1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারী অধিকার নিয়ে তালেবানের অবস্থান

১৮ আগস্ট ২০২১

তালেবানের আফগানিস্তানে নারীর অধিকার কতটা রক্ষা পাবে? সাংবাদিক বৈঠকে উত্তর স্পষ্ট করলেন না তালেবান মুখপাত্র। তবে নরম মনোভাবের ইঙ্গিত দিলেন।

https://p.dw.com/p/3z6YP
তালেবান
ছবি: Rahmat Gul/AP Photo/picture alliance

পূর্ববর্তী তালেবান শাসনে আফগানিস্তানে নারীর অধিকার সুরক্ষিত ছিল না। এমনই মনে করেন বিশ্বের অধিকাংশ মানবাধিকার কর্মী। এবারেও কি নারীদের প্রতি একইরকম ব্যবহার করবে তালেবান প্রশাসন? কাবুল দখলের পর তালেবানের প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে বার বার ফিরে এসেছে সেই প্রশ্ন। উত্তরে তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, ''শরিয়া আইনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নারী অধিকারের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে।''

মুজাহিদ জানিয়েছেন, নারীদের পড়াশোনা এবং কাজের অধিকার দেওয়া হবে। কিন্তু সেই অধিকার শরিয়া আইন মেনেই দেওয়া হবে। পাশাপাশি তার বক্তব্য, আগামী দিনে আফগান সমাজে নারীদের অবস্থান যথেষ্ট সক্রিয় হবে।

সাংবাদিক সম্মেলনেই নারী অধিকারের বিষয়ে একাধিক প্রশ্ন করা হয় মুজাহিদকে। নারীদের কতদূর পর্যন্ত পড়াশোনা করতে দেওয়া হবে, কী কী কাজ করতে দেওয়া হবে, বাড়ির বাইরে একা বেরতে দেওয়া হবে কি না-- এমন বহু প্রশ্ন সামনে আসে। মুজাহিদ জানান, এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা তিনি করতে পারবেন না। আগামী দিনে প্রশাসন এ বিষয়ে তাদের নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত জানাবে। এক নারী সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নারীরা সাংবাদিকতা করতে পারবেন কি না। তাকেও একই উত্তর দেন মুজাহিদ।

তবে মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনের আগে সংবাদমাধ্যমকে এক তালেবান নেতা জানিয়েছিলেন, সরকারে নারী প্রতিনিধিদের কথাও বিবেচনা করছে তালেবান।

নারী অধিকারনিয়ে তালেবানের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আফগান সমাজে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বিবিধ আলোচনা শুরু হয়েছে। কোনো কোনো নারী অধিকার কর্মীর বক্তব্য, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যে তালেবান সরকার ছিল, তারাও শরিয়া আইনের কথা বলতো। সেখানে দশ বছরের বেশি বয়সের মেয়েদের স্কুলে যেতে দেওয়া হতো না। কোনোরকম বাইরের কাজে তাদের অংশ নিতে দেওয়া হতো না। পুরুষ সঙ্গী ছাড়া রাস্তায় বের হতে দেওয়া হতো না। বোর্খা পরা বাধ্যতামূলক ছিল। তালেবান এবারেও জানিয়েছে, শরিয়া আইন মেনেই নারী অধিকারের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। ফলে আগের চেয়ে বিশেষ কোনো পরিবর্তন হবে না বলেই তারা মনে করছেন।

এর বিপরীত অভিমতও আছে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের ধারণা, তালেবান আফগান সমাজ এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের মন পেতে চাইছে। ফলে আগের মতো ততটা অনমনীয় মনোভাব তারা দেখাবে না। নারী অধিকারের ক্ষেত্রেও বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। সে কারণেই তারা বলছে, প্রশাসনেও নারীদের প্রতিনিধিত্বের কথা তারা ভাবছে। বস্তুত, স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে তালেবান নারীদের ব্যবহার করতে পারে বলে অনেকেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন।

আফগান সমাজেও তালেবানের বক্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কোনো কোনো নারী মনে করছেন, পরিস্থিতির বদল হবে না। আগের মতোই নারীদের উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, পরিস্থিতি অন্তত আগের জমানার মতো হবে না।

আফগান মুখপাত্র স্পষ্টই জানিয়েছেন, নারী অধিকারের বিষয়টি দ্রুত স্পষ্ট হবে। সরকার গঠন হলেই এ বিষয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশ জারি হবে।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, আল জাজিরা)