1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জিনসের টুকরো দিয়ে অভিনব শিল্পকর্ম

৪ জুন ২০১৯

জিনসের প্যান্ট আজ প্রায় গোটা বিশ্বেই মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে৷ এক ব্রিটিশ শিল্পী উপকরণ হিসেবে ডেনিমকে ভিন্ন মাত্রা দিচ্ছেন৷ তাঁর শিল্পকর্ম গোটা বিশ্বে সমাদর পাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3Jmbh
DW euromaxx 20.04.2019  Alte Hosen
ছবি: Ian Berry

জিনসের বিশাল স্তূপই ইয়ান বেরি-র রংয়ের প্যালেট ও শিল্পের উপকরণ৷ লন্ডনে তাঁর স্টুডিওতে কমপক্ষে ২,০০০ জিনসের প্যান্ট রয়েছে৷ শিল্পী হিসেবে তিনি প্রতিটি শিল্পকর্মের জন্য সর্বদা নীল রঙের সঠিক শেড বা মাত্রার খোঁজ করেন৷ ইয়ান বলেন, ‘‘আমি এমন শিল্পী নয়, যে পেন্ট ব্যবহার করে সঠিক রংয়ের মিশ্রণ ঘটায়৷ আমাকে বাইরে বেরিয়ে সঠিক শেড খুঁজতে হয়৷ ব্লিচ বা রঞ্জক ব্যবহার করে আমি রং বদলাই না৷ সত্যি ম্যাচ করবে, এমন রঙের জিনস খুঁজি৷ আমি এখানে আধ ঘণ্টা, এক ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা ঘোরাঘুরি করে সঠিক জিনসের খোঁজ করি৷''

বেরি তাঁর বিশাল ফরম্যাটের শিল্পকর্মের উপকরণ হিসেবে ডেনিম খোঁজেন৷ একটু দূর থেকে দেখলে মন হয় ছবি৷ কাছে গেলে বোঝা যায় সেটি আসলে কয়েক'শ ডেনিমের টুকরো দিয়ে তৈরি একটি কোলাজ৷ রং, শেড ও তার উপরিভাগ – সবই ফেডেড ও ওয়াশড আউট জিনস থেকে আসে৷ ডেনিম শিল্পী ইয়ান বেরি বলেন, ‘‘আমি যে সব টুকরো ব্যবহার করি, তার সবকটির শেড আলাদা৷ তাই দূর থেকে ছবির মতো দেখতে লাগে৷ মানুষ বুঝতে পারেন না, যে আমার শিল্পকর্ম জিনস দিয়ে তৈরি৷ সেটাই অন্যতম সেরা বিষয়৷ আমি ছবি আঁকার মতোই এই উপকরণ ব্যবহার করি৷ ঠিক যেন তুলির টানে আঁকা হচ্ছে৷''

সঠিক শেড খুঁজে পেলে বেরি জিনসের কাপড় প্রয়োজন মতো কেটে নেন৷ তারপর বিশেষ আঠা লাগিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় বসিয়ে দেন৷ এভাবে ধীরে ধীরে ছবিটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে৷ বিভিন্ন স্তর থাকায় সেটি প্রায় ত্রিমাত্রিক হয়ে ওঠে৷ ইয়ান বেরি সর্বদা তাঁর উপকরণের নতুন গুণাগুণ আবিষ্কার করে চলেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘হয়ত আট বছর আগে আমি পাড় কাটতে শুরু করি৷ চকচকে সারফেসের উপর এক ধরনের প্রতিফলন হিসেবে আমি সেটি ব্যবহার করি৷ তখন সেই পাড়ের সারফেস উজ্জ্বল ধাতব পালিশ করা মনে হতো৷''

প্রায় ১৫ বছর আগে ডেনিম সম্পর্কে তাঁর মুগ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল৷ গোছগাছ করার সময় তিনি জিনসের একটি স্তূপ খুঁজে পান৷ একেবারে প্রথম দিকের শিল্পকর্মে গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকের বিখ্যাত অভিনেতাদের কোলাজ শোভা পেত৷ ইয়ান বেরি বলেন, ‘‘যখন আমি ডেনিম নিয়ে হাত পাকাতে শুরু করি, তখন সেই সব ব্যক্তিদের পোর্ট্রেট করার ইচ্ছা হয়েছিল, যারা ডেনিমকে আজ এত জনপ্রিয় করে তুলেছেন৷ অতীতে শুধু কিছু পেশার কাজের জন্য ডেনিম ব্যবহার করা হতো৷ আজ উচ্চদরের ফ্যাশনে তা করা হয়৷ ভাবলে অবাক লাগে যে ম্যারিলিন মনরো, জেমস ডিন, মার্লন ব্র্যান্ডোর মতো মানুষ জিনস পরে ডেনিমের ভবিষ্যৎ বদলে দিয়েছেন৷''

ডেনিম আর্টের দৌলতে ইয়ান বেরি যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন৷ আন্তর্জাতিক পত্রিকায় তাঁর শিল্পকর্ম প্রকাশিত হয়৷ তিনি নিজেও কিছু দামি, ঝকমকে বই প্রকাশ করেছেন৷ সেই সঙ্গে তিনি বিশাল মাপের ইনস্টলেশনও সৃষ্টি করেন৷ ‘সিক্রেট গার্ডেন'-এর মতো শিল্পকর্ম বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গ্যালারিতে প্রদর্শিত হয়েছে৷ হাজার হাজার ইউরো মূল্যে সে সব বিক্রি হয়৷

তিনি সবার জন্য উন্মুক্ত স্থানেও প্রদর্শনী করেন৷ যেমন লন্ডনের সেলফ্রিজ বিপণীর জিনস বিভাগ ৬ সপ্তাহের জন্য ছোট মাপের গ্যালারির রূপ পেয়েছিল৷ তাঁর একটি শিল্পকর্ম আসলে আত্ম-প্রতিকৃতি৷ এর কারণ ব্যাখ্যা করে ইয়ান বলেন, ‘‘শিল্পী হিসেবে অবশ্যই গ্যালারি ও মিউজিয়ামে নিজের শিল্পকর্মের প্রদর্শনী বেশ ভালো লাগে৷ কিন্তু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে সেগুলি দেখাতেও আমি ভালবাসি৷ মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখতে ভালো লাগে৷ ভিন্ন ধরনের দর্শকদের দেখাতে চাই৷ সব মানুষ গ্যালারিতে যান না৷ মানুষ এখানে এসে দেখলে শিল্পকর্মটি অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে যায়৷''

সবার জন্য ডেনিম আর্ট৷ ঠিক যেন জিনসের কথাই হচ্ছে!

আন্টিয়ে বিন্ডার/এসবি