1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অবাস্তব ফুলের তোড়া!

১৯ জুলাই ২০১৯

মোনালিসার মতো বিশ্ববিখ্যাত ছবিতে মানুষই মূল চরিত্র হলেও প্রাণহীন বস্তুর ছবিও পশ্চিমা শিল্পকলার বিষয়বস্তু হতে পারে৷ ‘স্টিল লাইফ' এমনই এক ধরনের ছবি৷ নেদারল্যান্ডসের এক শিল্পী ডিজিটাল পদ্ধতিতে একই কাজ করছেন৷

https://p.dw.com/p/3MIm8
ছবি: Bas Meeuws

ফটোশিল্পী হিসেবে বাস মেউস তাঁর ফুলের তোড়ার মাধ্যমে অবহেলিত এই শিল্পকলাকে নতুন মাত্রা দিচ্ছেন৷ তিনি প্রতিটি ফুলের আলাদা ছবি তোলেন৷ তারপর কম্পিউটারের পর্দায় তিনি ডিজিটাল কোলাজ তৈরি করেন৷ প্রথমবার দেখলে এই সব ছবি চিরায়ত ‘স্টিল লাইফ' শৈলির উদাহরণ মনে হতে পারে৷ সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীর ফ্লেমিশ চিত্রকরদের ছবি দেখে তিনি প্রেরণা পান৷ সেই আমলের চিত্রশিল্পীদের মতোই তিনি এমনভাবে ফুল সাজাতে ভালোবাসেন, বাস্তবে যা অসম্ভব৷ বাস মেউস বলেন, ‘‘আমার স্টিল লাইফ সৃষ্টিকর্মে আমি সময় নিয়ে খেলতে ভালবাসি৷ প্রত্যেক মরসুমে ফুলের ছবি তুলে আমি সেই কাজ করি৷ আমি বসন্ত, গ্রীষ্ম ও হেমন্তকালের এমন সব ফুল একসঙ্গে সাজাই, বাস্তব জীবনে যা একেবারেই সম্ভব নয়৷’’

ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাল্পনিক ফুলের তোড়া!

বাস মেউস সব জায়গায় প্রেরণা খুঁজে পান৷ প্রায়ই তিনি নতুন মোটিফের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন৷ সারা বছর ধরে তিনি সব রং ও আকারের ফুলের ছবি তুলে বেড়ান৷ তাঁর তথ্যভাণ্ডারে এর মধ্যে বারো হাজারেরও বেশি ছবি জমা হয়েছে৷ দামি দোকানের অসাধারণ পুষ্পশয্যা থেকে শুরু করে পাড়ার ছোট ফুলের দোকান, অথবা বোটানিকাল গার্ডেনের বিরল ফুল – তিনি কোনো উৎসই অবহেলা করেন না৷ দুই যুগের মধ্যে যোগসূত্র সম্পর্কে বাস মেউস বলেন, ‘‘সপ্তদশ শতাব্দীর চিত্রকররা তেল, প্যালেট ও ক্যানভাস কিনে ছবি আঁকতেন৷ আর আমার ফুলের ছবির প্রয়োজন হয়, যা আমার স্টিল লাইফের ভিত্তি৷ অর্থাৎ ফটোগুলি আমার ডিজিটাল রং এবং আমার কম্পিউটার এক ধরনের ক্যানভাস হয়ে ওঠে৷ আমি ডিজিটাল পদ্ধতিতে তার উপর ছবি আঁকি৷’’

বিভিন্ন গ্যালারি ও মিউজিয়ামে গিয়ে তিনি ফুলদানির ছবি তোলেন৷ স্টিল লাইফ মোটিফের মধ্যে এটি অপরিহার্য৷ বাস মেউস বলেন, ‘‘আমার স্টিল লাইফ কম্পোজিশন শুরু করার সময় সবার আগে ফুলদানি দিয়ে শুরু করি৷ অর্থাৎ এই ফুলদানি শুধু একটি সরঞ্জাম নয়, বরং সেটিই ছবির ভিত্তি হয়ে ওঠে৷ এটা অত্যন্ত জরুরি৷ তাছাড়া ফুলের তোড়া ও ফুলদানির মধ্যে ভারসাম্য থাকতে হবে৷ কখনো ফুলদানি একেবারে সামনে থাকে৷ তখন ভারসাম্যের স্বার্থে ফুলের তোড়াকে তরতাজা ও রঙিন করে তুলতে হয়৷’’

এমন ছবির কম্পোজিশনের ধারার ক্ষেত্রে যুগে যুগে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি৷ ডিজিটাল শিল্পী হিসেবে মেউস-ও আলাদা করে প্রতিটি ফুল বেছে নেন৷ ধীরে ধীরে ছবিটি ফুটে ওঠে – অবশ্যই ডিজিটাল পদ্ধতিতে৷ বাস মেউস মনে করেন, ‘‘আমার মতে, ভালো ও প্রাণবন্ত স্টিল লাইফ ছবির মধ্যে কিছু উত্তেজনা থাকতে হবে৷ আমি ছবিকে প্রাণবন্ত করতে চাই৷ সে কারণে আমি ছবিতে অনেক পোকামাকড় ও অন্যান্য প্রাণী রেখেছি৷ বাস্তবে গাছপালা প্রজননের জন্য পোকামাকড়ের উপর নির্ভরশীল৷ কখনো আবার পোকা বা শুঁয়োপোকা গাছপালার জন্য হুমকি হয়ে ওঠে৷ আসলে সবটাই জীবনের এক বৃত্ত৷ মানুষকে সেটাই দেখাতে চাই৷’’

টেওডোরা মাভ্রোপুলোস/এসবি