ঢাকা সেক্টরের বিডিআর বিদ্রোহীদের বিচার শুরু
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০বিদ্রোহীদের বিচার প্রসঙ্গে বিডিআর এর ঢাকার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আজিজ আহম্মেদ বলেন, একটা সিগন্যালের মাধ্যমে সবাই কারো কথা না শুনে বিদ্রোহ করে চলে গেলো, কেউ আবার অস্ত্র নিয়ে গোলাগুলিসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেছে৷ এসব বিষয় বিবেচনায় এনে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের চার্জ আনা হয়েছে৷
মঙ্গলবার দুপুরে পিলখানায় সংবাদিকদের কর্নেল আজিজ জানান, গত বছরের এই ঘটনা ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরোচিত ঘটনা৷ বিডিআরের অধিকাংশ সদস্য চায় এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হোক৷
তিনি বলেন, ঢাকার সেক্টর সদরদপ্তরের ৮৬ জনের বিরুদ্ধে আজকে অভিযোগ পাঠ করা হলো৷ এদের মধ্যে ১৯ জন গ্রেপ্তার আছে৷ দুইজন শুরু থেকেই পলাতক এবং ৬৫ জন এখানে আছে৷
বিশেষ আদালতে মঙ্গলবার মামলার বাদী ঢাকা সেক্টর সদরের ভারপ্রাপ্ত নায়েব সুবেদার মো. শাহ আলম ভূঁইয়া তাঁর লিখিত আরজি তুলে ধরেন৷ সেখানে তিনি গত বছরের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদর দপ্তরে কখন কীভাবে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল, একে একে সেনা কর্মকর্তাদের কীভাবে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করা হয়, তার বিশদ বর্ণনা দেন৷ একইসঙ্গে তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক আসামির নাম পড়ে শোনান এবং আদালতকে জানান, এই মামলায় সাক্ষীর সংখ্যা ৩০ জন৷
বুধবার বিশেষ আদালতে শুনানির দ্বিতীয় দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক ১৯ এবং মঙ্গলবার গ্রেপ্তার দেখানো ৬৫ জন জওয়ানসহ মোট ৮৪ জন আসামিকে আদালতে হাজির করা হবে বলে প্রকাশ৷
এদিকে, বিডিআর বিদ্রোহের সময়কালের বিবরণ দিতে গিয়ে আদালতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মামলার প্রসিকিউটর মেজর মো. মতিউর রহমান৷ তিনি বলেন, গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি দরবার শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা আগে বিদ্রোহীদের ১৫/১৬ জনের একটি দল বৈঠক করে৷ তারা দুই ভাগে ভাগ হয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করে৷ পরবর্তীতে তারা একত্রিত হয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিনিময় করেই বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে বলে দাবি মতিউর রহমান-এর৷ বর্তমানে বিডিআর এর মহাপরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি৷
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহের ঘটনায় বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ এবং ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৩ জন নিহত হন৷ এই ঘটনার পর বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিডিআরকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয় সরকার৷
প্রতিবেদক: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়