1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারী চিকিৎসককে তার স্বামী হত্যা করেছেন: ব়্যাব

১২ আগস্ট ২০২২

ঢাকার পান্থপথের আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাইম সিদ্দিকীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় স্বামী রেজাউল করিম রেজাকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব শুক্রবার জানিয়েছে, তারা দুইবছর আগে গোপনে বিয়ে করেছিলেন৷

https://p.dw.com/p/4FSMl
প্রতীকী ছবিছবি: Getty Images

কিন্তু রেজার সঙ্গে অন্য নারীর সম্পর্কের কথা জান্নাত জেনে ফেলায় তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হচ্ছিল৷ এর জের ধরে জন্মদিন উদযাপনের কথা বলে ১০ আগস্ট স্ত্রীকে নিয়ে পান্থপথের ফ্যামিলি অ্যাপার্টমেন্ট হোটেলে ওঠেন রেজা৷

র‌্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, রেজা হোটেলে জান্নাতকে গলা কেটে হত্যার কথা ‘স্বীকার করেছেন'৷ খবর ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের৷

বুধবার রাতে হোটেলের ৩০৫ নম্বর কক্ষ থেকে ২৭ বছর বয়সি জান্নাতের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ৷

মগবাজারের কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে গাইনি বিষয়ে একটি কোর্সে করছিলেন জান্নাত৷ রেজা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করছিলেন৷

তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছিল জান্নাতের পরিবার৷ রেজাকে আসামি করে বৃহস্পতিবারই একটি মামলা দায়ের করেছিলেন জান্নাতের বাবা৷

ছায়া তদন্তে নেমে হোটেলের সিসি ক্যামেরার ভিডিও, মোবাইল ফোনের কল লিস্ট ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকার একটি মেস থেকে ৩১ বছর বয়সি রেজাকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র‌্যাব৷

শুক্রবার র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে ওই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন৷

রেজাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে ফেসবুকে পরিচয় থেকে দুজনের পরিচয় হয় এবং পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে৷ ২০২০ সালের অক্টোবরে তারা পরিবারের অগোচরে কাজী অফিসে বিয়ে করে ফেলেন৷

‘‘তারা স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে থাকতেন৷ এর মধ্যে একাধিক নারীর সাথে রেজার সম্পর্ক গড়ে উঠে৷ বিষয়টি জানতে পেরে জান্নাত আলাপের মাধ্যমে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন৷

‘‘এ নিয়ে তাদের মাঝে বিভিন্ন সময় বাগবিতণ্ডা হতো তাই রেজা এক পর্যায়ে তার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে জান্নাতকে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন৷’’

রেজা র‌্যাবকে বলেছেন, ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ করেছেন তিনি৷ এমবিএ চলাকালে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন৷ পরে একটি বেসরকারি ব্যাংকেও চাকরি করেন কিছুদিন৷ সর্বশেষ গত জুন মাসে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন৷

খন্দকার আল মঈন বলেন, জান্নাতের জন্মদিন উদযাপনের কথা বলে ১০ আগস্ট সকালে তাকে নিয়ে পান্থপথের ফ্যামিলি অ্যাপার্টমেন্ট হোটেলে ওঠেন রেজা৷ স্ত্রীকে খুন করার উদ্দেশ্যে ব্যাগে করে তিনি ছুরি নিয়ে যান৷

‘‘সেখানে অন্য নারীর সঙ্গে রেজার সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়৷ এক সময় রেজা তার ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে জান্নাতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন৷ পরে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে তিনি গোসল করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হন৷ তারপর জান্নাতের  মোবাইল ফোন নিয়ে বাইরে থেকে ওই কক্ষে তালা দিয়ে চলে যান৷’’

র‌্যাব বলছে, হোটেল থেকে বেরিয়ে রেজা প্রথমে মালিবাগে তার বাসায় যান৷ সেখান থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে একটি হাসপাতালে যান৷ ধস্তাধস্তিতে তার হাত কেটে গিয়েছিল, সেখানে সেলাই করে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন৷ পরে আরামবাগ থেকে বাসে করে চট্টগ্রামে চলে যান৷

এদিকে রেজা না ফেরায় হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়৷ বুধবার রাতে পুলিশ গিয়ে ওই ঘরে জান্নাতের গলা কাটা লাশ পায়৷

চট্টগ্রাম থেকে রেজাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব৷ র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, ‘‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেজা তার স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন৷’’ হত্যাকাণ্ডের সময় রেজার পরনে থাকা রক্তমাখা গেঞ্জি, মোবাইল ও ব্যবহৃত ব্যাগ এবং জান্নাতের মোবাইল উদ্ধার করার কথাও জানানো হয়েছে৷

এনএস/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)  

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য