জয়পুরে পরমাণু কেন্দ্রের বিপক্ষে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ
২৫ এপ্রিল ২০১১‘পরমাণু কেন্দ্র চাই না৷ আমরা অসুস্থ হতে চাই না '– আন্দোলনে এই কথাগুলে হিন্দিভাষায় বার বার উচ্চারিত হয়েছে৷ এই একই স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যাচ্ছে ছোট ছোট চায়ের স্টলগুলোতেও৷
ফরাসি একটি কোম্পানির সঙ্গে ভারত সরকার ৯.৩ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি সই করেছে৷ প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে গেছে৷ জল পরিশোধনের যন্ত্রপাতি কোথায় বসানো হবে, তাও স্থির হয়ে গেছে৷ কোম্পানির নাম ‘আরেভা'৷ প্ল্যাকার্ডে ‘আরেভা ফিরা যাও' লিখে ঘুরছে প্রতিবাদকারীরা৷
জয়পুরের এই গ্রামের মানুষরা সাধারণত মৎসচাষ করেই জীবন-যাপন করে থাকে৷ সমুদ্র এবং মাছই হল উপার্জনের মূল উৎস৷ মুম্বই থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রামটি৷ ৪৫ বছর বয়স্ক জেলে আব্দুল মজিদ জানান,‘‘প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ জেলে হিসেবে কজ করছে৷ সবমিলিয়ে রয়েছে ৬০০টি মাছ ধরার নৌকা৷ প্রতিদিন প্রায় ৫০ টন মাছ ধরা হয়৷ এর মধ্যে চিংড়ি, অক্টোপাস ছাড়াও আরো অনেক ধরণের মাছ রয়েছে৷ যদি কোন পরমাণু কেন্দ্র তৈরি করা হয় তাহলে এসব মানুষ তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল হারাবে৷ একবার যদি কেন্দ্র থেকে গরম পানি সমুদ্রে মিশতে শুরু করে তাহলে মাছগুলো মারা যাবে৷ পানিও নষ্ট হবে৷''
জাপানের ফুকুশিমা পরমানু কেন্দ্রের বিস্ফোরণের পর এসব মানুষের বিক্ষোভ আরো জোরালো হয়েছে৷ পরমাণু কেন্দ্র কোন দেশের জন্য শুভকর নয় তাই চিৎকার করে জানানো হচ্ছে৷ ৫৭ বছর বয়স্ক প্রবীণ গাওকার জানান, ‘‘ফুকুশিমার পরমাণু কেন্দ্রের বিস্ফোরণের মূলে ছিল ভূমিকম্প আর এই গ্রাম সমুদ্রের কাছে হওয়ায় এখানে মাঝে মাঝে ভূমিকম্প অনুভূত হয়৷''
তবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে ক্রমেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে৷ সোমবার, ২৫ এপ্রিল বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়৷ তাতে একজন মারা যায় এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়৷
এরপর পুলিশ গোটা এলাকা বন্ধ করে দেয়৷ তাতে গত শনিবার এবং রবিবারে ধরা মাছগুলি পচে যাওয়ায় গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে৷
আগামী রবিবার আরেকটি মিছিল বের করার পরিকল্পনা করছে বিক্ষোভকারীরা৷ প্রবীণ গাওকার জানান, ‘‘তাতে যদি কাজ না হয় তাহলে পাঁচ হাজার জেলে সরাসরি রাজধানী দিল্লী যাবে এবং সেখানেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে এই আন্দোলন৷''
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়