তুরস্কে যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের নিয়োগ দেয়া রেক্টরকে নিয়ে তুরস্কের বোগাজিচি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ৷ ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে৷ চলছে গ্রেপ্তার৷ বিস্তারিত ছবিঘরে৷
সূত্রপাত যেখান থেকে
শনিবার ইস্তানবুলের বোগাজিচি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন রেক্টর নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এর্দোয়ান৷ নিয়োগ পাওয়া মেলিহ বুলু ব্যবসায় প্রশাসনে একজন ডক্টরেট৷ কিন্তু তাকে রেক্টর মানছেন না বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা৷ প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা৷
কে এই মেলিহ বুলু?
তুরস্কের গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মেলিহ বুলু ২০১৫ সালের সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল এর্দোয়ানের একে পার্টির হয়ে লড়েছেন৷ ১৯৮০ সালের পর তিনিই প্রথম ব্যক্তি যাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে রেক্টর পদে নিয়োগ দেয়া হলো৷
শিক্ষকরাও বিরুদ্ধে
শুধু শিক্ষার্থীরাই নন, মেলিহ বুলুর নিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষকরাও৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি সদস্যরা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতা, স্বায়ত্ত্বশাসন এবং গণতান্ত্রিক মূলবোধের পরিপন্থি৷ তাই তারা নিয়োগটি মেনে নেবেন না৷ এটিকে ২০১৬ সাল থেকে চলা অগণতান্ত্রিক চর্চার আরেকটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারা৷
‘রাষ্ট্র নিযুক্ত রেক্টর মানি না’
শনিবার মেলিহ বুলুর নিয়োগের সংবাদ প্রকাশের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ’ শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমেছেন৷ মেলিহ ‘বুলু আমাদের রেক্টর না’, ‘রাষ্ট্র নিযুক্ত রেক্টর মানি না’- এমন স্লোগান দেন তারা৷ ২০১৬ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর প্রেসিডেন্টের আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরা রেক্টর নির্বাচনের অধিকার হারায়৷ এই নিয়োগের ক্ষমতা এখন প্রেসিডেন্টের হাতেই৷
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ফটকে অবস্থান নেয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে তাদের সঙ্গে সংঘাত হয়৷
চলছে ধরপাকড়
সোমবারের বিক্ষোভে জড়িত ১৭ জনকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ কর্তৃপক্ষ আরো ১১ শিক্ষার্থীকে আটকের জন্য খুঁজছে৷
অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয়নি
এর্দোয়ানের সভাপতিত্বে একে পার্টির এক বৈঠক শেষে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন দলের মুখপাত্র ওমার কেলিক ৷ তিনি বলেন, যে-কোনো শিক্ষাবিদেরই যে-কোনো ব্যক্তির মতোই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে৷ ‘‘কোনো শিক্ষাবিদকে আমরা রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে নিয়োগ দেই না,’’ বলেন তিনি৷ এই নিয়োগের ফলে অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয়নি বলেও দাবি সরকারের৷