থাইল্যান্ডে নারীরাও ভিক্ষু হচ্ছেন
বৌদ্ধপ্রধান দেশ থাইল্যান্ডে নিয়ম অনুযায়ী শুধু পুরুষরাই ভিক্ষু হতে পারেন৷ কিন্তু তারপরও দেশটিতে প্রায় পৌনে তিনশ’ জন নারী ভিক্ষু আছেন৷ কীভাবে? জানুন ছবিঘরে৷
নারীদের মঠ
থাইল্যান্ডের নাখন পাথোম রাজ্যের সংধামাকালিয়ানি মঠের ভিক্ষু থেকে শুরু করে শিক্ষানবীশ সবাই নারী৷ আর তাই এই মঠের আনুষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতি নেই৷
নিষিদ্ধ
থাইল্যান্ডে ১৯২৮ সালে বৌদ্ধ ধর্মের এক আদেশে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র পুরুষরাই ভিক্ষু এবং শিক্ষানবীশ হতে পারবেন৷ সে কারণে দেশটিতে নারীদের ভিক্ষু কিংবা শিক্ষানবীশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় না৷
প্রথম নারী ভিক্ষু
ইনি থাইল্যান্ডের প্রথম নারী ভিক্ষু৷ নাম ধামানন্দ ভিক্ষুনি৷ বয়স ৭৪৷ তিনি সংধামাকালিয়ানি মঠের প্রধান৷ থাইল্যান্ডে ভিক্ষু হওয়া সম্ভব না হওয়ায় ২০০১ সালে শ্রীলংকায় গিয়ে তিনি ভিক্ষু হন৷
দেশের বাইরে
ধামানন্দ রয়টার্সকে জানান, থাইল্যান্ডে এখন প্রায় ২৭০ জন নারী ভিক্ষু রয়েছেন৷ তাঁদের সবাই দেশের বাইরে, বিশেষ করে শ্রীলংকা ও ভারতে গিয়ে ভিক্ষু হয়েছেন৷ এর মধ্যে সাতজন তাঁর মঠেই আছেন বলে জানান তিনি৷ থাইল্যান্ডে পুরুষ ভিক্ষুর সংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষের বেশি৷
লজ্জাজনক
ধামানন্দ বলেন, গত নব্বই বছরে সমাজে অনেক পরিবর্তন এসেছে৷ কিন্তু এখনও মেয়েদের তাঁদের জীবনের সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুমোদন না থাকার বিষয়টি লজ্জাকর৷
শিক্ষানবিশ গড়ে তুলছেন
ধামানন্দের মঠে প্রতিবছর এপ্রিল আর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নারীদের শিক্ষানবিশ ভিক্ষু হিসেবে বরণ করে নেয়া হয়৷ কিন্তু তাঁদের পক্ষে ভিক্ষু হওয়া সম্ভব হয়না, কারণ নিয়ম অনুযায়ী বরণ অনুষ্ঠানে ১০ জন পুরুষ ভিক্ষু উপস্থিত থাকতে হবে, যা ১৯২৮ সালের আদেশের কারণে সম্ভব নয়৷
পরিবর্তনের চেষ্টা
১৯২৮ সালের আদেশ পরিবর্তন নিয়ে অতীতে কয়েকবার চেষ্টা হয়েছে৷ কিন্তু তা সফল হয়নি৷ ভিক্ষুদের সর্বোচ্চ পরিষদ ‘সঙ্ঘ সুপ্রিম কাউন্সিল’ প্রতিবারই সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে৷
‘লিঙ্গ বৈষম্য নয়’
সরকার বিষয়টিকে লিঙ্গ বৈষম্য হিসেবে না দেখে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য হিসেবে দেখছে৷ ন্যাশনাল অফিস অফ বুদ্ধিজমের মুখপাত্র নারং সংগারম বলছেন, ‘‘নারীদের এখানে ভিক্ষু করা যাবে না, কিন্তু দেশের বাইরে ভিক্ষু হতে কেউ তো তাঁদের বাধা দিচ্ছে না৷ তাঁরা শুধুমাত্র থাইল্যান্ডের ভিক্ষু দ্বারা দীক্ষিত হতে পারবেন না৷’’