1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নদী ভাঙনের শব্দ

সুমন শামস
২ অক্টোবর ২০১৮

শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জের উত্তর তারাবুনিয়ায় কীর্তিনাশার ভাঙনের শব্দের সাথে নড়িয়া এলাকার শতশত নারী পুরুষের কান্নার চাপা শব্দ মিলায়ে যাচ্ছে৷ ভয়ংকর কালো মেঘ ভাসছে নড়িয়ার কীর্তিনাশার আকাশে৷

https://p.dw.com/p/35iHa
ছবি: DW/M. Mamun

এখনো উজান থেকে নেমে আসা পানির তীব্র স্রোতে মিলিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় রাস্তা-ঘাট, দোকান-পাট, বাজার, মসজিদ-মন্দির, স্কুল-মাদ্রাসা, থানা, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ পুরাতন বসতবাড়ি৷

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বেশ কয়েকটি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসহ একটি লঞ্চঘাট ও ঘাট-সংলগ্ন বাজার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে৷ এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ জন পদ্মা নদীতে পড়ে যান৷ এদের অনেককেই স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন৷

এ ঘটনায় সাতজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে৷ তবে নিখোঁজের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও ফায়ার সার্ভিস, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন৷

পদ্মা নদীর করাল স্রোতে আরো ভেসে যাচ্ছে শরীয়তপুরের প্রায় ৪০০ বছরের দৃশ্যমান সভ্যতা৷ নদীপাড়ের গাছপালা, কৃষিজমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীর খরস্রোতা জলে৷ জলের গভীর থেকে মাটির তলদেশের ভাঙ্গনে খসে পড়ছে সবুজ-সুন্দর গ্রাম৷ মজবুত কংক্রিটের স্থাপনা ধীরে ধীরে কিভাবে জলের অতলে ডুবে যায় সেই ভয়াল দৃশ্য দেখলে আঁতকে উঠবেন যে কেউই৷

ভূতাত্ত্বিকদের মতে, আনুমানিক ২০-২২ কোটি বছর আগে এই অঞ্চলটি সমুদ্র গর্ভে নিমজ্জিত ছিল৷ হিমালয় থেকে ভেসে আসা পলি জমে স্তরের পর স্তরের দ্বারা গড়ে উঠেছে এই ভূখণ্ড৷ সেই থেকে আজও এই ব-দ্বীপকে লালন করে চলছে এই নদীগুলো৷ পলিমাটি দিয়ে গঠিত এই ব-দ্বীপ অঞ্চল বাংলাদেশে প্রতি বছরই বিস্তীর্ণ এলাকা নদী ভাঙনের শিকার হয়৷

প্রতি বছর এভাবে প্রায় ছয় হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয় আর ঘরবাড়ি, ফসলের জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় হাজার হাজার মানুষ৷ এ বছরও জুন মাস থেকেই অনেকগুলো জেলায় নদীভাঙন শুরু হয়েছে৷ পদ্মা-মেঘনা-যমুনা প্রধান নদ-নদী ছাড়াও কুশিয়ারা, ধরলা, তিস্তা, পায়রা, ডাকাতিয়া, করতোয়া, বড়াল, আড়িয়াল খাঁ, কর্ণফুলী, শঙ্খ নদীতেও বলতে গেলে সারা বছর ধরেই ভাঙন চলতে থাকে৷

গত পঁচিশ বছরে এই নিয়ে পাঁচবার মেঘনা নদীর ভাঙনের কবলে পড়লো ভেদরগঞ্জের উত্তর তারাবুনিয়ার নদী তীরবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দাদের বাড়ি-ঘর৷ প্রতি বছর এইভাবে শতশত বিঘা জমিসহ বাড়িঘর নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে৷ গত তিন মাসের মধ্যে পদ্মা নদী ভাঙনের কারণে প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে৷ প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার রাতারাতি নিঃস্ব হয়ে পথের ভিখারি৷

