1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ড্রিমহ্যাক: গেমারদের স্বর্গ

মিশায়েল হার্টলেপ/এসি৩১ মার্চ ২০১৬

ড্রিমহ্যাক একটি কম্পিউটার গেমস বা ভিডিও গেমস ফেস্টিভাল – সদ্য এসেছে সুইডেন থেকে জার্মানিতে, কিন্তু এসেই গেমার, ইনডাস্ট্রি, অতিথি আর দর্শকদের কাছে বিপুলভাবে সফল হয়েছে৷ হবে না-ই বা কেন, এটা যে গেমারদেরই যুগ!

https://p.dw.com/p/1ILfY
Deutschland Dreamhack Leipzig 2016 Spieler Logo
ছবি: imago/F. Abraham

কেন সফল ভিডিও গেমস ফেস্টিভাল ‘ড্রিমহ্যাক’?

জার্মানির সবচেয়ে বড় ‘লান' পার্টি৷ এক হাজারটা সিট, আধা অন্ধকার, সেই সঙ্গে ফাস্ট ফুড৷ চাইলে এখানে তিন দিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কম্পিউটার গেমস খেলা যায়, বন্ধু-বান্ধব বা পরিচিতদের দেখানো যায়, নিজে কত ভালো খেলি৷

‘লান' পার্টির নাম রাখা হয়েছে ড্রিমহ্যাক৷ মার্টিন হান্ডশু ও তাঁর বন্ধুরা মাথাপিছু দেড়শ' ইউরো করে দিয়ে ভিআইপি সিট রিজার্ভ করেছেন৷ মার্টিন হান্ডশুর কথায়, ‘‘আমরা এখানে এসেছি কারণ আমরা বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে দেখা করতে চাই, কম্পিউটার গেমস খেলতে চাই আর প্রচুর মজা করতে চাই৷ এই তিনটেই হলো আমাদের আসল উদ্দেশ্য৷ এরা সকলে একা একা বাড়িতে বসে থাকতে চায় না, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে খেলতে চায়, মনিটরে চোখ রেখে অন্যদের একবার হারাতে চায় কিংবা বোকা বানাতে চায়৷ এটাই হলো ড্রিমহ্যাকের মজা৷''

শুধু লান পার্টি নয়, সেই সঙ্গে কস পার্টি-ও বটে, তারা আবার তাঁদের প্রিয় গেম-এর হিরোদের সাজপোশাক পরে এসেছেন৷ এই গেমস ফেস্ট-এর আইডিয়াটা এসেছে সুইডেন থেকে৷ সেখানে বছরে দু'বার গেমার-দের এরকম একটা ফেস্টিভাল হয়৷ টোমাস লুইকেডাল তার উদ্যোক্তাদের একজন৷ তিনি জানান, ‘‘এটা একটা সামাজিক উৎসব, যেখানে ভালো সময় কাটে, সকলে মিলে একসঙ্গে অনেক কিছু করা যায়৷ সব মানুষ দল বেঁধে কিছু একটা করতে চায়৷ জার্মানির ফুটবল ম্যাচগুলোকেই দেখুন৷ ৮০ হাজার মানুষ মাঠে গিয়ে দেখছেন, ২২টা মানুষ কিভাবে একটা বলের পেছনে দৌড়চ্ছে৷ এখানে আমরা তার বদলে কাউন্টার-স্ট্রাইক দেখি আর বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে মজা করি৷''

কাউন্টার-স্ট্রাইক-এর নাম আজ বাজারে তত খারাপ নয়৷ আজ তাকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইগো-শুটার গেমগুলোর মধ্যে ফেলা যায়৷ ড্রিমহ্যাক-এও এ নিয়ে আন্তর্জাতিক দলগত প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা আছে৷ প্লেয়াররা বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে পড়েন, তাদের বহু ফ্যান আছে৷ বিজয়ী দলের পুরস্কার হলো মোট ৫০ হাজার ইউরো৷ মাউসস্পোর্ট দলটি জার্মানির, টিমো রিশটার আছেন সেই দলে৷ ২০ বছর বয়সি ই-স্পোর্টসম্যান – মানে ইলেকট্রনিক স্পোর্টসম্যান – দিনে চার ঘণ্টা প্র্যাকটিস করেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘এটা হাজার হোক অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা৷ আমার একটা ইগো আছে৷ আমি চেষ্টা করি, সেরা প্লেয়ারদের সঙ্গে টেক্কা দিতে৷ সেটা যে করতে পারি, সেই অনুভূতিটাই দারুণ, আর সেটা সত্যি সত্যি করতে পারাটা আরো দারুণ৷''

শেষমেষ মাউসস্পোর্টস দল রইল পঞ্চম স্থান৷ অস্ট্রিয়ার মেয়ে ২৫ বছর বয়সি ইউলিয়া ক্রয়েৎসার-ও তাঁর নেশাকে পেশা বানিয়েছেন৷ ‘মিস রেজ' নাম নিয়ে তিনি লাইভ টুইচ-এ স্ট্রিম করেন৷ লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করেছেন৷ বিজ্ঞাপন আর স্পন্সরিং থেকে ইতিমধ্যে তাঁর দিন চলে যায়৷ কিন্তু সেটাই তাঁর কাছে বড় কথা নয়৷

ইউলিয়া ক্রয়েৎসার বললেন, ‘‘এখন কেউ যদি বলে: ঠিক আছে, আমি এখন দশ ঘণ্টা কমপিউটার গেমস খেলব, কেননা আমি জানি, আমি তা থেকে টাকা রোজগার করতে পারি – তাহলে সেটা কাজ করবে না৷ কেননা যারা দেখছেন, তারা বুঝতে পারেন, কেউ সেটা ভালোবেসে করছে, নাকি টাকার জন্য করছে৷ আমি বলব: ভালোবেসে করো, খুশি হয়ে করো, আর তুমি তুমিই থেকো৷ তাহলেই হবে৷''

গেমস ইনডাস্ট্রি-ও ড্রিমহ্যাক-এ উপস্থিত৷ তারা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি পেশ করতে ব্যস্ত৷ কেননা তা থেকে প্রচুর রোজগার করা যায়: শুধু ২০১৪ সালে কম্পিউটার গেমস শিল্পের বিক্রি ছিল ছ'হাজার কোটি ইউরো – ও তা বাড়ছে৷ গেমিং এখন সমাজে পুরোপুরি স্বীকৃত একটি অবসর বিনোদনের পন্থা৷ প্রতিদিন সারা বিশ্বে ৫০ কোটি মানুষ ভিডিও গেমস খেলে থাকেন৷

গেমার মার্টিন হান্ডশু জানান, ‘‘চার, পাঁচ অথবা দশজন বন্ধু মিলে খেলা, মজা করা৷ অন্যদের সঙ্গে মিলে কিছু একটা করা, সেটাই আমার কাছে আসল৷ আমাদের প্রজন্ম কম্পিউটার নিয়ে বড় হয়েছে, কাজেই আমাদের জন্যে সেটা কম্পিউটার গেমস ছাড়া আর কিছু হতে পারে না৷''

জার্মানিতে ড্রিমহ্যাক এই প্রথম, এবং উদ্যোক্তা ও অতিথিদের চোখে পুরোপুরি সফল৷ আগামী বছর ড্রিমহ্যাক হবে লাইপসিগে, আরো বেশি গেমার আর দর্শক নিয়ে৷ মার্টিন হান্ডশু আর তাঁর বন্ধুরাও সেখানে থাকবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান