1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দূরের গ্রহ সম্পর্কে আরও জানতে বিশেষ স্যাটেলাইট

১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

পৃথিবীর বাইরে অন্য গ্রহে কি প্রাণ আছে? বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিভিন্ন নক্ষত্রকে ঘিরে একের পর এক গ্রহ আবিষ্কারের ফলে এমন প্রশ্ন আরও গুরুত্ব পাচ্ছে৷ মহাকাশে এক টেলিস্কোপ এই গ্রহগুলি সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করছে৷

https://p.dw.com/p/3XXMb
ESA-CHEOPS-Weltraumteleskop
ছবি: ESA

বহুকাল ধরেই গ্রহের উৎপত্তি ও বিকাশ সম্পর্কে আমাদের ধারণার উৎস ছিল আমাদেরই সৌরজগত৷ কিন্তু সৌরজগতের বাইরে '৫১ পেগাসি বি' নামের প্রথম গ্রহ আবিষ্কারের সময়ই যাবতীয় তত্ত্ব নস্যাৎ হয়ে গেল৷

আমাদের বৃহস্পতির মতো গ্যাস ভিত্তিক গ্রহ সেটি৷ কিন্তু সেটির কক্ষপথ নক্ষত্রের এতই কাছে, যে মাত্র চার দিনেই বছর শেষ হয়ে যায়! অথচ আমাদের সৌরজগতে গ্যাসভিত্তিক গ্রহগুলি সূর্য থেকে অনেক দূরের কক্ষপথে বিচরণ করছে৷ কোনো গ্রহ যে দু-দুটি নক্ষত্র প্রদক্ষিণ করতে পারে, এমন দৃষ্টান্ত সম্পর্কেও আমরা জানতে পেরেছি৷

অকল্পনীয় দূরত্বের এই সব জগতের বৈচিত্র্য আমাদের কল্পনার ক্ষমতাও ম্লান করে দেয়৷ ৪,১০০টিরও বেশি গ্রহ এর মধ্যে আবিষ্কৃত হয়েছে৷

কিয়প্স নামের স্যাটেলাইট এই প্রথম এমন সব এক্সোপ্ল্যানেট পরীক্ষা করছে, যেগুলির আকার পৃথিবীর তুলনায় এক থেকে পাঁচ গুণ বেশি৷ সেটির মধ্যে এমন এক যন্ত্র রয়েছে, যেটি আলোর ক্ষুদ্রতম তারতম্যও পরিমাপ করতে পারে৷ ব্যার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো. ভিলি বেনৎস বলেন, ‘‘কিয়প্স আসলে এক ফলোআপ মিশন, আবিষ্কারের অভিযান নয়৷ অর্থাৎ লাখ লাখ নক্ষত্রের দিকে নজর দিয়ে আরও গ্রহ চিহ্নিত করা হচ্ছে না৷ কিয়প্স একটি করে নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করে৷''

কোনো এক্সোপ্ল্যানেট যখন নক্ষত্রের সামনে চলে আসে, কিয়প্স তখনই সেটি পর্যবেক্ষণ করে৷ এই কাজ করতে স্যাটেলাইটের দৃষ্টিপথে কোনো বাধা থাকলে চলবে না৷ আমাদের বায়ুমণ্ডল নক্ষত্র থেকে আসা আলো বিকৃত করে বলে সেগুলির ছবিও স্পষ্ট ওঠে না৷ সে কারণে রাশিয়ার সোয়ুজ রকেটে করে কিয়প্স মহাকাশে পাঠানো হয়েছে৷ পৃথিবী থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার উপরে একটি কক্ষপথে সেটি বিচরণ করছে৷ সেখান থেকে এই স্যাটেলাইট এমনভাবে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে পারে, যাতে সেটির টেলিস্কোপ সব সময় রাতের অন্ধকার পায়৷

মহাকাশের প্রায় সব অংশেই সেটি নজর দিতে পারে৷ কোনো গ্রহ সেটির নক্ষত্রের সামনে দিয়ে গেলে আলোর সামান্যতম পার্থক্যও শনাক্ত করতে পারে কিয়প্স৷ আমাদের পৃথিবীর মতো বড়ো কোনো মহাজাগতিক বস্তু নক্ষত্রের আলোর এক শতাংশেরও মাত্র একশো ভাগ ম্লান করে দেয়৷

কিয়প্স সেই মিটমিটে আলো এতটাই নিখুঁতভাবে পরিমাপ করতে পারে, যে গ্রহের আয়তন স্পষ্ট করে জানা যায়৷ জেনিভা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিদিয়ে কোয়েলস বলেন, ‘‘কিয়প্স গ্রহগুলি আবিষ্কারের পর ফলোআপ মিশন হিসেবে স্থির করা হয়েছে৷ অনেক গ্রহ পর্যবেক্ষণ করতে হবে৷ ভেবেচিন্তে লক্ষ্যবস্তুগুলি বেছে নিতে হবে৷ বেশিরভাগ কাজ ঠিকমতো করা হয়েছে৷''

ভূ-পৃষ্ঠ ও কক্ষপথের টেলিস্কোপের মাধ্যমে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ নক্ষত্র ও সেগুলির গ্রহ সম্পর্কে অনেক উল্লেখযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে৷

চিলির আটাকামা মরুভূমিকে একটি স্থাপনা প্রায় পাঁচ বছর ধরে মহাকাশে এক্সোপ্ল্যানেটের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ কিয়প্স আরও নিখুঁতভাবে সেগুলি পর্যবেক্ষণ করবে৷

কর্নেলিয়া বরমান/এসবি