1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টেকনাফের আনসার ক্যাম্পে অস্ত্র লুট

সমীর কুমার দে, ঢাকা১৩ মে ২০১৬

কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায় একটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের ব্যারাকে হামলা চালানো হয় শুক্রবার ভোরের দিকে৷ হামলায় একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়, লুট করে হয় ১১টি অস্ত্রও৷

https://p.dw.com/p/1InSL
পার্বত্য চট্টগ্রাম (ফাইল ফটো)
ছবি: DW/G. Sarowar

টেকনাফের নয়াপাড়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের পাশের ‘সিওডি ব্লক'-এর অদূরে শাল বাগান আনসার ক্যাম্পে এই হামলার ঘটনা ঘটে৷ নিহত আলী হোসেন (৫৫) টাঙ্গাইলের সফিপুর এলাকার শুক্কুর আলীর ছেলে৷ তিনি ঐ ক্যাম্পে আনসার কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন৷

টেকনাফের স্থানীয় সাংবাদিক ও ইত্তেফাকের টেকনাফ প্রতিনিধি আব্দুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, ভোর আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে একদল ডাকাত শরণার্থী ক্যাম্পে হামলা করে৷ আলী হোসেন তাদের প্রতিরোধ করতে গেলে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়৷ অন্যরা ঘুম থেকে জেগে উঠলে তাঁদেরও হাত-পা বেঁধে একটি রুমে আটকে রাখে হামলাকারীরা৷

ঘটনার পরপর আলী হোসেনকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন৷ আলীকে হত্যা করা ছাড়াও হামলাকারীরা আনসার ব্যারাক থেকে দু'টি এসএমজি, পাঁচটি চায়নিজ রাইফেল, চারটি শটগান ও ৬৭০ রাইন্ড গুলি নিয়ে যায়৷

শফিকুল ইসলাম

‘এটা স্রেফ ডাকাতি'

আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা ও অস্ত্র লুটের সঙ্গে জামায়াতের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কোনো সম্পর্ক আছে কি? – এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইডি শফিকুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘না, এই ঘটনার সঙ্গে নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার এখনও কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি৷''

স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুর রহমানও বলেন একই কথা৷ তাঁর কথায়, ‘‘এখনও এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি৷ এটা পেশাদার ডাকাতদেরই কাজ৷ আগেও এই ধরনের কাজ তারা করেছে৷''

ঐ এলাকাটা তো মৌলবাদীদের ঘাঁটি! তা এর সঙ্গে মৌলবাদের কোনো সম্পর্ক আছে কি? রহমান বলেন, ‘‘মৌলবাদ আছে৷ কিন্তু এ ঘটনাটা দেখে মনে হচ্ছে, এর সঙ্গে মৌলবাদের কোনো সম্পর্ক নেই৷''

হামলায় অবশ্য আলী হোসেন ছাড়াও আরো কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন৷ এ মুহূর্তে তাঁদের শরণার্থী শিবিরের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে৷ আর নিহত আলী হোসেনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে৷

আব্দুর রহমান

সাংবাদিক আব্দুর রহমান বলেন, ‘‘স্থানীয় কিছু ডাকাত ঐ এলাকার পাশেই পাহাড়ের গুহায় লুকিয়ে রয়েছে৷ মাঝে মধ্যেই তারা এই ধরনের হামলা চালায়৷ এখান থেকে লুণ্ঠিত অস্ত্র মিয়ানমার বা দেশের অভ্যন্তরে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত হয়৷''

এ তথ্য স্থানীয় সকলেই যখন জানে, তখন পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় না কেন? এ প্রশ্নের জবাবে রহমান বলেন, ‘‘ক্যাম্প পুলিশ বা থানা-পুলিশ, এমনকি জেলা-পুলিশও এই ডাকাতদের কাছ থেকে মাসোহারা নেয় বলে অভিযোগ৷ ফলে অনেক কিছু দেখেও না দেখার ভান করে ওদের কাজে সহযোগিতাই করে পুলিশ৷''

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ অবশ্য এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরের পশ্চিমের পাহাড়ে ডাকাতদের আস্তানা রয়েছে বলে স্থানীয়রা তাকে জানিয়েছেন৷ জড়িতদের গ্রেপ্তার ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ ঐ পাহাড়ি এলাকায় বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ইতিমধ্যেই৷

টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মজিদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ডাকাতদের মাঝে মধ্যে পুলিশ গ্রেপ্তার করে৷ কিন্তু কিছুদিন পরেই তারা আবার ছাড়া পেয়ে যায়৷ এরপরেও পাহাড়ে ডাকাতদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চলমান৷''

ডিআইজি শফিকুল ইসলামের কথাতেও, ‘‘পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে পাহাড়ে অভিযান শুরু হয়েছে৷ তবে এই ধরনের অভিযান মাঝে মধ্যেই তো হয়৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য