1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধরুন, এক সুবিশাল মাছি...

৭ এপ্রিল ২০১৭

‘মডেলিং’ করেন ইউলিয়া স্ট্যোস, অর্থাৎ মডেল বানান৷ এ কাজে তাঁর ‘মডেল’-রা কিন্তু মানুষ নয়, পোকামাকড়! ইউরোপের বিভিন্ন মিউজিয়ামের জন্য মশামাছিদের সুবিশাল সব মডেল তৈরি করেন ইউলিয়া৷

https://p.dw.com/p/2aqM4
Galerie - Insekten im Iran
ছবি: R.Rhamani Nejad

যা দেখে অন্যরা ভয় পান কিংবা নাক কুঁচকোন – সেই সব জীব: পোকামাকড়, মাছি-মশা, মাকড়শা৷ ওদিকে আবার একশ' গুণ বড়! পোকামাকড়দের যে কাছ থেকে এতো বড় করে দেখা যায় – সেটা ইউলিয়া স্ট্যোস-এর কল্যাণে৷ হামবুর্গের এই কস্টিউম ডিজাইনার কীটপতঙ্গের মডেল তৈরি করেন৷ বছর ১৫ আগে তিনি তাঁর পেশা বদলানোর সিদ্ধান্ত নেন৷ তাঁর ভাষ্যে, ‘‘আমার চিরকাল পোকামাকড়ে আগ্রহ৷ আমি গাঁয়ে মানুষ হয়েছি, খোলা জায়গায় খেলাধুলা করেছি আর এই ছোট্ট জীবগুলোকে দেখে মুগ্ধ হয়েছি৷ পিঁপড়ের ঢিবির সামনে বসে থেকে তাদের সেক্স আর ক্রাইম দেখেছি! এভাবেই ধীরে ধীরে আগ্রহ জন্মেছে৷''

ইউলিয়া স্ট্যোস যেটা করছেন, সেটা আগে ছিল না – তখন মিউজিয়ামগুলোয় খুব কমই কীটপতঙ্গের মডেল দেখা যেত৷ তাঁর কীটপতঙ্গের মডেলের ‘মডেল' হিসেবে ইউলিয়া বাস্তবিক পোকামাকড়গুলোকেই নেন৷ সেই সঙ্গে থাকে হামবুর্গের জুওলজিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে ধার করা নানা ফটো ও ক্লোজ-আপ৷ ইউলিয়ার তৈরি মডেলগুলো প্রকৃতির হুবহু নকল – যেমন এই এশিয়ান টাইগার মস্কিটো বা মশা, ইউলিয়া আপাতত যার মডেল তৈরি করছেন৷

ইউলিয়ার মতে ‘‘প্রত্যেকটি পোকামাকড়ের কিছু বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্য আছে, যেগুলি সঠিকভাবে মেনে চলতে হয়৷ হয়ত শরীরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় কিছু রোঁয়া আছে; অথবা টাইগার মশার ক্ষেত্রে তার পায়ে আর পেটে এই সব সাদা সাদা দাগ৷ আমি যখন মূর্তি গড়ি বা রং করি, তখন আমি নিজের খেয়ালখুশি মতো কাজ করতে পারি না – আমাকে তখন বাস্তবের সঙ্গে মিলিয়ে চলতে হবে৷''

সারা ইউরোপ থেকে ফরমায়েশ

ইতিমধ্যে সারা ইউরোপ থেকে মিউজিয়ামরা ইউলিয়ার কাছে কীটপতঙ্গের মডেল ফরমায়েশ দিতে শুরু করেছে৷ এমনকি ক্যানাডা থেকেও সম্প্রতি  একটি অর্ডার এসেছে৷ জার্মানির বিলেফেল্ড শহরের প্রকৃতি বিজ্ঞান সংগ্রহশালায় আপাতত ইউলিয়ার আটটি মডেল নিয়ে একটি প্রদর্শনী চলেছে৷ উপেক্ষিত জীবগুলিকে আরেকভাবে দেখানোর একটা ভালো সুযোগ – বলে মিউজিয়ামের অধ্যক্ষা মনে করেন৷

বিলেফেল্ডের প্রকৃতি বিজ্ঞান সংগ্রহশালার অধ্যক্ষা ইজোল্ডে ভ্রাজিদলো বললেন, ‘‘সকলেই হাতি চেনে, কাজেই তা দিয়ে লোক টানা যায় – কিন্তু মানুষজন এই মাছিটাকে চেনে না৷ কিন্তু তাদের পুরোপুরি বৈজ্ঞানিকভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেন বাইনোকুলার দিয়ে মাছিটাকে দেখা হচ্ছে: কি আশ্চর্য রকম সুন্দর! অথচ ক'জন লোক জানে যে, আমরা পোকামাকড় ছাড়া বাঁচতেই পারব না? শুধু আমরা নই, গোটা পরিবেশ প্রণালী স্বল্পসময়ের মধ্যে ভেঙে পড়বে৷''

প্রতিটি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম অংশ নিজের হাতে তৈরি করেন ইউলিয়া স্ট্যোস৷ এক একটি মডেলের দাম পড়ে আট থেকে ২৫ হাজার ইউরো৷ তাঁর কাজের মধ্যে দিয়ে ইউলিয়া দেখাতে চান যে, পোকামাকড় শুধু বিরক্তিকর নয়, তারা অপরূপ, সুন্দর৷ ইউলিয়া বললেন, ‘‘পোকামাকড় নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমি দেখেছি, এই ছোট্ট জীবগুলোর কত রকমের ক্ষমতা আছে৷ ওরা যেভাবে বেঁচে থাকে আর ওরা যা সব পারে – এক কথায় আশ্চর্য৷ এছাড়া আমার চোখে ওরা অতি সুন্দর৷ আমার তো মশাদেরও ভালো লাগে৷''

ইউলিয়া স্ট্যোসের মডেলগুলো দেখলে আপনিও সে কথা বলবেন৷

সিবিলে মায়ার-ব্রেটশ্নাইডার/এসি