1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জেরুসালেম নিয়ে ট্রাম্প বনাম গোটা বিশ্ব

৭ ডিসেম্বর ২০১৭

জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় আরব জগত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানিসহ গোটা বিশ্ব ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে৷ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক বসছে৷

https://p.dw.com/p/2ouvb
বেথলেহেমে বিক্ষোভ
ছবি: Reuters/M. Qawasma

নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি পালন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন যে; ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস তেল আভিভ থেকে জেরুসালেমে স্থানান্তরিত করা হবে৷

অ্যামেরিকার এই একক সিদ্ধান্তের পরিণতি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে একাধিক দেশ ও গোষ্ঠী৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের মতে, এর ফলে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া আবার শুরু করার প্রচেষ্টা হুমকির মুখে পড়বে৷ ইইউ-র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোগেরিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জেরুসালেমে দুই রাষ্ট্রের রাজধানী স্থাপন করাই ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংকটের একমাত্র বাস্তবসম্মত সমাধানসূত্র৷ তিনি বলেন, সোমবার ব্রাসেলসে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন৷ 

দুই পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়া ছাড়া বিতর্কিত জেরুসালেম শহরের স্থিতাবস্থার কোনো পরিবর্তনের বিরোধিতা করে আন্তর্জাতিক সমাজ৷

অ্যামেরিকার প্রায় সব ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে৷ জার্মানি জানিয়ে দিয়েছে, একমাত্র দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানসূত্রের আওতায় জেরুসালেম শহরের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা উচিত৷ ফ্রান্স এই একক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির ডাক দিয়েছে৷ ব্রিটেন জানিয়েছে, এর ফলে শান্তির উদ্যোগের ক্ষতি হবে এবং শেষ পর্যন্ত ইসরায়েল ও ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র জেরুসালেম শহরকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবে, এমনটাই কাম্য৷ রাশিয়া জানিয়েছে, এমন একতরফা সিদ্ধান্তের ফলে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়লো এবং আন্তর্জাতিক সমাজের ঐকমত্যে ফাটল দেখা দিচ্ছে৷

বলা বাহুল্য, ইসরায়েল ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত শান্তির পথে এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত৷ ইসরায়েল রাষ্ট্রের পত্তনের প্রথম দিন থেকে এটাই লক্ষ্য ছিল৷ তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ভবিষ্যৎ শান্তি চুক্তিতে জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে৷ তিনি অন্যান্য দেশকেও ট্রাম্প-এর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করার ডাক দিয়েছেন৷

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, জেরুসালেম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ‘অনন্ত রাজধানী’৷ তাঁর মতে, ট্রাম্প-এর এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শান্তির পথে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ওয়াশিংটন তার নেতৃত্বের ভূমিকা ত্যাগ করলো৷ ফিলিস্তিনি কট্টরপন্থি গোষ্ঠী হামাস বলেছে, ট্রাম্প ফিলিস্তিনি জাতির উপর খোলাখুলি আগ্রাসন করলেন৷ হামাস আরব ও মুসলিম জগতের উদ্দেশ্যে গোটা অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করা ও ইসরায়েলকে একঘরে করে রাখার ডাক দিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার একাধিক ফিলিস্তিনি সংগঠন সাধারণ ধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে৷ পশ্চিম তীর ও গাজায় প্রতিবাদ বিক্ষোভের জের ধরে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়েছে৷ 

জর্ডানের রাজধানী আম্মানের কিছু অংশে ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখিয়েছে৷ মার্কিন-বিরোধী স্লোগান দিয়ে অনেকে জর্ডানের উদ্দেশ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে ১৯৯৪ সালের শান্তি চুক্তি বাতিল করার আবেদন জানিয়েছে৷

শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এক জরুরি বৈঠক ডেকেছে৷ সেখানে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ও তার পরিণতি নিয়ে আলোচনা করা হবে৷

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)