1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সতর্ক করতে প্রচারে ইমামেরা

পায়েল সামন্ত ভারত
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পশ্চিমবঙ্গে নাগরিকপঞ্জি তৈরির সরকারি কোনো ঘোষণা না হলেও এ নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে জনমানসে৷ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে সচেতন করতে এগিয়ে এসেছে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সংগঠন৷

https://p.dw.com/p/3P4C1
Indien Moscheen von Kolkata
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

অসমে নাগরিকপঞ্জির কাজ চলার সময় প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে জল্পনা শুরু হয়েছিল৷ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই রাজ্যেও অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হবে, এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিজেপি নেতারাই৷ সেই জল্পনা গতি পেয়েছে অসমের নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের পর৷ তবে এখন তা কার্যত চাপা আতঙ্কের চেহারা নিয়েছে, বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে৷ সীমান্তের জেলাগুলির মানুষ চিন্তায় আছেন, এই রাজ্যে পঞ্জি তৈরি হলে তাদের নাম থাকবে তো?

এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে সজাগ করতে এগিয়ে এসেছে অল ইন্ডিয়া ইমাম-মুয়াজ্জিন অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন৷ বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদে প্রচার শুরু করেছে এই সংগঠন৷ মসজিদের মাইক থেকে জনগণকে সতর্ক করতে বার্তা দেওয়া হচ্ছে৷ বলা হচ্ছে, কী কী নথিপত্র হাতে মজুত রাখতে হবে নিজেদের ভারতীয় প্রমাণ করার জন্য৷ কোন কোন পরিচয়পত্র হাতে রাখা জরুরি৷ একই সঙ্গে চলছে প্রচারপত্র বিলি৷অটো বা রিকশায় চেপে সংগঠনের সদস্যরা মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছেন প্রচারপত্র৷ তাতে বিশদে লেখা আছে, নাগরিকপঞ্জিতে নাম তোলার জন্য কী করতে হবে৷

প্রচারপত্রে লেখা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ মধ্যরাতে প্রকাশিত তালিকায় পূর্বপুরুষের নাম থাকলে এখনকার নাগরিকদের প্রমাণ দিতে হবে যে তিনি সেই ব্যক্তির উত্তরসূরি৷ এ জন্য একগুচ্ছ পরিচয়পত্রের তালিকা দেওয়া হয়েছে— ভূমি ও ভাড়াটে সংক্রান্ত পড়চা, নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র, ভারতীয় পাসপোর্ট, জীবন বিমার নথি, স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণ ইত্যাদি৷ উদ্বাস্তু হলে অন্য দেশ থেকে ভারতে আসার পর নথিভুক্ত হওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে৷ সরকারি শংসাপত্র, জন্মের প্রমাণপত্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাগজ এ ক্ষেত্রে কাজে লাগবে৷

আব্দুর রাজ্জাক

ইমামদের সংগঠনের আশঙ্কা, একটি বিশেষ সম্প্রদায় এই নাগরিকপঞ্জির ফলে সমস্যায় পড়তে পারে৷ ইমাম-মুয়াজ্জিন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মহম্মদ শফিক কাশিমি ডয়চে ভেলেকে বলেন, আমাদের দেশে যত অনুপ্রবেশকারী আছে, সরকার তাদের চিহ্নিত করুক৷ তবে সেজন্য একটি ধর্মের মানুষদের হয়রান করা ঠিক নয়৷ কিন্তু, অসমে হিন্দুদের নামও বাদ পড়েছে পঞ্জি থেকে৷ কাশিমির বক্তব্য, আমি বলছি না, একটা সম্প্রদায়কেই নিশানা করছে৷ তবে যদি মন্ত্রীরা বলেন, হিন্দুদের প্রমাণপত্র না থাকলে করিয়ে দেওয়া হবে, তাহলে আমাদের মনে কি চিন্তা আসবে না? তাই আমাদের সংগঠন মুসলমানদের প্রমাণপত্র হাতে রাখতে বলছে, নাগরিকপঞ্জি পশ্চিমবঙ্গে হোক বা না হোক৷ জেলায় জেলায় প্রচার চালানো হচ্ছে৷ তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় সরকারকেও অনুপ্রবেশের দায়িত্ব নিতে হবে৷ বিএসএফ থেকে অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থা কেন অনুপ্রবেশ রুখতে পারছে না, সেটাও দেখা দরকার৷

মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রচারের দায়িত্ব রয়েছে ইমাম-মুয়াজ্জিন সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের উপর৷ তাঁর বক্তব্য, ঝড় আসতে পারে এটা আঁচ করে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি৷ সবাইকে সতর্ক করছি৷ এখনো কোনো ঘোষণা না হলেও ঝড় মোকাবিলার জন্য তৈরি থাকছি৷এখানে বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীরা আছেন বহু বছর৷ তাই আমাদের দেশের নাগরিকদের প্রমাণপত্র হাতে রাখার কথা বলছি রজ্জাক জানান, ঈদের সময় এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল৷ প্রতি শুক্রবার জুম্মার নমাজের পর নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আলোচনা করা হয়৷

অসমের পঞ্জিতে হিন্দুদের নাম থাকলেও মুসলমানদের উদ্বেগ, তাদের বেছে বেছে তালিকার বাইরে রাখা হবে৷ভারতের সংখ্যাগুরুরা তাদের পাশে আছেন, এ কথা বলছেন ইমামরাই৷রজ্জাকের বক্তব্য, হিন্দুরা আমাদের উদ্যোগকে সমর্থন করছেন আমরা মিলেমিশে থাকি, বিচ্ছেদ চাই না আমরা বিদেশ থেকে আসিনি এখানে জন্মেছি, এই মাটিতেই যেন মৃত্যু হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য