1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নাইজিরিয়ায় জাতিগত সংঘাতে কয়েকশ’ মানুষ নিহত

৮ মার্চ ২০১০

জাতিগত সংঘাতে উত্তপ্ত নাইজিরিয়া৷ রবিবার কয়েকটি গ্রামে বাড়ি-ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতকারীরা৷ এছাড়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে কয়েকশ’ মানুষ৷ নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু৷

https://p.dw.com/p/MMZx
জাতিগত দাঙ্গার কারণে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ (ফাইল ছবি)ছবি: AP

পরিস্থিতি সামাল দিতে মধ্য-নাইজিরিয়া জুড়ে অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে৷ উত্তরের নগরী জস থেকেই মূলত এই দাঙ্গার শুরু৷ দিনের প্রথম দিকেই ডোগো নাহাওয়া গ্রামে সহিংসতায় কমপক্ষে ১২২ জন নিহত হয়৷ পরে প্ল্যাটো রাজ্যের অন্যান্য অংশেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে৷ এছাড়া রাটসাট এবং জট গ্রামেও বেরোম জাতিসত্ত্বার মানুষদের কয়েক ডজন বাড়ি-ঘরে আগুন লাগানো হয়৷ প্ল্যাটো রাজ্যের তথ্য কমিশনার গ্রেগরি ইয়েনলঙ জানান, রবিবারের দাঙ্গায় তিন শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে৷

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশটির ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপ্রধান গুডলাক জোনাথান নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন৷ এছাড়া এই সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে ব্যাপক অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ প্ল্যাটো রাজ্য সরকারের উপদেষ্টা ডান মানইয়াং জানিয়েছেন, ঐ প্রদেশ এবং এর আশপাশে নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক প্রহরায় মোতায়েন রাখা হয়েছে৷ বিশেষ করে ভ্রাম্যমাণ খুনীদের তৎপরতা ঠেকাতেই এই বিশেষ ব্যবস্থা৷

অবশ্য, এই দাঙ্গার শিকার নিরীহ মানুষ ফুলানি জনগোষ্ঠীর সন্ত্রাসী হামলায় ভয়াবহ রক্তপাতের ঘটনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের নির্লিপ্ততাকে দায়ী করছে৷ ডোগো নাহাওয়া গ্রামের পিটার গায়াং বলেন, কয়েক ঘণ্টা ধরে বাধাহীনভাবে এই হত্যাকাণ্ড চলেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘ভোররাত ৩ টা থেকে শুরু হয়ে ভোর ৬ টা পর্যন্ত দাঙ্গা চলছিল৷ ঘন ঘন গুলির আওয়াজ শোনা গেছে৷ অথচ কোন পুলিশ সদস্যকে সেখানে দেখা যায়নি৷'' তিনি আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আমাদের আর কোন আস্থা নেই৷ উল্লেখ্য, গায়াং রবিবারের দাঙ্গায় তার স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে হারান৷

স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরা এই দাঙ্গার জন্য ফুলানি জনগোষ্ঠীকেই দায়ী করছেন৷ গত মাসে তাদের উপর বেরোম জনগোষ্ঠীর সদস্যদের হামলার প্রতিশোধ নিতেই হামলা চালিয়েছে ফুলানি গোষ্ঠীর সদস্যরা, এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে৷ জাতিগত সহিংসতার পর রাটসাট গ্রাম ঘুরে এসে জস নগরীর ‘লিগ ফর হিউম্যান রাইটস' এর প্রধান শামাকি গ্যাড পিটার বলেন, ‘‘হামলাকারীরা যেভাবে একসাথে আক্রমণ করেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, এটা পূর্ব-পরিকল্পিত আক্রমণ৷'' এই দাঙ্গার ফলে শতাধিক মানুষ প্রাণ হারানো ছাড়াও আরো বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ সহিংসতার ১২ ঘণ্টা পরও বাড়ি-ঘর এবং শস্য ভাণ্ডারসমূহে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে৷

স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী শেহু সানি জানান, যেসব মানুষ বাড়ি-ঘর থেকে জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যাচ্ছিল, তাদেরকে পশুর খাঁচা এবং জাল দিয়ে আটকিয়ে ধরেছে হামলাকারীরা৷ প্রসঙ্গত, জস নগরীতে গত জানুয়ারি মাসে জাতিগত সহিংসতায় ৩২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে সরকারি সূত্রের খবর৷ তবে ঐ সহিংসতায় সাড়ে পাঁচ শ' জন নিহত হয়েছিল বলে দাবি বেসরকারি সূত্রের৷

প্রতিবেদক : হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা : অরুণ শঙ্কর চৌধুরী