ধনেপাতার অসাধারণ গুণের কথা
ধনেপাতা যে খাবারে স্বাদ আর রুচি বাড়ায় – তা কে না জানে? কিন্তু অতি পরিচিত এই পাতা যে নানারকম রোগের জীবাণু ধ্বংস করে, কোলেস্টরেল কমায়, এমনকি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে – সেটা জানেন কি?
রোগের জীবাণু ধ্বংস করে
ধনেপাতাকে বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো ‘রাঁধুনি পাতা’ হিসেবে ধরা হয়৷ এছাড়া এ পাতা হাজারো বছর ধরে ভেষজ উদ্ভিদ বা ওষুধ হিসেবেও কাজে লাগানো হচ্ছে৷ ক্যালিফোর্নিয়া এবং মেক্সিকোর একদল গবেষকের করা গবেষণা থেকে জানা যায় যে, ধনেপাতা খাবারের বিভিন্ন জীবাণুকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং ধনেপাতার তেল পেটে বায়ু হওয়া থেকে রক্ষা করে৷
ভিটামিন ‘কে’
ধনেপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘কে’, যা শরীরের হাঁড় গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে৷ শুধু তাই নয়, ধনেপাতায় থাকা ‘ফলিক অ্যাসিড’ শরীরের ফোলাভাব কমাতেও সাহায্য করে৷
বেশিদিন মনে রাখতে...
ক্যানাডায় করা এক গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, ভিটামিন ‘কে’ মানুষের স্মরণশক্তির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে৷ অর্থাৎ যে কোনো কথা মানুষকে বেশি দিন ধরে মনে রাখতে সাহায্য করে থাকে ভিটামিন ‘কে’৷ আর সেটাই রয়েছে আমাদের অতি পরিচিত ধনেপাতায়৷
ধনেপাতার গুণাগুণ
নিয়মিত ধনেপাতা খেলে তা কোলেস্টরেলের মাত্রা কমে, কমে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও৷ ধনেপাতায় রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন ‘সি’ ও আরো বেশ কয়েকটি ভিটামিন৷ ধনেপাতার নানা গুণের কথা জানিয়েছেন জার্মানির কাসেল শহরের পুষ্টিবিদ ডা. উভি সিডেনটপ৷
শুধু স্বাদ নয় কিন্তু!
ছোট মাছের চচ্চড়ি, মসুরের ডাল কিংবা আলু ভর্তায় ধনেপাতা না দিলে কি বাঙালিদের চলে? যদিও এই খাবারগুলো শরীরে শক্তি আনার চাইতে মুখের স্বাদটাই আনে বেশি, বিশেষ করে শীতকালের ঠান্ডায়৷ অবশ্য শুধু দক্ষিণ এশীয় রান্না নয়, ইউরোপীয় বহু রান্নাতেও রয়েছে ধনেপাতার ব্যবহার৷
ধনেপাতা মিশ্রিত স্যুপে যা আছে
এটা খেতে যেমন ভালো, তেমনই স্বাস্থ্যকর৷ এতে রয়েছে যথেষ্ট জিঙ্ক, প্রোটিন, ভিটামিন, ‘বি’, ‘সি’ আর আঁশ – যা পেশি ও নার্ভকে শক্ত করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও হজমশক্তি বাড়ায় এবং ত্বক সুন্দর করে৷ শীতকালে ধনেপাতা মিশ্রিত মুরগির স্যুপ অত্যন্ত উপকারী৷ শক্তিবর্ধক এই স্যুপকে ইহুদিরা নাকি ‘পেনিসিলিন’ বলে থাকেন৷
স্যুপের সহজ রেসিপি
দেড় কেজি মুরগির বুকের মাংস, মরিচ, পেঁয়াজ একটি, গাজর তিনটি, তেল এক চামচ, সামান্য লবণ, গোলমরিচ, দু’টি পেঁয়াজ পাতা, এক মুঠো ধনেপাতা৷ মুরগি ধুয়ে তেলে একটু ভেজে ৪৫ মিনিট সেদ্ধ করার পর, তাতে সব কিছু ঢেলে দিন৷ আরো ৩০ মিনিট সেদ্ধ করুন৷ এটা দেখতে ঠিক ছবির মতো লোভনীয় হবে, খেতেও হবে দারুণ সুস্বাদু৷ তাছাড়া এই স্যুপ শীতের নানা অসুখ-বিসুখ থেকে দূরেও রাখবে আপনাকে৷