1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টিকিট ফাঁকিতে চ্যাম্পিয়ন

১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩

টিকিট না কেটে বাস-ট্রামে চড়াটা এখন ফ্রান্সের মহামারি হয়ে দাঁড়িয়েছে, খুব সম্ভবত অর্থনৈতিক মন্দার কারণে৷ এবং যারা টিকিট ফাঁকি দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে এখন স্যুট-বুট পরা মানুষদেরও পাওয়া যাবে৷

https://p.dw.com/p/19jHt
Ein Zugschaffner kontrolliert in einem TGV auf der Fahrt von Straßburg nach Basel die Fahrkarten (Foto vom 26.03.2008). Foto: Rolf Haid dpa +++(c) dpa - Report+++
ছবি: picture-alliance/dpa

ইয়াং আর্বান প্রোফেশনাল বা তরুণ শহুরে পেশাজীবীর মতো সাজগোজ করা যাত্রীদেরও সন্ত্রস্ত চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়, টিকিট চেকার তাদের দিকে আসছে কিনা, সেই আশঙ্কায়৷ অন্যত্র কোনো শানেল স্যুট পরা সুন্দরী মহিলা হয়তো টার্নস্টাইল টপকে বিনা টিকিটে প্যারিসের মেট্রো স্টেশনে ঢুকছেন৷ অর্থাৎ এরা সবাই টিকিট ফাঁকি দেওয়ার খদ্দের৷

বেয়াড়া ঠাট্টা

ঠাট্টা নয়, ব্যাপারটা ফ্রান্সের ট্রেন, বাস, ট্রাম, মেট্রো কোম্পানিগুলোর মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তবে ফ্রান্স বিপ্লবের দেশ বলেই হয়তো কর্তৃপক্ষ ভাবছেন: আরো কড়াকড়ি, জোরাজুরি করা উচিত, নাকি বাস-ট্রাম ফ্রি করে দেওয়াটাই ভালো৷ ওদিকে যারা টিকিট ফাঁকি দিচ্ছেন, তাদের বক্তব্য হল: দু'একবার ফাইন দেওয়াটা মান্থলি টিকিট কাটার চেয়ে অনেক সস্তা৷

এককালে টিকিট ফাঁকি দিতো প্যারিসের উপকণ্ঠ থেকে আসা অস্বচ্ছল পরিবারের তরুণরা৷ এখন পশ্চিম প্যারিসের অভিজাত এলাকার বাসিন্দারা ঠিক সেই অকাজটাই করছেন৷ কিছু কিছু ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রছাত্রীরা একটি গুপ্ত তহবিলে চাঁদা দিয়ে থাকে; বিনা টিকিটে ধরা পড়লে তাদের ফাইন ঐ তহবিল থেকেই দিয়ে দেওয়া হয়৷ এটাকে এক ধরনের বিমা বলা চলতে পারে: এই বেসরকারি বিমার প্রিমিয়াম হলো মাসে পাঁচ থেকে সাত ইউরো৷ ওদিকে ছাত্রদের মান্থলির খরচ পড়ে ২৭ ইউরো৷

Flash-Galerie Paris Metro Linie 1
টিকিট না কেটে বাস-ট্রামে চড়াটা এখন ফ্রান্সের মহামারি হয়ে দাঁড়িয়েছে, খুব সম্ভবত অর্থনৈতিক মন্দার কারণেছবি: by-sa-GNU1.2.

সাধি কি বলে স্মার্টফোন!

আধুনিক প্রযুক্তিও পিছিয়ে নেই৷ ইতিমধ্যেই স্মার্টফোনের জন্য ‘‘চেক-মাই-মেট্রো'' নামের একটি অ্যাপ পাওয়া যাচ্ছে, যার কাজ হল প্যারিস, লিয়ঁ, লিল কিংবা তুলুজ-এর মতো শহরে কোন সময়ে চেকাররা ঠিক কতো নম্বর বাসে উঠছেন, সেটা বলে দেওয়া৷ অবশ্য এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই৷ ফ্রান্সে টিকিট ফাঁকি দেওয়াটাকে ঠিক জোচ্চুরি বলে মনে করা হয় না৷ সাবেক প্রেসিডেন্ট জাক শিরাক একবার সেই ১৯৮০ সালে টার্নস্টাইলের ওপর দিয়ে লাফিয়ে প্যারিস মেট্রোয় ঢুকেছিলেন – সে ছবি আজও বিখ্যাত৷

অবশ্য প্যারিস মেট্রোর পাঁচ শতাংশের মতো যাত্রী টিকিট ফাঁকি দেন; সরকারি বাস-ট্রামে টিকিটবিহীন যাত্রীদের অনুপাত তার দ্বিগুণ৷ সমাজতত্ত্ববিদরা বলেন, রাষ্ট্র এবং আইনের প্রতি ফরাসিদের মনোভাবই নাকি কিছুটা আলাদা৷ অন্যান্য দেশের নাগরিকরা আইন মেনে চলে সমাজের মঙ্গলের জন্য৷ ফরাসিরা ভাবে, আইন কার্যকরী করাটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব, তাদের নিজেদের দায়িত্ব নয়৷ অন্যদিকে, সরকারি পরিবহন ব্যবস্থাটাকে তারা তাদের নিজেদের সম্পত্তি বলে মনে করে৷

মনোভাবের ফারাক

ওদিকে ফরাসি পরিবহন মন্ত্রী ফ্রেদেরিক কুভিলিয়ের বলেছেন, যাত্রীরা টিকিট ফাঁকি দেওয়ার ফলে ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় রেল ব্যবস্থার বছরে ৩০ কোটি ইউরো ক্ষতি হচ্ছে; প্যারিসের ট্রেন, মেট্রো, ট্রাম ও বাস – সবই রাষ্ট্রীয় মালিকানার – মিলিয়ে ক্ষতি হচ্ছে আরো দশ কোটি ইউরো৷ ওদিকে ফ্রান্সে সরকারি পরিবহন চালু রাখার যে খরচ, তার নাকি মাত্র ২৫ শতাংশ আসে টিকিট বিক্রি থেকে৷ কাজেই প্রায় বিশটি ফরাসি শহরে সরকারি পরিবহনকে বিনা খরচার করে দেওয়া হয়েছে৷

তার একটি অপ্রত্যাশিত ফলশ্রুতি হল: মানুষজন বিনি খরচার সরকারি পরিবহন আরো বেশি করে ব্যবহার করার দরুন সংশ্লিষ্ট শহরগুলিতে মোটরগাড়ি ব্যবহারের অনুপাত নাকি দশ শতাংশ কমে গেছে৷

এসি / এসবি (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য