নদীগর্ভে সব হারিয়ে মানুষ এই অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে, এই পাড় ছেড়ে ঐ পাড়ে, ছুটতেই থাকে৷ ১৯৮৮ সালের বন্যা থেকে এপর্যন্ত বাংলাদেশের লক্ষাধিক মানুষ বারবার এই পদ্মা-মেঘনা-যমুনা নদী ভাঙনের মুখোমুখি হচ্ছে৷ সর্বহারা মানুষেদের অনেকেই গ্রাম ছেড়ে রাজধানী শহর এবং বিভিন্ন জেলা শহরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন৷ বিশেষ করে বিভাগীয় শহর এবং রাজধানী শহরের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে গেলে দেখা যায়, নদীভাঙা এলাকার হাজার হাজার অসহায় মানুষ সহায়-সম্বলহীন হয়ে জীবিকার তাগিদে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতি দিন৷ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের চারপাশের নদীর পাড়ে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ নদীর পাশে ময়লা আবর্জনা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেও সামান্য জায়গা পেলেই পলিথিন, চাঁটাই দিয়ে কোন রকমে বেঁচে থাকার প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা৷

এর প্রভাবে আদি বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে কঠিন রোদে পুড়ে ঘামে ভিজে হাতুড়ি চালাচ্ছেন এক মা৷ টায়ারের রাবার দিয়ে হাতের গ্লাভস বানিয়ে তালি দেয়া এক ছাতার নিচে বসে ভাঙছেন ইট৷ পদ্মার ভাঙনে ঢাকায় চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন ৫৫ বছরের এই নারী সুরাইয়া বেগম৷

স্থানীয় ভাষায় তিনি বলেন, ‘‘আমার বাবার বাড়ি ছিলো শরিয়তপুরের নড়িয়ায়৷ শ্বশুর বাড়িও ছিলো একই এলাকায়৷ আইজ থেইক্কা ২০ বছর আগেই নদী ভাঙনে আমার বাবার বাড়ি নিয়া গেছে৷ এইবার আমার শ্বশুরবাড়ি আর বাবার বাড়ির যা ছিল সব ভাঙা পড়ছে৷ এখন আমার আর স্থায়ী কোন ঠিকানা নাই৷ একটা মাইয়া, বিয়া দিছি৷ জামাই রিক্সা চালায়৷ আমার স্বামী নাই৷ কাজ না করলে খামু কী? এই জন্য এই ইট ভাঙার কাম করি৷ রোজ ২০০ টাকা পাই৷ কোনো রকমে জীবন চলে, বড় কষ্টে আছি বাবা!''

এই প্রতিবেদন লেখার আগেই পদ্মার নদী ভাঙনে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন নদীগর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে৷ বিলীন হতে যাচ্ছে এলাকার চারশ' বছরের প্রাচীন জনবসতি৷ পালটে গেছে এই এলাকার মানচিত্র, নদীপথের প্রবাহ৷

এই পরিস্থিতি সামলে ওঠা বেশ সময়ের ব্যাপার৷ তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই ভাঙণ প্রবণ নদীসমূহকে চিহ্নিত করে স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা করলে আগামীতে হয়ত এই ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে৷

হঠাৎ কেন এই সর্বগ্রাসী ভাঙন?

নড়িয়ার নদী ভাঙনের শিকার মানুষদের নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন নির্মাতা ও কবি জনাব সারোয়ার জাহান৷ তিনি বলছেন, ‘‘বর্তমান সময়ে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে জলবায়ু পরিবতর্ন চলছে৷ সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের উজানের দেশে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়েছে৷ সকল ব্যারাজ খুলে দিয়ে ভারত গঙ্গা নদীতে অতিরিক্ত ছেড়ে দিয়েছে৷ চীন কিন্তু উজানে স্রোত ছেড়ে দেয়ার আগেই ভারতকে অবগত করেছিল৷''

তাঁর অভিযোগ, ‘‘পরবর্তী সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে উভয় দেশ এক সাথে কাজ করার প্রস্তুতিও নিয়েছে৷ ভারত এই বিপুল পরিমাণ পানি এবার ফারাক্কা ব্যারাজ দিয়ে বাংলাদেশের ভেতর পদ্মা নদীতে ছেড়ে দেয়৷ যে কারণে শরীয়তপুরের নদী ভাঙনের কারণে বিশাল এ বিপর্যয় ঘটেছে৷''

এছাড়া নদীর বুক থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলন, নদী ভরাট করে দখল করার কারণে নদীর গতিপথের আচরণের পরিবর্তন ঘটেও ভাঙন আরো ভয়াবহ করে তুলছে বলে মনে করেন তিনি৷

ভাঙনপ্রবণ নির্দিষ্ট এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে সেখানে বসবাসরত পরিবারগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া এবং দ্রুত অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি৷

শরীয়তপুর জেলার উত্তর-পূর্বে জাজিরা, নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার একাংশ পদ্মার তীরবর্তী, পূর্ব-দক্ষিণে ভেদরগঞ্জের একাংশ ও গোসাইরহাট উপজেলা মেঘনার তীরে অবস্থিত৷ নড়িয়া ও সদর উপজেলার বুক চিড়ে বেরিয়ে গেছে কীর্তিনাশা নদী৷ জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত আড়িয়াল খাঁ নদ৷ এ সব নদী ও শাখা নদীসমূহে তীব্র পানির স্রোত রয়েছে৷

জাজিরা উপজেলার পশ্চিম ও পূর্ব নাওডোবা, পালের চর, বড়কান্দি, কুন্ডেরচর ও বিলাশপুর ইউনিয়ন, নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর, ঘড়িষার, চরআত্রা ও নওপাড়া ইউনিয়ন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা, চরভাগা ইউনিয়ন পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার সীমানা পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত৷

ভেদরগঞ্জ উপজেলার উত্তর তারাবুনিয়া, দক্ষিণ তারাবুনিয়া, আর্শিনগর, চরসেন্সাস, সখিপুর ইউনিয়ন, গোসাইরহাট উপজেলার আলাউলপুর, কোদালপুর কুচাইপট্টি ও নলমুড়ি ইউনিয়ন পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার সীমানা মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত৷

এছাড়া পদ্মা নদীর সুরেশ্বর পয়েন্ট থেকে শুরু হয়েছে ছোট পদ্মা-১৷ এই নদীটি কার্তিকপুর, চরাভাগা, চরকুমারিয়া, কোদালপুর, আলাউলপুর হয়ে জালালপুরের মধ্যে দিয়ে মেঘনা নদীতে মিলেছে৷ নদীটির দৈঘ্য ৩৫ কিলোমিটার৷

নীলঞ্জনা নদীর আলাউলপুরে বালুচরা, ডামুড্যা, ইদিলপুর, গোসাইরহাট ও হাটুরিয়া হয়ে বরিশালের হিজলা থানার সীমানায় মেঘনা নদীতে মিলেছে৷ নদীটির দৈর্ঘ্য ২৫ কিলোমিটার৷

এই নদীটি ঐতিহাসিকভাবে জয়ন্তিকা নদী নামেও পরিচিত৷ নদীটির শাখা নদী সাইখা নদী নাম ধারণ করে চাঁদপুরের হাইমচরের সীমানায় মেঘনা নদীতে গিয়ে মিলেছে৷ এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ কিলোমিটার৷

পদ্মা নদীর তীরবর্তী গৌরাঙ্গ বাজার থেকে শুরু হয়েছে ছোট পদ্মা-২৷ গৌরাঙ্গ বাজার, তারাবুনিয়ার স্টেশন বাজার ও সখিপুরের আনন্দ বাজার হয়ে চরসেনসাস ইউনিয়নের নরসিংহপুর ফেরিঘাটে মেঘনা নদীতে গিয়ে মিলেছে৷ এই নদীর দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার৷

পদ্মার দিয়ারা নাওডুবা থেকে বের হয়েছে ছোট পদ্মা-৩৷ এই নদীটি নাওডুবা, বিকে নগর, সেনের চর, বড়কান্দি (কাজীর হাট), লাউখোলা, গঙ্গানগর, খোরাতলা ও গোপালপুর হয়ে শিবচরে আড়িয়াল খাঁ নদে গিয়ে মিলেছে৷ নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার৷

অপরদিকে পদ্মা নদীর ওয়াপদা পয়েন্ট থেকে শুরু হয়েছে কীর্তিনাশা নদী৷ এই নদীটি নড়িয়া ও শরীয়তপুর সদর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মাদারীপুর জেলা শহরের কাছাকাছি আড়িয়াল খাঁ নদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে৷ দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫ কিলোমিটার৷

