1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দোররা মেরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হল হেনাকে

২ ফেব্রুয়ারি ২০১১

প্রথমে ধর্ষণের শিকার, পরে ৭০ থেকে ৮০টি দোররা৷ কিশোরী হেনার মৃত্যু নিশ্চিত করতে আর কোন কিছুর প্রয়োজন হয়নি৷ তার পরিবারের দাবি, ধর্ষণের শিকার হেনা নির্যাতনের পরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে৷ ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুর জেলায়৷

https://p.dw.com/p/1090C
ধর্মের নামে নারীদের উপর অত্যাচার কবে বন্ধ হবে?ছবি: AP

ঘটনার পরে স্থানীয় পুলিশ একজন ফতোয়াবাজসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে গত বুধবার৷ ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির সঙ্গে আলাপকালে শরীয়তপুরের পুলিশ প্রধান এ.কে.এম শহিদুর রহমান অবশ্য দাবি করেন, কিশোরী হেনা বেগমের ‘অবৈধ সম্পর্ক’ ছিল তার জ্ঞাতি ভাই মাহবুবের সঙ্গে৷

শহিদুর রহমান এএফপিকে বলেছেন, ‘অবৈধ সম্পর্ক’ প্রকাশের পরে গ্রাম্য সালিশে মেয়েটিকে ১শ'টি দোররা মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ যেখানে, সে অজ্ঞান না হওয়া পর্যন্ত তাকে দোররা মারা হয়৷ এরপরে সোমবারে হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরে হেনার মৃত্যু হয়৷

Klimawandel Bangladesch Überschwemmung Slum Haors
গ্রামবংলার ঐতিহ্যে এমন নির্মম ফতোয়াবাজদের স্থান নেইছবি: Sophie Tarr

বার্তা সংস্থা এএফপিতে প্রকাশিত পুলিশের এই বক্তব্যের সঙ্গে স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের অমিল রয়েছে৷ মৃতের বাবা দরবেশ খাঁ দৈনিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে ধর্ষণ করার পর কোনো বিচার পেলাম না৷ উল্টো মেয়েকে বিচারের মুখোমুখি হয়ে জীবন দিতে হলো৷’

এই ঘটনার পর হেনার বাবা বাদী হয়ে গ্রেপ্তার হওয়া চারজনসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন৷ ধর্ষক মাহাবুব ও অন্যান্য ফতোয়াবাজদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলেও জানিয়েছে দৈনিক প্রথম আলো৷ ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারেও একই তথ্যসহ সংবাদ প্রকাশ করেছে৷

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের প্রত্যন্ত রক্ষণশীল গ্রামাঞ্চলে ব্যভিচারের মতো ‘‘অপরাধ''-এর দায়ে মেয়েদেরকে জনসমক্ষে দোররা মারার এই সমস্ত সালিশ বসে, যদিও বাংলাদেশে এভাবে শাস্তি দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ৷

স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো জনস্বার্থ বিষয়ক বিতর্কিত কয়েকটি মামলা দায়ের করার পরে, গত জুলাই মাসে বাংলাদেশের হাইকোর্ট, ফতোয়া বা ধর্মীয় গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে শাস্তি বিধান করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে৷ একজন মহিলার বিরুদ্ধে তাঁর সৎ ছেলের সঙ্গে ঘুমানোর অভিযোগে তাঁকে ৪০ বার দোররা মারার পরে মহিলার মৃত্যু হয়৷ গত ডিসেম্বরের ঐ ঘটনার কথা উল্লেখ করে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত খুব কমই কার্যকর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ ঐ মহিলাকেও গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমেই শাস্তি দেওয়া হয়েছিল৷

এএফপি’র তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৫ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশের প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান এবং তাদের বেশিরভাগই গ্রামে বসবাস করেন৷

প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়