1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রাম্পকে জবাব দিল চীন, ব্রাজিলের পরিস্থিতি ভয়াবহ

২০ মে ২০২০

এ বার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খুললো চীন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া হলো। এ দিকে ব্রাজিলে এক দিনে রেকর্ড মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলবার।

https://p.dw.com/p/3cUiB
ছবি: Reuters/L. Millis

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের লাগাতার আক্রমণের কড়া জবাব দিল চীন। মঙ্গলবার চীনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই ট্রাম্প বার বার চীন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে আক্রমণ করছেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের হুমকিকে অগ্রাহ্য করে চীন জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে সম্পর্কের কথা ট্রাম্প বলছেন, তা ভিত্তিহীন। এ দিকে অ্যামেরিকা এবং চীনের এই শব্দযুদ্ধের মধ্যেই করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হলো ব্রাজিলে। গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু ঘটেছে সেখানে। দেশের এই পরিস্থিতির জন্য সকলেই আঙুল তুলছেন প্রেসিডেন্টের দিকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছয় শর্ত

সোমবার ডনাল্ড ট্রাম্প ফের আক্রমণ করেছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং চীনকে। দাবি করেছিলেন, ডাব্লিউএইচও চীনের পাপেট বা পুতুলে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানকে একটি চিঠি পাঠায় অ্যামেরিকা। তাতে বলা হয়, ৩০ দিনের মধ্যে সংস্থাটি চীনের অধীনতা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে অ্যামেরিকা তাদের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করবে। বস্তুত, আগেই ডাব্লিউএইচও-র ফান্ড বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই আক্রমণের পরে প্রাথমিক ভাবে কোনও জবাব দেয়নি চীন। তবে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কড়া জবাব দেয় বেজিং। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, অ্যামেরিকার এই বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

তবে শুধু এই ক্ষেত্রেই অ্যামেরিকা এবং চীনের লড়াই চলছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য অ্যাসেম্বলিতে তাইওয়ানকে জায়গা দেওয়া নিয়েও দুই দেশের মধ্যে তীব্র অশান্তি চলছে। মঙ্গলবার মার্কিন সচিব মাইক পম্পেও তাইওয়ানের উচ্চ প্রশংসা করেন। তাঁর বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতে তাইওয়ান যেভাবে লড়াই করেছে, তা গোটা বিশ্বের সামনে একটি মডেল। অ্যামেরিকা সব সময় তাইওয়ানের পাশে আছে। বস্তুত, কিছু দিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য অ্যাসেম্বলিতে তাইওয়ানকে ঢোকানোর জন্য সব চেয়ে বেশি সওয়াল করেছিল অ্যামেরিকা। তাদের উদ্যোগেই পরিদর্শক হিসেবে সেখানে জায়গা পেয়েছে তাইওয়ান। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে চীন। বিশ্ব স্বাস্থ্য অ্যাসেম্বলির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে চীন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, করোনা এবং তাইওয়ানকে সামনে রেখে দুই দেশের মধ্যে অশান্তি আরও বাড়বে। আগামী দিনে এই কূটনৈতিক যুদ্ধ বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায় তৈরি করবে বলেও অনেকে মনে করছেন।

এ দিকে ব্রাজিলের পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। অ্যামেরিকার পরে ব্রাজিলকেই অনেকে করোনার এপিসেন্টার বা ভরকেন্দ্র বলে চিহ্নিত করছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ১৭৯ জনের। এই নিয়ে ব্রাজিলে করোনায় মোট মৃত্যু হলো ১৭ হাজার ৯৭১ জনের। মোট আক্রান্ত দুই লাখ ৭১ হাজার ৮৮৫ জন। অ্যামেরিকা, রাশিয়া এবং স্পেনের পরেই এখন ব্রাজিলের স্থান। ব্রাজিলের এই পরিস্থিতির জন্য অনেকেই দায়ী করছেন প্রেসিডেন্ট জাইয়া বলসোনারোকে। অভিযোগ, গোড়া থেকেই করোনা সংকটকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না প্রেসিডেন্ট। সোমবারেও তিনি জনগণের সঙ্গে সেলফি তুলেছেন। করোনা প্রতিরোধে কার্যত কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না তিনি। যদিও প্রেসিডেন্টপন্থী লোকেদের বক্তব্য, অর্থনীতি এবং করোনা সংকটের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বলসোনারো।

আফ্রিকার দেশগুলি আবার বিশ্বের শক্তিশালী দেশের প্রবল নিন্দা করেছে। কেনিয়া, আইভোরি কোস্ট সহ বেশ কিছু দেশের নেতাদের বক্তব্য প্রথম বিশ্ব করোনা সংক্রমণ থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। সে জন্যই আজ আফ্রিকাও আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, করোনার জন্য যে আর্থিক প্যাকেজ দেওয়ার কথা বলেছিল শক্তিশালী দেশগুলি, তাও দেওয়া হচ্ছে না।

এ দিকে মঙ্গলবার আরও দুইটি জরুরি সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, ব্রাজিলের পরিস্থিতিরকথা বিবেচনা করে আপাতত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে তাঁর প্রশাসন। ব্রাজিলের নাগরিকদের অ্যামেরিকায় ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে। একই সঙ্গে মেক্সিকো এবং ক্যানাডা বর্ডারও আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে আশ্রয়প্রার্থীরাও অ্যামেরিকায় ঢুকতে পারবেন না।

অধিকার আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, করোনাকে সামনে রেখে নিজের বহু দিনের ভাবনা বলবৎ করে দিলেন ট্রাম্প। আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে তাঁর যে চিন্তা ভাবনা ছিল, সেটাই এবার হতে চলেছে। উদ্বাস্তুদের জন্য দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে অ্যামেরিকা। অনেকেই জানিয়েছেন, এই বিষয়টির বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। এ দিকে ক্যানাডা জানিয়েছে, আপাতত অত্যাবশ্যকীয় জিনিসের সরবরাহ ছাড়া অ্যামেরিকা এবং ক্যানাডার সীমান্ত খোলা হচ্ছে না।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)