দিল্লিতে পুরসভায় জিততে পারবেন কেজরিওয়াল?
রোববার দিল্লি পুরসভার নির্বাচন। গত ১৫ বছর ধরে পুরসভায় ক্ষমতা ধরে রেখেছে বিজেপি। এবার কি কেজরিওয়াল জিততে পারবেন?
১৫ বছর ধরে
গত ১৫ বছর ধরে বিজেপি দিল্লি পুরসভা দখল করে রেখেছে। আগে তিনটি আলাদা পুরসভা ছিল। এবার সবকটিকে মিলিয়ে দিয়ে একটা করা হয়েছে। ফলে দিল্লি পুরভোটে জয় পাওয়াটা এবার মোদী-শাহের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
কেজরিওয়ালের কাছে
দিল্লি বিধানসভায় বিজেপি-কে একাধিকবার পর্যুদস্ত করেছেন কেজরিওয়াল। কিন্তু পুরসভায় জিততে পারেননি। মধ্যদিল্লির ভিভিআইপি এলাকা ছাড়া এবার পুরো দিল্লিকে পরিষেবা দেবে একটাই পুরসভা। সেখানে জিতলে রাজধানীতে আরো কিছুটা ক্ষমতা কেজরিওয়ালের হাতে আসবে। তাই তিনি এবার পুরসভায় ক্ষমতা দখলের জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।
কেজরিওয়ালের নামে
দিল্লিতে আম আদমির প্রার্থীরা লড়ছেন কেজরিওয়ালের নামে। এই ছবিতেও দেখা যাচ্ছে, আম আদমি পার্টির জনসভায় পিছনে লাগানো ব্যানারে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়ে লেখা রয়েছে, কেজরিওয়ালের পার্ষদ। অর্থাৎ, প্রার্থীরা গৌন, লড়ছেন আসলে কেজরিওয়াল। তার নামে ভোট জোগাড়ের চেষ্টা। পশ্চিমবঙ্গে গত বিধানসভায় মমতাও বলেছিলেন, ২৯৪ আসনে আসলে তিনিই লড়ছেন।
পারবেন কেজরিওয়াল?
এটাই এই সময়ে দিল্লিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বারবার বিজেপি-র জয়রথ থামিয়ে দিয়েছেন। পুরসভায় পারবেন কি? কেজরিওয়াল এবার গুজরাটে ভোটের প্রচারে বেশি সময় দিয়েছেন। দিল্লিতে মাত্র কয়েকদিন প্রচার করেছেন। কিছু জায়গায় বাড়ি বাড়ি গেছেন, রোড শো করেছেন, জনসভাও। কিন্তু আপ বিধায়ক ও নেতারা প্রচারে ঢিলে দেননি। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে তারা প্রচার করেছেন।
কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা
বিধানসভা জিতেছিলেন কেজরিওয়াল। লোকসভায় সব আসন জিতেছিল বিজেপি। এবার পুরসভায় বিজেপি জিতলে বুঝতে হবে, দিল্লির মানুষ এখনো তাদের সঙ্গে আছে। পুর-সমস্যা সমাধানে তাদের উপর ভরসা রেখেছে। বিজেপি-র প্রচারও চলছে নানাভাবে। এখানে যেমন গাড়ির ছাদের একাংশ সরিয়ে দিয়ে বিজেপি প্রার্থী দাঁড়িয়ে সবাইকে অভিবাদন করছেন।
নারীবাহিনী
পুরসভায় এক-তৃতীয়াংশ আসন মেয়েদের জন্য সংরক্ষিত। তাই প্রতিটি দলই প্রচুর নারীকে প্রার্থী করে। তাদের সঙ্গে থাকেন নারীরা। এখানে যেমন বাঙালিপ্রধান এলাকা চিত্তরঞ্জন পার্কে বিজেপি-র নারী প্রার্থী ও তার সঙ্গীদের দেখা যাচ্ছে।
প্রচারে অধীর
দিল্লি পুরসভায় কংগ্রেসের হয়ে প্রচার করছেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। চিত্তরঞ্জন পার্কের দুই নম্বর মার্কেটে কংগ্রেসের জনসভায় দেখা যাচ্ছে তাকে। চিত্তরঞ্জন পার্ক বাঙালিপ্রধান এলাকা বলে অধীরকে দিয়ে জনসভা করিয়েছে কংগ্রেস।
লড়ছে হাত
একটা সময় ছিল, যখন দিল্লির পুরসভা থেকে বিধানসভা পর্যন্ত সর্বত্র কংগ্রেসের শাসন ছিল। কিন্তু এখন যমুনা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। সারা দেশের মতো দিল্লিতেও কংগ্রেসে ভাটার টান। তবে পুরসভায় কংগ্রেস লড়ছে। ফলাফল কী হবে তা ৭ ডিসেম্বর জানা যাবে। তবে তাদের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে দেখা যাচ্ছে।
কী বলছেন মাছ-বিক্রেতা
দুই নম্বর মার্কেটে মাছ বিক্রি করেন টাবু। দিনাজপুরের ছেলে টাবু দীর্ঘদিন হলো দিল্লিতে ব্যবসা করছেন। তার মতে, আম আদমি পার্টিই জিতবে। কেজরিওয়াল অনেক সুবিধা দিচ্ছেন। তাই তিনি কেজরিওয়ালের দলকে ভোট দেবেন।
সুরিন্দর সিংয়ের দাবি
সুরিন্দর সিং ব্যবসা করেন। তার দাবি, কেজরিওয়াল যে কাজ করছেন, তা দেখা যায়। মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন। এজন্যই পাঞ্জাবের মানুষ তার দলকে ক্ষমতায় এনেছে। তিনিও আপের ঝাঁটাতেই ভোট দিতে চান।
বিজেপি-র সমর্থনে
বিজেপি-র সমর্থনেও কিছু মানুষ কথা বলছেন। তারা বলছেন, মোদীর জন্য তারা বিজেপি-কে ভোট দিতে চান। কিছু মানুষ কংগ্রেসের পক্ষেও বলছেন। উচ্চমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের মধ্যে বিজেপি-র প্রতি সমর্থন বেশি। কিন্তু সাধারণ গরিব মানুষ আপকে সমর্থন করার কথা বলছেন। কারণ, আপ তাদের বিদ্যুতের বিল কম করেছে তাই নয়, মেয়েদের সরকারি বাসে পয়সা লাগে না। তবে ৭ ডিসেম্বর জানা যাবে, কার দখলে যাবে দিল্লি পুরসভা।