নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিতর্ক কেন
ভারতের সংসদে পেশ হলো নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। পেশ করলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। উত্তাল সংসদ। প্রশ্ন উঠছে, আদৌ কি এই বিল সংবিধান সম্মত? দেখে নেব কেন এই বিতর্ক?
নাগরিকত্ব আইন
১৯৫৫ সালে ভারতের সংসদে পাশ হয় নাগরিকত্ব বিল। সেখানে বলা হয়, বিদেশিরা যদি এ দেশের নাগরিক হতে চান, তা হলে অন্তত ১১ বছর এ দেশে বসবাস করতে হবে। নাগরিকত্ব আইনে ধর্মের কোনো উল্লেখ ছিল না।
সংশোধনী বিল
বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরেই নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনের প্রসঙ্গটি তোলে। ২০১৬ সালে তারা প্রথম নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল তৈরি করে। সেখানে পুরোনো আইনে বেশ কিছু সংশোধনের কথা বলা হয়।
সংশোধনে ধর্ম
নরেন্দ্র মোদী সরকার সংসদে যে বিল পেশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে আগত হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান, চাকমা, জৈনদের এ দেশে শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া হবে। এবং তাঁদের নাগরিকত্বের অধিকার দেওয়া হবে।
বিজেপির ব্যাখ্যা
বিজেপি-র বক্তব্য হল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে অত্যাচারিত হয়ে সে দেশের সংখ্যালঘুরা ভারতে আসেন। তাই তাঁদের দ্রুত এ দেশে নাগরিকত্ব দিতে চায় সরকার। ১১ বছর নয়, ৫ বছর তাঁরা এ দেশে থাকলেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ধর্ম কেন
বিরোধীদের প্রশ্ন, ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে এভাবে ধর্মের উল্লেখ করে আইন তৈরি কি আদৌ সম্ভব? প্রতিবেশী দেশ থেকে কেউ এ দেশে নাগরিকত্ব চাইলে ভারত অবশ্য়ই তাঁকে সাহায্য় করবে। কিন্তু তার সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই।
সংসদ উত্তাল
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করার পরেই সরব হয় বিরোধী পক্ষ। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ধর্মের ভিত্তিতে এ ভাবে আইন সংশোধন বিরোধীরা মেনে নেবে না। এর ফলে মুসলিম এবং অমুসলিমদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে। যা ভারতের সংবিধান বিরোধী।
এরপর কি এনআরসি
বিরোধীদের প্রশ্ন, এরপর কি গোটা দেশে আসামের মতো জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি করবে সরকার? গোটা দেশ জুড়ে তৈরি হবে অসংখ্য ডিটেনশন ক্যাম্প?