1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

থাইল্যান্ড-ক্যাম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষ অব্যাহত

২৭ এপ্রিল ২০১১

দ্বাদশ শতাব্দীর হিন্দু মন্দির সংলগ্ন এলাকার মালিকানাকে কেন্দ্র করে টানা ৬ দিন ধরে থাইল্যান্ড ও ক্যাম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে৷

https://p.dw.com/p/114Vj
সংঘর্ষে আহত এক থাই সেনা কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছেছবি: picture alliance/dpa

সীমান্ত এলাকার ডাংরেক জঙ্গলের গভীরে প্রাচীন কালে তৈরি ‘প্রেয়া বিহার', ‘তা মোয়ান' এবং ‘তা ক্রাবে' নামের তিনটি হিন্দু মন্দির রয়েছে৷ ১৯৫০ সালে ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্স ক্যাম্বোডিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকেই থাইল্যান্ড ও ক্যাম্বোডিয়া গোটা এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে আসছে৷ ৪৯ বছর আগে এক আন্তর্জাতিক আদালত প্রেয়া বিহার মন্দিরের মালিকানা ক্যাম্বোডিয়ার বলে রায় দিয়েছিল৷ বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ সত্ত্বেও সেখানে বড় মাপের সংঘাত দেখা যায় নি, যেমনটা সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রেয়া বিহার মন্দিরের কাছাকাছি সংঘর্ষে ১১ জন নিহত হয়েছিল৷ তারপর গত মঙ্গলবার পর্যন্ত দুই দেশের সেনাবাহিনী সীমান্তে যৌথ টহলদারি চালিয়ে যাচ্ছিল৷ কিন্তু আবার নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে৷

এর মধ্যে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে দুই দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের আলোচনা আচমকা বাতিল হয়ে গেছে৷ পরিকল্পনা অনুযায়ী থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রাউয়িত ওংসুয়ন ক্যাম্বোডিয়ার রাজধানী নম পেন'এ গিয়ে সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেয়া বান'এর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন, এমন কথা ছিল৷ কিন্তু ওংসুয়ন তার বদলে ‘পূর্ব পরিকল্পিত' আলোচনার জন্য চীনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন৷ থাই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘আমরা আলোচনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানাই, তবে তার আগে ক্যাম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীকে গোলাগুলি চালানো বন্ধ করতে হবে৷'' দুই দেশের মধ্যে সমাধানসূত্র নিয়েও মতবিরোধ রয়েছে৷ থাইল্যান্ড দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে সীমান্ত সংকটের সমাধান চাইলেও ক্যাম্বোডিয়া আন্তর্জাতিক স্তরে মধ্যস্থতা চায়৷ বুধবার ক্যাম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়েছেন এবং থাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব রেখেছেন৷

এই সংকটের সমাধানে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার জোট ‘আসিয়ান'ও তৎপরতা দেখাচ্ছে৷ ‘আসিয়ান'এর পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাকার্তায় থাই-ক্যাম্বোডিয়া সীমান্তের বিতর্কিত এলাকায় নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক মোতায়েন করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ক্যাম্বোডিয়া তা কার্যকর করতে চাইছে৷ কিন্তু থাই সেনাবাহিনীর বিরোধিতার কারণে এই বোঝাপড়া আপাতত থমকে রয়েছে৷ থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রী জাকার্তায় ‘আসিয়ান'এর বর্তমান সভাপতি দেশ ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্তি নাতালেগাওয়া'র সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে শোনা যাচ্ছে৷

সীমান্ত এলাকায় বিতর্কিত ভূখণ্ডকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের মূল কারণ সম্পর্কে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা নানা রকম তত্ত্ব খাড়া করছেন৷ অনেকেই মনে করছেন, এর পেছনে দুই দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি কাজ করছে৷ বিশেষ করে দুই দেশের সরকারই নিজেদের দেশের উগ্র জাতীয়তাবাদীদের তুষ্ট করতে চাইছে৷ থাইল্যান্ডে আগামী জুলাই মাসে সাধারণ নির্বাচন৷ সেদেশের সামরিক বাহিনী রাজনীতির উপর নিজেদের প্রভাব বজায় রাখতে সচেষ্ট রয়েছে৷ বিরোধীদের শক্তি সীমিত রাখতে সেনাবাহিনী রক্ষণশীল শাসক শ্রেণিকে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করছে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক