জীবজন্তুরা যখন আমাদের হাসায়!
২০১৬ সালের কমেডি ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ডসের মজার সব ছবি৷ তবে যাদের নিয়ে ছবি, তারা সেটা না-ও ভাবতে পারে!
বরফে ঝাঁপ
অ্যামেরিকার ইয়েলোস্টোন পার্কের এই ছবিটির জন্য ২০১৬ সালে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন আঙ্গেলা বোহলকে৷ শীতকাল, সব কিছু বরফে ঢাকা, কিন্তু খেতে তো হবে৷ তাই বরফের নীচে ইঁদুরের নড়াচড়া টের পেয়ে শেয়াল পণ্ডিতের এই ঝাঁপ তো সেই ঝাঁপ!
‘ও তো ওদিকে গেছে’
ছোট্ট প্যাঁচাটি যেন কমিকের কোনো চরিত্রের মতো পাখা নেড়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, ‘ওই দিকে!’ আসলে কিন্তু বেচারি সবে উড়াল শেষ করে মাটিতে নামছে৷ পশুপাখি ও পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বন্যপ্রাণী ত্রাণ সংগঠন ‘দ্য বর্ন ফ্রি ফাউন্ডেশন’-এর সঙ্গে কাজ করছে কমেডি ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ডস৷
স্পিড লিমিট
ভন ইয়েসনিৎস বলেন, তিনি এই চিতাবাঘটিকে দক্ষিণ আফ্রিকার হুডস্প্রয়েটে একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মূল রাস্তাটি ধরে যেতে দেখেন৷ চিতাটা নাকি ৪০ কিলোমিটার স্পিড লিমিটের সাইন দেখেই বসে পড়ে! তাদের বাসস্থান নষ্ট হয়ে আর চামড়ার লোভে বেআইনি শিকারের ফলে এই ক্ষিপ্র মার্জার প্রজাতিটির অস্তিত্বই বিপন্ন৷
উড়তে গিয়ে বিপত্তি!
‘ইন দ্য এয়ার’ বা ‘আকাশে’, এই বিভাগে নিকোলাস ডে ফল্ক্স পুরস্কার জিতেছেন পেলিকানের এই ছবিটি তুলে৷ গ্রিসের কের্কিনি হ্রদের একটি দৃশ্য৷ পেলিকান তার ঠোঁটের থলিতে মাছ নিয়ে উড়ছে, হয়তো বাচ্চাদের খাওয়াবে, এমন সময় থলি থেকে মাছ পড়ে গেল৷ মাছটা কিন্তু জ্যান্ত মাছ, পড়ছেও জলে৷ আর কি কখনো সে ‘ওড়ে’?
কপালে থাকিলে বিষ্ঠা, কাগে এনে দেয়
কেনিয়ার মেরু ন্যাশনাল পার্কের এই মোষটির কপালে মাঙ্গলিক চিহ্ন ‘এঁকে’ দিয়েছে একটি পাখি৷ ছবিটি তোলেন টম স্টেবলস৷ আফ্রিকায় বুনো মহিষদের সংখ্যা কমছে, বিশেষ করে তারা ক্ষেতের ফসল খেয়ে ফেলে বলে৷
তৃণমূলের নিধিরাম সর্দার
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে পুরুষ পাখা-গলা গিরগিটির এই ছবিটি তুলেছেন অনুপ দেওধর৷ এই রঙিন জীবটি আগ্রাসী দৌড়ঝাঁপ করে স্ত্রী পাখা-গলা গিরগিটির মন জয় করার চেষ্টা করে৷ উত্তপ্ত বালির উপর দিয়ে তাদের দু’পেয়ে দৌড় দেখবার মতো!
বাই বাই!
ফিলিপ মারাৎসি শ্বেত ভাল্লুকের ছানার এই হাত নাড়ার ছবিটার জন্য বিপুল প্রশংসা কুড়িয়েছেন৷ ভাল্লুকের মা তখন একটু গড়িয়ে নিচ্ছে৷ ছবিটা মিষ্টি হলেও, মেরু প্রদেশের সাদা ভাল্লুকদের অবস্থা কিন্তু ভালো নয়৷ বিশ্বের উষ্ণায়নের ফলে সুমেরু সাগরে তুষার জমছে না, ফলে সাদা ভাল্লুকরা তাদের প্রিয় খাদ্য সিলমাছ শিকার করতে পারছে না৷ এভাবে চললে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে সাদা ভাল্লুকরা বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে৷
সবই মানুষের কল্পনায়
কমেডি ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ডসের বিচারক টম সুলাম নিজেও ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার৷ তিনি বলেন, ‘‘জীবজন্তুরা যে কেন আমাদের হাসায়, তা আমরাই জানি না!’’ অস্ট্রিয়ার পার্ডিটা প্রেস্টজেলের তোলা এই ছবিটিতে একটি কাঠবিড়ালি একটা ফুলের ডাঁটি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ দেখলে মনে হয় যেন কোনো নামকরা কন্ডাক্টার ব্যাটন হাতে করে ফিলহার্মনিক অর্কেস্ট্রা পরিচালনা করছেন৷
প্রতিবেদন: রুবি রাসেল/এসি
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী