ডেনিস অভিবাসী ‘ঘাঁটি’ আর থাকছে না
ডেনমার্কে ‘ঘেটো’ নামে পরিচিত অভিবাসীদের এলাকাটি ২০৩০ সাল নাগাদ বিলোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেমধ্য-ডানপন্থি সরকার৷ পশ্চিমা দেশগুলোর বাইরে থেকে আসা অভিবাসীদের সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷
আলোচনার শুরু
‘‘ডেনমার্কের মানচিত্রে ফাটল দেখা দিয়েছে৷ দেশজুড়ে আরেকটি সমাজ তৈরি হয়েছে,’’ ডেনিস প্রধানমন্ত্রী লারস লোকে রাসমুসেন তাঁর ২০১৮ সালের নববর্ষের ভাষণে এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তাঁর সরকারের নতুন এই পরিকল্পনা তুলে ধরেন৷ কোপেনহেগেনে অভিবাসী বসতিগুলোর অন্যতম জলনেরপার্কেনে তিনি এই ঘোষণা দেন৷
বঞ্চিত এলাকা
জলনেরপার্কেনসহ ২৫টি এলাকাকে অধিকারবঞ্চিত হিসেবে শনাক্ত করেছে ডেনিস সরকার৷ উচ্চ হারে বেকারত্ব, নিম্ন আয়, শিক্ষায় অনুন্নত, বাসিন্দাদের অধিকাংশ পশ্চিমা দেশগুলোর বাইরে থেকে আসা এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ২ দশমিক ৭ শতাংশ ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত – এই পাঁচটির মধ্যে অন্তত তিনটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে ওই এলাকাগুলোর৷
কঠোর পদক্ষেপ
নতুন গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে এ সব এলাকায় মাত্র হাঁটতে শেখা শিশুদের জন্য চাইল্ড কেয়ার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ সেখানে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে শিশুদের গণতন্ত্র, সমতা এবং ডেনমার্কের প্রধান সরকারি ছুটির দিনগুলোর পেছনের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হবে৷ এ সব এলাকায় কিছু অপরাধের জন্য দ্বিগুণ শাস্তির বিতর্কিত প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে৷
অন্তর্ভুক্তির লড়াই
ডেনমার্কের সমাজ খুবই সমজাতিক৷ দেশটির ৫৭ লাখ মানুষের প্রায় ৮৭ শতাংশই ডেনিস বংশোদ্ভূত৷ ইউরোপের বাইরে থেকে আসা অভিবাসীদের সমাজের মূলধারার সঙ্গে মেলাতে সংগ্রাম করছে দেশটি৷
পর্যটকদের সঙ্গে অভিবাসীদের দেখা হয় যেখানে
কোপেনহেগেনে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের কাছে ছবি তোলার জন্য পছন্দের জায়গা সুপারকিলেন পার্ক৷ ছোট্ট পাহাড়কেন্দ্রিক এই পার্কটি জলনেরপার্কেনের বসতি সংলগ্ন৷ পর্যটকদের যাতায়াতের পথেই দেখা মেলে পাহাড়ের পেছন দিক থেকে শুরু হওয়া এই শিবিরের৷
বৈষম্যের শিকার
জলনেরপার্কেন-এর বাসিন্দা মুহাম্মদ আসলাম এসেছেন পাকিস্তান থেকে৷ অভিবাসীদের জন্য এখানে ভবন নির্মিত হওয়ার পর থেকে পরিবার নিয়ে একই ফ্ল্যাটে আছেন চার সন্তানের জনক আসলাম৷ সরকারের নতুন এই পরিকল্পনায় আপত্তি রয়েছে তার৷ ‘‘রাজনীতিকরা আমাদের সব স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে৷ তাঁরা পার্লামেন্টে বসে আমাদের কথা না শুনেই আলোচনা করছেন৷’’
‘ওহ, এটা ওই ঘেটো?’
টিঙ্গবজার্গ কোপেনহেগেনে অভিবাসীদের এ ধরনের আরেকটি বসতি৷ এখানকার বাসিন্দা সোমালিয়ান বারওয়াকো জামা হুসেন কাজ করেন একটি ওষুধের দোকানে৷ এই কমিউনিটির সঙ্গে তিনি খুবই সম্পৃক্ত৷ তাঁদের বসতি নিয়ে মানুষের আচরণে খুবই হতাশ তিনি৷ ‘আপনি যখন বলবেন টিঙ্গবজার্গে থাকেন, তখন অনেকে আপনাকে বলবে, ‘ওহ, এটা ওই ঘেটো?’