নতুন রূপে খুলল টালা সেতু
৪৬৫ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছে পৌনে তিন কিলোমিটারের এই সেতু। খুলে দেওয়া হয়েছে সাধারণের জন্যেও।
স্বাস্থ্যপরীক্ষায় ফেল
২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়ে কলকাতার মাঝেরহাট ব্রিজ। ঠিক তার পরেই আগাম সাবধানতা অবলম্বন করে টালা সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়। ২০১৯ সালে পুজোর আগে ওই স্বাস্থ্যপরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিয়ে সরকারি সংস্থা রাইটস জানায়, টালা সেতু ভেঙে ফেলে নতুন নির্মাণ প্রয়োজন। সেতু ভেঙে ফেলার পক্ষেই সুপারিশ করেন সেতু বিশেষজ্ঞ ভি কে রায়নাও।
ব্রিজ ভাঙার সময়
ব্রিজ ভাঙার কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ব্রিজ ভাঙা শেষ করতে দুইমাস সময় লাগে। চার লেনের নতুন সেতুর দু’দিকে অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি করতে রেলের জমিতে থাকা ৩৮টি কোয়ার্টার ভাঙতে হয়েছে।
সেতুর উদ্বোধন
নতুন সেতুর নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হতে লাগল প্রায় আড়াই বছর। বৃহস্পতিবার সেই সেতু উদ্বোধন করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য
উদ্বোধন করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''সেতু গড়ার আগে পুরনো সেতু ভাঙতে হয়েছে আমাদের। তার জন্য চার মাস সময় নিয়েছে রেল। তা সত্ত্বেও অনেক তাড়াতাড়ি কাজটা শেষ হয়েছে।''
নতুন চেহারায় নতুন সেতু
আগের সেতুর চেয়ে নতুন সেতু চওড়া। দু’লেনের জায়গায় নতুন সেতুটি চার লেনের করা হয়েছে, এবং এই সেতুর ভারবহন ক্ষমতা আগের সেতুর তুলনায় অনেক বেশি। আগে ভারবহন ক্ষমতা ছিল ১৫০ টন। এখন তা কয়েক গুণ বেড়েছে।
নির্মাণের খরচ
টালা সেতু নির্মাণ-খরচ রাজ্য সরকারকেই বহন করতে হয়েছে। আগের ব্রিজ ভাঙার জন্য প্রায় ৯০ কোটি টাকা রেলকে দিতে হয়েছে। সেতু বানাতে খরচ হয়েছে ৪৬৫ কোটি টাকা।
উত্তর কলকাতার লাভ
টালা সেতু খুলে যাওয়ায় বরাহনগর বা সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজারের দিকে আসতে এখন আর পাইকপাড়া ঘুরে বেলগাছিয়া ব্রিজের যানজট পেরোতে হবে না। পুজোর আগে টালা সেতু খুলে যাওয়ার ফলে যানজটের ভোগান্তি কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
থাকছে নিষেধাজ্ঞা
সাড়ে সাতশো মিটার দৈর্ঘের এই সেতুতে প্রথম দিকে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সেতুতে এখনও বড় গাড়ি চলবে না। আপাতত একটি ফ্ল্যাঙ্ক খোলা রেখে শুধুমাত্র ছোট গাড়িই চলবে।
বাস চালানোর আবেদন
উদ্বোধনের পরেই টালা সেতুতে বাস চালানোর আবেদন জানিয়েছিল বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলি। সেই আবেদন জমা পড়েছিল পরিবহন দফতরে। কিন্তু পত্রপাঠ রাজ্য প্রশাসন তা খারিজ করে দিয়েছে।
নির্মাণ সংস্থা
সেতুটির নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা জানিয়েছে, চার লেনের ওই সেতু দু’টি ফ্ল্যাঙ্কে বিভক্ত। উদ্বোধনের পরে এখন শুধুই ডান দিকের ফ্ল্যাঙ্কটি সাধারণের ব্যবহারের জন্য খোলা থাকবে। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হতে পারে দু’টি ফ্ল্যাঙ্কই।