কীর্তিনাশার অপর একটি শাখা সদর উপজেলার মুন্সীরহাট থেকে শুরু হয়ে ডোমসার, শৌলপাড়া, জয়নগর ও রায়পুর হয়ে মাদারীপুরে আড়িয়াল খাঁর সঙ্গে মিলেছে৷ এ নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ কিলোমিটার৷

Shuman Shams Umweltaktivist
সুমন শামস, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, নোঙর বাংলাদেশছবি: Privat

আরও উল্লেখ্য, পদ্মা, মেঘনা, ছোট পদ্মা এবং কীর্তিনাশা নদীর ভাঙনে গত ৪০ বছরে বিলীন হয়েছে ২৫টি ইউনিয়নের ৮০টি গ্রাম৷ নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে ৭০ হাজার একর ফসলি জমি, শতাধিক শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান৷ বারবার নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হওয়ায় পরিবর্তন এসেছে জেলার মানচিত্রেও৷

নড়িয়া এলাকার পদ্মা নদীর পর এবার শুরু হয়েছে কুষ্টিয়া শিলাইদহ এলাকার পদ্মা নদীর ভাঙন৷ বর্তমানে ঐ এলাকায় ভাঙনে হুমকির মুখে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িও৷ পাবনা ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের মধ্যে পদ্মা এবং শরীয়তপুর এলাকার পদ্মা নদীর তীরের অসংখ্য মানুষ এখন গৃহহীন উদ্বাস্তু৷

ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে শাখা নদীগুলোর তলদেশ খনন করে স্বাভাবিক নাব্যতা ফিরিয়ে এনে শরীয়তপুরের প্রবহমান জলধারা সচল করাই হচ্ছে এই সঙ্কটের দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের সঠিক পথ৷ পদ্মা সেতু থেকে সুরেশ্বর পয়েন্ট পর্যন্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং পদ্মার নড়িয়া পয়েন্টে ড্রেজিং এর মাধ্যমে গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি৷

নদী-ভাঙন রোধ

কথায় আছে, ‘নদীর এক কূল ভাঙিয়া গেলে কি আর এমন যায় আসে, হাসিয়া হাসিয়া নদীর আর এক কূল ভাসে', অথবা, ‘নদীর এ কূল ভাঙে, ও কূল গড়ে'৷ কিন্তু মনে রাখতে হবে, যে তীর ভাঙে সেটা হচ্ছে আবাদী জমি, স্থায়ী জমি বা ‘কায়েমি জমি' আর বসত বাড়ি৷ কিন্তু এর বিনিময়ে গড়ে ওঠা যে জমি পাওয়া যায়, তা হচ্ছে বালুচর৷ নতুন জমির উৎপাদন ক্ষমতাও থাকে সামান্য৷

ভাঙন রোধে প্রচলিত সব ব্যবস্থার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, নদীর তীরে পাথর বা কংক্রিটের ব্লকের বর্ম পরিয়ে তীর রক্ষা করা এবং নদী শাসনের মাধ্যমে নদীর প্রবাহকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া৷

কিন্তু এ সব ব্যবস্থার বিরোধী প্রকৃতিবাদীরা৷ তাঁরা নদীকে তার আপন গতিতে চলতে দিতে বিশ্বাসী৷ এরই মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলো তাদের নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ ধরে রাখার চেষ্টা করছে৷ প্রকৃতির সাথে সমন্বয় করাটাই তাঁদের মতে মূল কথা৷ হল্যান্ডের মিউজ নদী, জার্মানির রাইন নদীর বেশ কিছু এলাকা প্রকৃতির কাছে ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷

তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন৷ নদীকে কেন্দ্র করেই এখানকার বেশিরভাগ মানুষের জীবন-জীবিকা৷ নদীতীরেই বাস করছে বেশিরভাগ মানুষ৷ তাই পরিবেশ-প্রকৃতি এবং নদীর ক্ষতি সাধন না করে কীভাবে মানুষ নদীর পাড়ে বসবাস করতে পারে, সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে আজীবন৷

আপনার কোনো মতামত থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য