1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দক্ষিণ দিগন্তে অরুণোদয়

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৮ আগস্ট ২০১৭

সমাজ থেকে আমরা সবাই নিই, দু’‌হাত ভরে নিয়ে থাকি, কিন্তু ফেরত দিই না কিছু৷ আমাদের প্রাপ্য সমাজ না মেটালে আমরা চটে যাই, কিন্তু যখন আমাদের দেওয়ার সময়, তখন মুখ ঘুরিয়ে থাকি৷ এমন এক স্বার্থপর সময়ে মূর্তিমান ব্যতিক্রম ডা. অরুণোদয় মন্ডল৷

https://p.dw.com/p/2ixNt

অরুণবাবু থাকেন কলকাতা শহরে, কিন্তু প্রতি শনি-রবিবার তিনি ট্রেন ধরে পৌঁছে যান সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায়, যেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা অপ্রতুল৷ প্রায় নিখরচায় সেখানকার মানুষের চিকিৎসা করেন তিনি৷ নিজের সারা জীবনের সঞ্চয় ভাঙিয়ে সুন্দরবনের সাহেবখালিতে এক টুকরো জমি কিনে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রও তৈরি করেছেন ডা. মন্ডল৷ এই সব কিছু শুধু ওই একটি বিশ্বাস থেকেই, যে সমাজ থেকে শুধু নিয়েই যেতে নেই, কিছু ফিরিয়েও দিতে হয়৷

তাঁর এই চেষ্টা এবং আন্তরিকতা দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই ডা. মন্ডলের বেশ কয়েকজন বন্ধুও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেন৷ তাঁদের আর্থিক সহযোগিতায় এই সেবামূলক কাজটা চালিয়ে যাওয়া কিছুটা সহজ হয়েছে ডা. মন্ডলের কাছে৷ এবং যে চিকিৎসা পরিষেবা তিনি দেন সুন্দরবনে, সেটা সম্পূর্ণ নিখরচায় পাওয়া যায় না৷ ন্যূনতম একটা অর্থ তিনি পারিশ্রমিক হিসেবে নেন রোগীদের থেকে৷ তার কারণটাও খুব সুন্দর ব্যাখ্যা করেছেন ডা. অরুণোদয় মন্ডল যে, যে জিনিসটা বিনাশ্রমে, বা বিনা খরচে পাওয়া যায়, লোকে তার দাম দিতে জানে না৷ ফলে জিনিসটার অবমূল্যায়ন হয়৷

এই কাজে সমস্যা আছে, বাধা আছে, আছে অসহযোগিতাও৷ যেমন সুন্দরবনের স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন ডা. মন্ডল, যদি তাঁরাও সপ্তাহে বা মাসে একদিন করে আসেন তাঁর ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, রোগী দেখেন৷ কিন্তু কোনো সাড়া পাননি৷ তাতে অবশ্য দমে যাননি অরুণোদয় মন্ডল৷ পাথেয় করেছেন রবি ঠাকুরের গান — যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে!‌