1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘‌ধরে রাখার মতো নেতা নেই’

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
৪ অক্টোবর ২০১৯

একসময় যেমন বাম দলগুলো থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়েছিল, এখন তেমনই তৃণমূল থেকে বিজেপি যাওয়ার ঝোঁক৷ কর্মীদের ধরে রাখার মতো নেতা নেই, বলছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক৷

https://p.dw.com/p/3QiRQ
Bangladesch Schauspielerin Anju Ghosh wird BJP Mitglied
ছবি: DW/P. Samanta

উৎসবের ঠিক মুখে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিলেন দাপুটে নেতা, সল্টলেকের মেয়র সব্যসাচী দত্ত৷ তিনি যে দল বদল করতে পারেন, এ খবর অনেকদিন আগে থেকেই ছিল৷ এখনো যেমন তৃণমূলের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নাম শোনা যাচ্ছে, যাঁরা ২০২১ বিধানসভা ভোটের আগেই নাকি শিবির বদল করতে পা বাড়িয়ে! তবে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির একদা ডান হাত বলে পরিচিত মুকুল রায়কে দলে পেয়ে বিজেপি রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ক্ষমতার বিচারে যতটা লাভ করেছিল, সব্যসাচী দত্তকে পেয়ে যাওয়াও তাদের পক্ষে ততটাই লাভের হবে বলে মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল৷

এখন বিজেপির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা এবং দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কলকাতায় দলের যে কর্মীসভা করবেন, সেখানেই সব্যসাচী বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে গুঞ্জন ছিল৷ এর প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের মহাসচিব এবং রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি জোর গলায় বলেছিলেন, মমতা ব্যানার্জির বিশ্বস্ত সৈনিকেরা একজনও দল ছাড়বেন না৷ আর সব্যসাচী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম ব্যঙ্গের সুরে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন, ‘‘‌সমুদ্র থেকে এক বালতি জল তুললেই কি আর ফেললেই কী!‌'' আর সেইসব শুনে সব্যসাচীর নাটকীয় প্রতিক্রিয়া, ‘‘‌এরপর আরো কী কী হয়, দেখুন!’’ ইঙ্গিত স্পষ্ট যে, আরো অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাবেন৷

প্রদীপ ভট্টাচার্য

প্রশ্ন উঠছে এখানেই যে, আট বছর আগে যেমন বামফ্রন্টের শরিক দলগুলো থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে চলে যাওয়ার হিড়িক পড়েছিল, আগামীতে রাজ্যে ফের পরিবর্তনের সম্ভাবনায় কি আরো এক দফা দলবদল আসন্ন?‌ বিজেপি নেতা এবং সাংগঠনিক কর্মীদের দাবি, তৃণমূল স্তরে ব্যাপক পরিবর্তন এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে, যার আঁচ পাচ্ছেন খোদ তৃণমূলনেত্রী নিজেও৷ কাজেই শুধু মুকুল রায় বা সব্যসাচী দত্তের মতো বড় মাপের সংগঠকরাই নন, সাধারণ কর্মী, সমর্থকরাও শিবির বদলাতে তৈরি৷ তা হলে কি রাজনৈতিক বিশ্বাস বা নীতি কোনো গুরুত্বই পাচ্ছে না মানুষের কাছে?‌

এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা, প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ দক্ষ সংগঠক এবং একদা পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি কিন্তু নীতিহীনতার থেকেও বেশি জোর দিলেন ব্যক্তিমানুষের জীবন ও জীবিকার স্বার্থে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ওপর৷

নিজের রাজনৈতিক জীবনের একটি ঘটনার উল্লেখ করলেন তিনি, যেখানে এক যুবক জাতীয় কংগ্রেসের পুরনো সমর্থক হয়েও দলের সভায় যেতে পারেন না, কারণ, তাঁকে ক্ষমতায় থাকা দলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে করে খেতে হয়৷ তবে একই সঙ্গে প্রদীপ ভট্টাচার্য মনে করছেন, যোগ্য নেতার অভাব আছে সব রাজনৈতিক দলেই, যে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ধরে রাখতে পারবেন৷ রাজনৈতিক পরিবেশে একটা সার্বিক স্লথতা এসেছে বলে প্রদীপবাবু মনে করছেন৷ একই সঙ্গে তিনি তুলনা টেনেছেন একদিনের ক্রিকেটের ‘‌স্লগ ওভার'‌–এর, যখন যে যেভাবে পারে, চালিয়ে খেলে!‌ নেতারাও তার কোনো ব্যতিক্রম নন৷  ‌‌