1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তানে সহিংসতা কেন বাড়ছে?

২৯ জানুয়ারি ২০১৮

আফগানিস্তানে একের পর ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটছে৷ জানুয়ারি মাসটা দেশটির জন্য এক রক্তাক্ত মাস৷ প্রশ্ন হলো, এই পরিস্থিতির জন্য কি নতুন মার্কিন নীতি এবং পাকিস্তানের উপর ক্রমবর্ধমান চাপ দায়ী?

https://p.dw.com/p/2rikV
Afghanistan Angriff auf Intercontinental Hotel in Kabul
ছবি: Reuters/M. Ismail

আটদিনে তিনটি হামলা৷ কাবুলে এ সব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৩০ জনের বেশি মানুষ, আহত অন্তত ২০০৷ ২১ জানুয়ারি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে হামলা, ২৭ জানুয়ারি আত্মঘাতী হানা আর ২৯ জানুয়ারি মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে হামলা৷ এ সব হামলা একটি বিষয় পরিষ্কার করে দিয়েছে: আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে৷

উপরে উল্লেখিত হামলাগুলো শুধু কাবুলে হয়েছে৷ গত কয়েকদিনে রাজধানীর বাইরেও একাধিক হামলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে৷ সব হামলার দায় স্বীকার করেছে তালেবান এবং ‘ইসলামিক স্টেট' বা আইএস৷

রক্তাক্ত বছরের সূচনা

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির নতুন বছর ভালোভাবে শুরু হয়নি৷ আফগানরা আশঙ্কা করছেন আরো একটি রক্তাক্ত বছরের শুরু হয়েছে মাত্র, যে বছরে আরো অনেক বেসমারিক মানুষ প্রাণ হারাতে পারেন৷ তাদের ধারণা, জানুয়ারি মাসে সংঘটিত হামলাগুলো হচ্ছে সিরিজ হামলার সূচনামাত্র৷ তাদের কাছে কিছুদিন আগে আলোচিত শান্তি আলোচনা এখন এক স্মৃতিমাত্র৷ কিন্তু নতুন এ সব হামলা কেন হচ্ছে?

আফগান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ. ডি. মোহাম্মদ আরিফ মনে করেন, দেশটির হেলমান্ড, কুন্দুস এবং অন্যান্য এলাকায় শুরু হওয়া মার্কিন সেনা অভিযানের জবাবে এসব হামলা চালাচ্ছে উগ্রপন্থিরা৷ তিনি বলেন, ‘‘তালেবান সাধারণত শীতের শেষে তাদের হামলা শুরু করে৷ কিন্তু এখন মনে হচ্ছে নতুন মার্কিন নীতির জবাব দিতে তারা আগেভাগেই হামলা শুরু করেছে৷ তারা দেখাতে চায় যে, তারা এখনো শেষ হয়ে যায়নি৷''

Afghanistan Angriff auf Intercontinental Hotel in Kabul
আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক এক হামলার পরের চিত্রছবি: Reuters/M. Ismail

বিগত বছরগুলোর মতো শীত শেষ হওয়ার অপেক্ষা না করে এবছর শীতকালের মধ্যেই তালেবানের বিরুদ্ধে আফগান বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান শুরু করে মার্কিন বাহিনী৷ গতবছরের আগস্টে আফগানিস্তান ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে নতুন নীতি ঘোষণা করেছিলেন, তাতে এমন ইঙ্গিতই ছিল৷ ট্রাম্প তখন জানান যে, তিনি আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করতে সেদেশে মার্কিন সেনার সংখ্যা আরো বাড়াবেন এবং যতদিন সেদেশের দরকার ততদিন সেদেশে মার্কিন সেনারা অবস্থান করবেন৷ একইসঙ্গে আফগানিস্তানের অস্থির অবস্থার জন্য তিনি পাকিস্তানকে দোষারোপ করেন এবং দেশটিকে দেয়া মার্কিন আর্থিক সহায়তা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেন৷ উদ্দেশ্য হচ্ছে, পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করা যাতে দেশটি তালেবান নির্মূলে আরো সোচ্চার হয়৷

পাকিস্তানের উপর চাপ দেয়ায় কি এই পরিস্থিতি?

আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর দেশে সাম্প্রতিক হামলার পেছনে পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করেছেন৷ তিনি মনে করেন, তালেবান জঙ্গিরা তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বাঁচাতে মাঠে নেমেছে, যারা এখন চাপে রয়েছে৷ বর্তমান প্রেক্ষাপটে পৃষ্ঠপোষক বলতে পাকিস্তানকেই বোঝানো হচ্ছে৷

আফগানিস্তান বিশেষজ্ঞ নিকোল ব্রিৎসও মনে করেন, তালেবানের সাম্প্রতিক হামলাগুলো আসলে তাদের উপর মার্কিন এবং আফগান বাহিনীর বিমান হামলা ও অন্যান্য অভিযানের জবাব৷ তবে তিনি মনে করেন, আফগান ইস্যুতে সম্পৃক্তরা একে অপরকে দোষারোপের মাধ্যমে কোনো সমস্যার সমাধান আসলে করতে পারবে না৷ বরং জঙ্গি দমনে আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাজের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ৷ আগামী দিনগুলোতে আফগানরা আরো সহিংসতা দেখতে পারে বলে শঙ্কা তাঁর৷

ওয়াসলাত হজরত-নাজিমি/এআই