসোলি আরও এক ধাপ এগিয়ে বরিস জনসনের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন৷ মঙ্গলবার লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি বলেন, ৫ দিন আগে জনসন ইইউ মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে-র কাছে যে প্রস্তাব পেশ করেছেন তাঁর আইডিয়া যদি শুধু সেটুকুর মধ্যেই সীমিত হয়, তার অর্থ জনসন আদৌ কোনো চুক্তি চাইছেন না৷

এমন নেতিবাচক পরিবেশ সত্ত্বেও ব্রাসেলসে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে জোরালো আলোচনা চলছে৷ আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকরের সঙ্গে বরিস জনসনের টেলিফোন সংলাপের পর সে দেশের  পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন কোভেনি শেষ মুহূর্তে বোঝাপড়া সম্পর্কে আশা প্রকাশ করেছেন৷

এসবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)