সংলাপ না হলে হরতাল
২৫ অক্টোবর ২০১৩সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেন এই সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে৷ এখন থেকে এই সরকারের আর কোন বৈধতা নেই৷ তাই প্রশাসন এবং পুলিশকে সরকারের কোন আদেশ নির্দেশ না মানার আহ্বান জানান তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘এই সরকার নিজেকেই নিজে ঘেরাও করেছে৷ যানবাহন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে সমাবেশে আসতে বাধা দিয়েছে৷ কিন্তু এসব করে সরকার তার শেষ রক্ষা করতে পারবেনা৷ দেশের জনগণ তাদের ঘেরাও করবে৷''
খালেদা জিয়া আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার তার ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেছে৷ এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে৷ তিনি বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা তিনি জাতির সামনে তুলে ধরেছেন৷ এই রূপরেখা জাতীয় সংসদেও উত্থাপন করা হয়েছে৷ আর তাঁর দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে আলোচনা শুরুর জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়েছেন৷ কথা বলেছেন টেলিফোনে৷ তারপরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া নেই৷ সরকার দেশে একটি একতরফা এক দলীয় নির্বাচন করতে চায়৷ কিন্তু সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবেনা বলে জানান খালেদা জিয়া৷ তাই তিনি সরকারকে শনিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন৷ এর মধ্যে সরকার যদি খালেদা জিয়ার প্রস্তাবিত নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু না করে, তাহলে সারা দেশে রবিবার সকাল ৬ টা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা ৬০ ঘণ্টার হরতাল পালন করা হবে৷ এরপরও সরকারের আচরণে কোন পরিবর্তন না আসলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানান খালেদা জিয়া৷
রাজধানীতে এখন সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও ১৮ দলকে ১৩টি শর্তে এই সমাবেশ করতে দেয় পুলিশ৷ আর বিএনপি নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চাইলেও পুলিশ অনুমতি দেয়নি৷ অনুমতি দেয়া হয় সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে৷ শেষ পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দি উদ্যানেই সমাবেশ হয়৷ আর ২৫শে অক্টোবরের এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে বিজেবি মোতায়েন করা হয়৷ ঢাকায় অন্তত ৮টি জায়গায় পুলিশ চেকেপোস্ট বসায়৷ ঢাকার বাইরেও বিভাগীয় শহরগুলোতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ আলাদা জায়গায় সমাবেশ করলেও ঢাকায় আওয়ামী লীগ কোনো সমাবেশ করেনি৷ তবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছিল৷
সমাবেশে আগে ঢাকায় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে৷ আর কক্সবাজারে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করতে গেলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে৷ এতে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ এছাড়া পটুয়াখালী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷
ঢাকার সমাবেশে বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন৷ জামায়াতের আত্মগোপনে থাকা নেতারাও হাজির হন সমাবেশে৷ আর জামায়াত-শিবির যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত তাদের শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন৷