দেশপ্রেম বাড়াতে স্লোভাকিয়ার নতুন আইন নিয়ে বিতর্ক
৫ মার্চ ২০১০প্রত্যেক সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি সপ্তাহের শুরুতে জাতীয় সংগীত গাইতে হবে এমন একটি প্রস্তাব স্লোভাকিয়ার সংসদে গত সপ্তাহে অনুমোদন হওয়ার পরই তা নিয়ে দেখা দিয়েছে পক্ষে-বিপক্ষে নানা অভিমত৷ এই আইন অনুযায়ী, আগামী মাস থেকেই শুরু হবে দেশমাতৃকার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এই নতুন নিয়ম৷ এই আইনের আওতায় স্কুলের প্রত্যেকটি ক্লাসে জাতীয় প্রতীকসমূহ, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত এবং সংবিধানের ভূমিকা প্রদর্শন এবং পরিবেশনাসহ অন্যান্য দেশপ্রেম বিষয়ক শিক্ষা উপকরণ শিক্ষা কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে৷
এছাড়া রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক সংসদসমূহের প্রতিটি সভার শুরুতেই বাজাতে হবে জাতীয় সংগীত৷ সরকারি পদে নিয়োগের সময় কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের শপথ নিতে হবে৷ এমনকি আইনটির প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাবে ১৫ বছরের ছেলে-মেয়েরা যখন তাদের জাতীয়তার পরিচিতিমূলক সনদ গ্রহণ করবে তখনও তাদের দেশের প্রতি আনুগত্যের জন্য শপথ গ্রহণের কথা উল্লেখ ছিল৷ অবশ্য পরে এই অংশটুকু বাদ দেওয়া হয়৷
১৪ বছর বয়সি স্কুল ছাত্রের পিতা এডুয়ার্ড শেমলার বলেন, ‘‘প্রতি সোমবার আমার ছেলে জাতীয় সংগীত গাইবে না৷ এক সপ্তাহ সে অসুস্থ থাকবে৷ পরের সপ্তাহে তার স্কুল বাস দেরিতে পৌঁছানোর কারণে সে জাতীয় সংগীত শেষ হওয়ার পর স্কুলে পৌঁছবে৷'' পশ্চিম স্লোভাকিয়ার নোভাকির একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উপ-প্রধানশিক্ষক রোমান স্টাইনহুবল বলেন, শিশুদের দেশপ্রেম শিক্ষা দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন, কিন্তু সেটা প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের মাধ্যমে নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘নাগরিক শিক্ষা বিষয়ের মাঝেই আমরা জাতীয় প্রতীকগুলো শিখিয়ে থাকি, ইতিহাসের পাঠ্য পড়ানোর সময় আমরা বিখ্যাত স্লোভাকদের নিয়ে আলোচনা করে থাকি, যাতে করে তারা স্লোভাক হিসেবে গর্ব বোধ করতে পারে৷''
দেশটির জাতীয় সংসদে স্লোভাক ন্যাশনাল পার্টির সদস্য রাফায়েল রাফাজ অবশ্য আইনটির পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে বললেন, সকল স্লোভাককেই আরো দেশপ্রেমী হতে হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘শুধু শিশুরা নয়, জনগণের সবার আরো দেশপ্রেমী হওয়া প্রয়োজন এবং দেশপ্রেমের জন্য উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টি করা রাষ্ট্রের কর্তব্য৷ আমি মনে করি এই আইনের দ্বারা আমরা সেটি সফলভাবে করতে সক্ষম হয়েছি৷'' উল্লেখ্য, মধ্য ইউরোপের সাবেক এই কমিউনিস্ট রাষ্ট্রটি ২০০৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য পদ লাভ করে৷
প্রতিবেদক : হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক