নিজের মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন হতে পারে, সেটা জানে লফনার
১১ জানুয়ারি ২০১১আদালতে কীভাবে হাজির হল লখনার
পরণে কয়েদির পোষাক, হাত বাঁধা হাতকড়ায়, মাথা পরিষ্কার করে কামানো আর মাথার বাঁদিকে সদ্য একটা কাটার দাগ৷ সেখানে সামান্য রক্ত লেগে আছে৷ চোখের দৃষ্টি অস্বাভাবিক আর মুখে অর্থহীন হাসি৷ এভাবেই সোমবার অ্যারিজোনার ফিনিক্সের আদালতে হাজির হয়েছিল গত শনিবার এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ছয়জনের হত্যকারী জেরড লফনার৷ টুসন শহরের এক সুপারমার্কেটে আয়োজিত কংগ্রেস সদস্যা গাব্রিয়েল গিফোর্ডের বক্তৃতাসভায় ঢুকে গিফোর্ডের মাথায় গুলি করেছিল এই লফনার৷ তারপর এক নয় বছরের বালিকা, এক বিচারক সহ মোট ছয়জনকে খুন করে সে৷ আহত হন ১৫ জন৷ সোমবার মিনিট তেরোর শুনানির সময়ে কয়েকবার মাইক্রোফোনের দিকে ঝোঁকা ছাড়া আর কিছুই করেনি সে৷ বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে, সে জানে গুলি চালানোর অপরাধে তার মৃত্যুদন্ড হতে পারে৷ যাবজ্জীবন কারাবাসও সম্ভব৷
মানসিক ভারসাম্য কী সত্যিই নেই লখনারের
শনিবারের হত্যাকান্ডের ঘটনবার পর থেকে একথা বারবার শোনা গেলেও সে প্রসঙ্গ সোমবার ওঠেনি ফিনিক্সের আদালতে৷ হত্যা এবং হত্যার চেষ্টার মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ মার্কিন আইন বিভাগ লফনারের মৃত্যুদন্ড চেয়ে আবেদন করবে কিনা তাও এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়৷ তবে লখনারের জামিন হবে না বলে জানিয়েছে আদালত এবং আগামী ২৪ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে৷ লফনারকে সরকার থেকেই জুডি ক্লার্ক নামের এক উকিল দেওয়া হয়েছে৷ আদালতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল৷ লফনারকে ঘিরে ছিল বিশাল চেহারার ডজনখানেক মার্শাল বা বিশেষ কমান্ডো সেনা৷
কেমন আছেন গিফোর্ড
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, গিফোর্ডের শারীরিক অবস্থা এখন কিছুটা উন্নত৷ তাঁর কপালে গুলি করেছিল লখনার৷ মাথার মধ্যে রক্তক্ষরণ এখন অনেকটা স্বাভাবিক৷ যদিও তাঁকে কোমায় রাখা হয়েছে চিকিৎসার উদ্দেশ্যেই৷ এদিকে সোমবার টুসনের হতাহতদের স্মরণে দেশজুড়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ওবামা৷ হোয়াইট হাউজ থেকেই সেই নীরবতা পালনের সূত্রপাত করেন তিনি৷ সে সময়ে টুসনের জনজীবন সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যায় নি৷ তবে বহু জায়গাতেই ছোট ছোট দলে শহরবাসীদের যোগ দিতে দেখা গেছে নীরবতা পালন করতে৷ ওবামা কয়েকদিনের মধ্যেই টুসনে যাবেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ সূত্র৷ তবে সব মিলিয়ে ব্যাপারটাকে মনোবিকলনের কারণে ঘটা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে ব্যাখ্যা করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷ যদিও এই হত্যাকান্ডের নেপথ্যে অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম